নিজস্ব প্রতিবেদক : যত্রযত্র গাড়ী পার্কিং ও নিয়মবর্হিভূত যাত্রী উঠানো নামানোর কারণে বিপর্যস্ত সাতক্ষীরা পৌরবাসীর জনজীবন। যেকারণে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের চলাফেরা করতে হয় চরম ঝুঁকির মধ্যে। যত্রযত্র গাড়ী পার্কিং ও বাসচলাচলের কোন নিদিৃষ্ট বাস স্টপ না থাকায় তারা ইচ্ছা-খুশিমত শহরের মধ্যে যাত্রী উঠানো নামানো করেন। এতে করে সাতক্ষীরার নিউ মার্কেট থেকে শ্যামনগর-সাতক্ষীরা সড়কের বাঁকাল হাইস্কুল, সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের সিটি কলেজ এবং সাতক্ষীরা-খুলনা সড়কের বিনেরপোতা পর্যন্ত দীর্ঘ জানযটের সৃষ্টি হয় বলে সচেতন মহল দাবি করেছেন। পৌরসভার একাধিক ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, শহরের ইটাগাছা হাটের মোড়, বাঙালের মোড়ে যানজটের অবস্থা ভয়াবহ। এখানে ফুটপাত দখল করে সারি সারি ট্রাক সড়কে দাঁড় করানো থাকে সব সময়। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কটিতে পণ্যবাহী ট্রাক,অনুমোদনহীন মাহেন্দ্রা, ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চলাচল করে। অধিকাংশ সড়ক তাদের দখল থাকে বেশির ভাগ সময়। সড়কের দুই পাশে অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন যাতায়াত করে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। বিশেষ করে কাটিয়া আমতলা মোড়ে অবস্থিত সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, টাউন গার্লস হাইস্কুল, পিএন হাইস্কুলের শিক্ষার্থীদের চরম ঝুঁকির মধ্যে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। এসব স্কুলের সামনে একাধিকবার সড়ক দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরে রাস্তা ভালোর হওয়ার কারণে বাস-ট্রাক চালকরা দ্রুত গতিতে গাড়ি চালান। যা শহরবাসীর জন্য অত্যান্ত ঝুকিপূর্ণ ও বিপদজনক। তাছাড়া হাইড্রোলিক হর্ণের আওয়াজ শহরবাসীকে বিষিয়ে তুলেছে। পাশাপাশি কিছু উঠতি বয়সী যুবকের বেপরোয়া বাইক চালানোর কারণে প্রতিনিয়ত সড়কে ঘটছে মারাত্মক দূর্ঘটনা। সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক এড. ফাহিমুল হক কিসলু বলেন, যাত্রীবাহী বাস, ইজিবাইক ও ব্যাটারি চালিত ভ্যানের নিদৃষ্ট কোন স্টপ নেই। তারা কোন নিয়ম মানেও না। এছাড়া সড়কে চলাচলের সময় প্রত্যেকই ওভারটেক করার প্রবণতার কারণে সড়কে চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফুটপাত গুলো উদ্ধার করতে হবে। রাস্তা চওড়া করে ডিভাইডার দিতে হবে এবং অন ওয়ে করতে হবে তাহলে এ সমস্যা থেকে উত্তরণ করা যেতে পারে। সাতক্ষীরা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আব্দুল মোমিন বলেন, শহরের সড়কগুলো সংকীর্ণ ও ফুটপাত না থাকা ও জনবল কম হওয়ায় অনেক কাজ আমরা করতে পারি না। সাতক্ষীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম বলেন, আগামী জুনে বাইপাস সড়ক চাল হবে। এটি চালু হলে শহরের কিছুটা হলেও যানজট নিরসনে হবে। এছাড়া শহরের বাইরে ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণ এবং ইজিবাইক-ব্যাটারি ভ্যান নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, শহরে ৬০০ অনুমোদনহীন ইজিবাইক চলছে। এছাড়া রয়েছে ব্যাটারিচালিত ভ্যান। অবৈধ ইজিবাইক ও ব্যাটারিভ্যান বন্ধে ৫টি পয়েন্টে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এসব অনুমোদনহীন যানবাহন বন্ধ করা গেলে যানজট কমে যাবে। সাতক্ষীরা জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির আহবায়ক অধ্যক্ষ আবু আহমেদ বলেন, শহরে অবাধে অনুমোদনহীন তিন চাকার মাহেন্দ্রা, ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত ভ্যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত করতে হবে। জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বলেন,আমি সদ্য যোগদান করেছি, এখনো কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি।