দেশের খবর: বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি হলেও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছে। বিশ্বের ১৪০ টি দেশের মধ্যে গত বছরের তুলনায় একধাপ পিছিয়ে ১০৩ নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গবেষণা পত্রটি উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিনহাজ মো. রেজা. মোহাম্মদ আলী এবং সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, আইসিটি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও শ্রমবাজারসহ মোট বারোটি মাপকাঠিতে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। উৎপাদন বাজার, বাণিজ্যিক গতিশীলতা, শ্রমবাজার, শিক্ষা ও অবকাঠামো খাতে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। খাতগুলোতে যথাক্রমে ১২৩ তম, ১২০ তম,১১৫ তম, ১১৬ তম এবং ১০৯ তম স্থানে অবস্থান করছে দেশটি। সিপিডির গবেষণা অনুযায়ী বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড ও জাপান। অত্যধিক বাণিজ্যিক গতিশীলতার কারণে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সিঙ্গাপুরের সাফল্যের মূলে রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং জাপানের রয়েছে শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি এবং অবকাঠামোগত দৃঢ় অবস্থান। দেশকে আগাতে হলে আমাদেরও সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করে সিপিডি। গত বছর বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা এ বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৯ তম। কিন্তু বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৩ তম এ। গবেষণাগত কিছু পরিবর্তন আসার ফলে সংখ্যাটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। ৮৩ জন বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর মধ্যে পরিচালিত গবেষণায় ব্যবসার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে এসেছে দুর্নীতি। পাশাপাশি অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, সরকারি বাধ্যবাধকতা, উচ্চ ট্যাক্স রেট এবং অদক্ষ শ্রমবাজারের কথাও উঠে এসেছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন বাণিজ্যিক অগ্রগতির জন্য এসব জায়গায় ইতিবাচক পরিবর্তন দরকার।
এ বিষয়ে সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমি যদি হাঁটতে থাকি আর আমার পাশাপাশি কেউ যদি দৌড়াতে থাকে তাহলে আমার রাস্তার দূরত্ব বাড়লেও আমি তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে যাবো। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঠিক তাই ঘটেছে। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় তথ্যপ্রযুক্তি বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে।’ তাই বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সাথে প্রতিযোগীতায় টিকে থাকতে অবকাঠামো, প্রযুক্তি, দক্ষ শ্রমশক্তি, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং নীতিমালাগত শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।