অনলাইন ডেস্ক: অহিংসার প্রতীক মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মদিন আজ ২ অক্টোবর। ভারতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কল্যান কর্মসূচির মাধ্যমে তার প্রতি নিবেদন করা হয় বিনম্র শ্রদ্ধা। বিশ্বজুড়ে এই দিনটি পালিত হয় আন্তর্জাতিক অহিংসা দিবস হিসেবে। ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর গুজরাটের পরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। খবর এনডিটিভির।
ভারতে দিনটিকে গান্ধী জয়ন্তী হিসেবে পালন করা হয়। দিনটিকে সরকারি ছুটি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার দিনটি উপলক্ষ্যে বছরজুড়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বিশেষ করে স্যানিটেশন নিয়ে বিরাট সম্মেলনের কথাও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। তিনি এক বার্তায় বলেছেন, আমরা কী এখন শপিং করতে যাওয়ার সময় গান্ধীকে স্মরণ করি? আমরা কী ভাবি আমরা স্বদেশের জিনিস কিনছি কী না? তিনি দেশের তৈরি জিনিসপত্র কিনে গরীবদের সহায়তা করার আহবান জানান। বিরোধী দল কংগ্রেস এই উপলক্ষ্যে মহারাষ্ট্রেমহাত্মা গান্ধীর সেবাগ্রাম আশ্রমে দলের গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্কি কমিটির বৈঠক করার ঘোষণা দিয়েছে। আজ নয়াদিল্লির স্মৃতি বেদিতে অনুষ্ঠিত হবে সব ধর্ম প্রার্থনা সভা। এই সেই জায়গা যেখানে ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি হিন্দুত্ববাদী নাথুরাম গডসের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি শুরু করা হয়।
মহাত্মা গান্ধী অন্যতম প্রধান ভারতীয় রাজনীতিবিদ, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগামী ব্যক্তিদের একজন এবং প্রভাবশালী আধ্যাত্মিক নেতা। তিনি ছিলেন সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। এর মাধ্যমে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণের অবাধ্যতা ঘোষিত হয়েছিল। এ আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল অহিংস মতবাদ বা দর্শনের উপর এবং এটি ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা।
গান্ধী ভারতে এবং বিশ্বজুড়ে মহাত্মা (মহান আত্মা) এবং বাপু (বাবা) নামে পরিচিত। ভারত সরকারিভাবে তার সম্মানার্থে তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০০৭ সালের ১৫ই জুন জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ২রা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। জাতিসংঘের সকল সদস্য দেশ এ দিবস পালনে সম্মতি জ্ঞাপন করে।
মহাত্মা গান্ধী সমস্ত পরিস্থিতিতেই অহিংস মতবাদ এবং সত্যের ব্যাপারে অটল থেকেছেন। তিনি সাধারণ জীবনযাপন করতেন এবং একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যেটি ছিল স্বয়ংসম্পূর্ণ। তার নিজের পরিধেয় কাপড় ছিল ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় ধুতি এবং শাল যা তিনি নিজেই চরকায় বুনতেন। তিনি সাধারণ নিরামিষ খাবার খেতেন। শেষ জীবনে ফলমূ্লই বেশি খেতেন। আত্মশুদ্ধি এবং প্রতিবাদের কারণে দীর্ঘ সময়ের জন্য উপবাস থাকতেন।