বিদেশের খবর: ভারতে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ‘উইপোকা’ বলে মন্তব্য করায় ভারতীয় গণমাধ্যমের তোপের মুখে পড়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ। টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, কথিত ‘অবৈধ বাংলাদেশী’দের এক নম্বর শত্রু বানানোর পরিকল্পনা করছে বিজেপি। এ নিয়ে রাজনীতিতে এক আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অমিত শাহ যে তিরস্কারমুলক কথাবার্তা বলছেন তাতে বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্কের ক্ষতি হবে।
অমিত শাহ দাবি করেছেন, কয়েক কোটি ‘অনুপ্রবেশকারী’ ভারতে অবস্থান করছে। আর ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিজেপি তাদের প্রত্যেককে সনাক্ত করবে। অমিত শাহের এই নেতিবাচক কৌশলকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণের সঙ্গে তুলনা করা যায়। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মেক্সিকানদেরকে ‘ধর্ষক’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যদি এই ধারণা (বাংলাদেশী বিরোধিতা) বিজেপির নির্বাচনী সমর্থনের ভিত্তি হয় তাহলে তা ট্রাম্পের মতোই হবে। শুধু জনপ্রিয়তা কমবে।
কথিত কয়েক কোটি অবৈধ বাংলাদেশী ভারতে বসবাস করছেন অমিত শাহের এই বিবৃতিকে যদি সত্য ধরে নেয়া হয় তাহলে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। তাহলো এসব মানুষকে নিয়ে কি করা হবে। ভারত তো চীন নয়, তাদের (বাংলাদেশী) সবাইকে নিয়ে একটি বন্দি শিবিরে আটকে রাখা যাবে। ১৯৭২ সালের পর ভারতে ব্যাপকহারে অভিবাসনের বিষয়টি বাংলাদেশযেমন স্বীকার করে না। তাহলে ভারত যাদেরকে ফেরত পাঠাতে চায় তাদেরকে বাংলাদেশ গ্রহণ করবে এমনটি বিশ্বাস করা কঠিন।
সম্ভবত বর্তমানে প্রতিবেশীদের মধ্যে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ, যাদের সঙ্গে ভারতের চমত্কার সম্পর্ক বিদ্যমান। এর কৃতিত্ব যায় ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রতি। বিজেপি বাংলাদেশী বিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রাখলে বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আওয়ামী লীগ। তাতে ভারত ও বাংলাদেশের ভবিষ্যত সম্পর্ক অনিশ্চয়তায় পড়বে। নিজেদের ভিতরে শত্রু খোঁজার অশুভ তত্পরতা আভ্যন্তরীণ রাজনীতি বা পররাষ্ট্রনীতি কোনোটির জন্যই সহায়ক নয়। এর পরিণাম হতে পারে বিজেপির জন্য আত্মঘাতী গোল।