খেলার খবর: ভেজা মাঠের স্যাঁতস্যাঁতে উইকেটে টস জিতে আগে বোলিং, তাতে দুর্দান্ত প্রদর্শনীর পর নাগালে থাকা লক্ষ্য, সঙ্গে শ’পাঁচেক দর্শকের প্রাণখোলা সমর্থন। সবকিছুই ছিল বাংলাদেশের অনুকূলে। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বুধবারের বিকেলটা হতে পারত সালমা-রুমানাদের উৎসবের মঞ্চ। পাকিস্তানি বোলারদের সামনে ব্যাটিংয়ে অসহায় আত্মসমর্পণে সেটিই হয়ে গেল বিষাদভরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর- পাকিস্তান: ৮৮/৫; বাংলাদেশ: ৩০/১০
সৈকতের সূর্য অস্ত যেতেই সিরিজের দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি ম্যাচে লেখা হয়ে গেছে ৫৮ রানের হার। এদিন নিজেদের সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ড গড়া সালমা খাতুনের দল গুটিয়ে যায় মাত্র ৩০ রানে। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসেই যেটি তৃতীয় সর্বনিম্ন দলীয় সংগ্রহ। টিম টাইগার্সের আগের সর্বোনিম্ন ইনিংসটি ছিল ৪৪ রানের। সেটিও পাকিস্তানের বিপক্ষে, ২০১৬ সালে এশিয়া কাপে। বাংলাদেশকে বিধ্বস্ত করে সিরিজে এগিয়ে গেল পাকিস্তানের মেয়েরা। প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেস্তে যাওয়ায় সিরিজ নিজেদের করে নিতে শেষ দুটি ম্যাচেই জিততে হবে স্বাগতিকদের। বাংলাদেশের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। সর্বোচ্চ ৬ রান এসেছে নিগার সুলতানার ব্যাটে। পাকিস্তানের বাঁহাতি স্পিনার আনাম আমিন ৩ ওভারে কোনো রান না দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২৩ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বসলে শঙ্কা জাগে মেয়েদের টি-টুয়েন্টির ইতিহাসের সর্বনিম্ন ২৫ রানে আটকে এক নম্বরে উঠে যাবে না তো বাংলাদেশ। শেষ জুটি থেকে ৭ রান এলে সেই শঙ্কা কাটে। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেটে সর্বনিম্ন ২৫ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ডটি তাই মোজাম্বিকেরই থাকল। নামিবিয়ার বিপক্ষে গত আগস্টের ঘটনা সেটি। ভেজা মাঠের কারণে এদিন খেলা শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর। ১৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে বাংলাদেশ পায় ৮৯ রানের লক্ষ্য। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সফরকারীরা ৪৯ রান তুলে ফেলে ৬ ওভারে। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জাভেরিয়া খানকে ফিরিয়ে ব্রেক থ্রু আনেন দুই বছর পর টি-টুয়েন্টি খেলতে নামা লতা মন্ডল। এরপরই বদলাতে থাকে দৃশ্যপট। ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। পরে পাকিস্তানকে তিন অঙ্কও ছুঁতে দেয়নি বাংলাদেশ। টস জিতে বাটিংয়ে পাঠিয়ে সালমা খাতুনের দল সফরকারীদের আটকে রাখে ৮৮ রানে। ইনিংসের শেষদিকে টাইগ্রেস ফিল্ডাররা দুটি ক্যাচ হাতছাড়া না করলে লক্ষ্য আরও কম হতে পারত। আউটফিল্ড ভেজা থাকায় ম্যাচ শুরু হয় সোয়া এক ঘণ্টা পর। কার্টেল ওভারের ম্যাচে শুরুতে আক্রমণাত্মক মেজাজ দেখান পাকিস্তানি দুই ওপেনার জাভেরিয়া ও আয়শা জাফর। জাহানারা আলমের প্রথম ওভারে ৮ রান তোলার পরই কাটা পড়ে তাদের জুটি। ৫ বলে ৭ রান করে জাহানারার দুর্দান্ত থ্রো’তে রানআউট হন আয়শা। দ্বিতীয় উইকেট জুটি ৪১ রান যোগ করে চাপে রাখে টাইগ্রেস দলকে। ১৮ বলে ২৫ রান করা পাকিস্তান অধিনায়ক জাভেরিয়াকে কট অ্যান্ড বোল্ড করে সাজঘরে ফেরালে স্বস্তি ফেরে। শেষপর্যন্ত ৫ উইকেটে ৮৮ রান তোলে পাকিস্তানিরা। বাংলাদেশের হয়ে বাঁহাতি স্পিনার নাহিদা আক্তার নেন দুটি উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন জাহানারা ও লতা।