জাতীয়

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর তিন সুপারিশ

By daily satkhira

September 25, 2018

অনলাইন ডেস্ক: রোহিঙ্গা সংকট স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে তিন দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সময় সোমবার সকালে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শরণার্থীবিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাব শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিন দফা সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ স্বল্প সময়ের মধ্যে ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাসস্থান, খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করেছে। শরণার্থী সংকট সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশনার ‘শরণার্থী বিষয়ক বৈশ্বিক প্রভাবের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক : এ মডেল ফর গ্রেটার সলিডারিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন’ শীর্ষক এ বৈঠকের আয়োজন করে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেজ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। প্রথম সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই বৈষম্যমূলক আইন ও নীতি বিলোপ, এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি নিষ্ঠুরতা বন্ধ ও তাদের সে দেশ থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক তাদের ঘর-বাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। অথচ তারা সেখানে কয়েকশ’ বছর ধরে বসবাস করে আসছে। দ্বিতীয় সুপারিশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারকে অবশ্যই সকল রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব প্রদানের সঠিক উপায়, নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় মিয়ানমারের ভেতরে ‘সেফ জোন’ তৈরি করতে হবে। তৃতীয় সুপারিশে তিনি বলেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৈরাজ্য রোধে অপরাধীদের জবাবদিহিতা, বিচার, বিশেষ করে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের সুপারিশমালার আলোকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছি, যা আমাদের জন্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা তাদের জন্য ৬ হাজার একরের বেশি জমি বরাদ্দ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক ও অন্যান্য সম্পদ, সমাজ, পরিবেশ ও অর্থনীতি আন্তর্জাতিক অংশীদার, বিশেষ করে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো সাহায্য দিয়ে আসছে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট মিয়ামার সরকারই তৈরি করেছে এবং মিয়ানমারকে এর সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বশীল সরকার হিসেবে আমরা মিয়ামার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য আমরা আমাদের সীমান্ত খুলে দিয়েছি। এটা করে আমরা শুধু তাদের জীবন রক্ষা করিনি বরং আমরা আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত করে পুরো অঞ্চলে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছি। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিরাপদে ও নিরাপত্তা এবং মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে স্থায়ীভাবে ফেরত নেয়া দেখতে চায়। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত না নেয়া পর্যন্ত আমরা তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমরা ভাষানচর নামক একটি দ্বীপের ব্যাপক উন্নয়ন করে রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করবো, যাতে তারা ওই দ্বীপে উন্নত জীবনযাপন ও সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে।’ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কম্প্যাক্ট অন রিফিউজি’ এমন সময় গ্রহণ করা হলো যখন সারা বিশ্ব মারাত্মক শরণার্থী সংকট মোকাবেলা করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সব দেশ শরণার্থীদের বোঝা কাঁধে নেয় বিশ্বের উচিত তাদের এ অবদানকে স্বীকৃতি দেয়া এবং বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবশ্যই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।