খেলার খবর: ‘২০০১ সালে যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু করেছিলাম, তখন মনে মনে শুধু একটাই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যতদিন খেলব দেশের জন্য খেলব। কিন্তু মাঝ পথে বার বার পা দুটা সঙ্গ ছেড়ে দিচ্ছিল। যতবার ইনজুরিতে পড়েছি ততবার মনে হয়েছে এবার মনে হয় আর পারবো না। কিন্তু যখনি গ্যালারি ভর্তি মানুষের চিৎকার শুনি, তখনি পা দুটাকে বলি তৈরি হো, কারণ আমি আবার মাঠে নামব।’
এমনই বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। লড়াই করা তার রক্তে মিশে আছে সূচনা লগ্ন থেকেই। তিনি কখনো হাল ছাড়তে জানেন না। তাই তো তার কথা-যুদ্ধে নেমে পেছনে ফিরে তাকানোর সুযোগ নেই।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। যখন ইমাম-উল হক আর শোয়েব মালিকের জুটিকে কোনভাবেই ভাঙা যাচ্ছিল না, তখনই এগিয়ে এলিন মাশরাফি। মিডউইকেটে হাওয়ায় ভেসে, সেকেন্ডের ভগ্নাংশ সময়ের মধ্যে শোয়েব মালিকের ক্যাচ লুফে নিলেন। ওই ০.৮৪ সেকেন্ডেই পাকিস্তানকে বাড়ির ঠিকানা দেখিয়ে দিয়েছেন মাশরাফি। কারণ কার্যত তখনই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাকিস্তান।
সেই মাশরাফির ক্যারিয়ারে অনেক ঝড় গিয়েছে। সাতবার তো অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে দুই হাঁটুতেই। ছোট খাট মিলিয়ে ১৩ বার গিয়েছেন চিকিৎসকের ছুরিকাঁচির নিচে। তারপরেও থেমে জাননি। দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন।
এবার আরেকটি সুযোগ এসেছে মাশরাফির জন্য। বহুজাতিক টুর্নামেন্টে পাঁচটি ফাইনাল হারের দুঃখগাথা এখন বাংলাদেশের সঙ্গী। এশিয়া কাপেই ২০১২, ২০১৬ তে দৃষ্টিসীমায় এসেও বুকে জড়ায়নি। ২০০৯ সালে প্রথমবার, চলতি বছরে জানুয়ারি-মার্চে দুইবার ‘হৃদয়’ জেতার সান্ত্বনা নিয়ে ঘরে ফিরেছিল বাংলাদেশ দল। আজ ২২ গজে আরেকবার ট্রফির সন্ধানে নামবে টাইগাররা। স্বপ্ন ছুঁয়ে দেখার এমন একটি ম্যাচে নেতৃত্ব দেবেন মাশরাফি নিজেই।
তাই তো ভারতের মুখোমুখি হওয়ার আগে মাশরাফি তার ফেসবুক পেজে লিখেন, ‘দেশের জন্য তুমি যদি দৌড়াতে বা হাটতে না পার, তখন তুমি উড়তে চেষ্টা করো।’