অনলাইন ডেস্ক: বিশ্ব ব্যাংকসহ ২১টি সহযোগী সংস্থার সহায়তায় ১ লাখ ৭০ হাজার (প্রায় পৌনে দুই লাখ) স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন করেছে পল্লী উন্নয়ন ও কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। স্যানিটেশন মাইক্রো ফাইন্যান্সের আওতায় প্রকল্পটি দেশের ৪২টি জেলার ২৩৭টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হয়েছে। এ প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন নিশ্চিত করা, যার মাধ্যমে গ্রামের ৮ রাখ ৫০ হাজার মানুষ এ সুবিধার আওতায় আসতে পারে। প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৭০ হাজার স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৭৯টি স্থাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক সমাপনী ঘোষণা করা হয়। পিকেএসএফ নিজস্ব অর্থায়ন এবং বিশ্ব ব্যাংকের কারিগরি সহায়তায় ইউটপুট বেইজড এইড মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রোগাম শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে, যা গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়ে চলতি বছরের ৩০ জুন নির্ধারিত সময়েই শেষ হয়। এ উপলক্ষে প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পিকেএসএফ’র পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব কাজী শফিকুল আযম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী শফিকুল আযম নির্ধারিত সময়ে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় পিকেএসএফকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, পিকেএসএফ যদি ভালমানের প্রজেক্ট বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়, তবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সেখানে অর্থায়নের ব্যবস্থা করবে । অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কাট্রি ডিরেক্টর সঞ্জয় শ্রীবাস্তব।
শ্রীবাস্তব বলেন, ছোট এ প্রজেক্টের সফলতা ও অভিজ্ঞতা এ ধরনের প্রকল্প আরও বড় পরিসরে নেয়ার উৎসাহ দেয়। স্যানিটেশন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে সফলতা তা থেকে সারা বিশ্বের অনেক কিছু শেখার আছে ।
পিকেএসএফ’র সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে অনেক পরিবার রয়েছে যাদের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে হাতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ নেই। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপনের খরচ একাধিক অংশে ভাগ করে পরিশোধের সুযোগ দিলে তারা নিজেদের জন্য একটি উন্নত ল্যাট্রিন স্থাপনে সমর্থ্য হবে। এ প্রকল্পের আওতায় পিকেএসএফ ‘স্যানিটেশন উন্নয়ন ঋণ’চালু করেছে যার আওতায় শুধু ল্যাট্রিন নির্মাণ করা বা মলত্যাগের প্রকোষ্ট তৈরি করাটাই উদ্দেশ্য নয়। স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন তৈরি ও ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষের আচরণ ও মূল্যবোধে পরিবর্তন আনা এর মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পিকেএসএফ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম। আরো বক্তব্য দেন উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে খোলা জায়গায় মলত্যাগ প্রায় নির্মূল হয়েছে। এর মাত্রা ১৯৯০ সালে ছিল ৩৪ শতাংশ, ২০১৫ সালে মাত্রা ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪০ শতাংশ লোক স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করে। অবশিষ্ট ৬০ শতাংশ লোক এখনও অস্বাস্থ্যকর পিট ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। এ বিশাল জনগোষ্ঠীর বিদ্যমান পিট টয়লেটকে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটে পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণের লক্ষ্যে পিকেএসএফ ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এ পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।