খেলা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই ফিরছেন তামিম

By daily satkhira

October 18, 2018

খেলার খবর: বুধবার বিশ্বকাপের ট্রফি নিয়ে বিসিবির একাডেমি ভবনের সামনে যখন উৎসবমুখর পরিবেশ, তখন শেরে বাংলায় ভর দুপুরে (বেলা সাড়ে বারোটার দিকে) কালো টিশার্ট ও ট্রাউজার্স পরে একাই দৌড়াচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। বেশ কিছুক্ষণ দৌড়ে তিনি এলেন নিজের চাচা বিসিবির অন্যতম পরিচালক আকরামের কক্ষে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। তখন চাচার সাথে ব্যক্তিগত আলাপচারিতার পরে তামিম কথা বলেন নিজের হাতের ব্যাপারেও।

তামিম নিজেই জানান অন্তত এক মাসের মধ্যে ব্যাট ধরার সুযোগ নেই তার। বর্তমানে হাতে রাবারের একটি রিহ্যাব ক্যাপ রয়েছে, যা কি-না রাখতে হবে আরও চার সপ্তাহ। এটি খোলার পরেই হয়তো নামতে পারবেন ব্যাট নিয়ে। তখন পাশে থাকা চাচা আকরাম খান শোনান আশার বাণী। তার কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় অংশেই ফিরতে পারবেন ভাতিজা তামিম।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজের পরপরই দেশের মাটিতে খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। দুই টেস্ট এবং তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে তারা। আকরামের ভাষ্য অনুযায়ী দ্বিতীয় ভাগ অর্থাৎ ওয়ানডে সিরিজের মধ্য দিয়েই ফিরবেন তামিম। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের বাকি প্রায় ৭ সপ্তাহের বেশি সময়। চার সপ্তাহ পরে হাতের ক্যাপ খুলে ফেলা হলে পরবর্তী তিন সপ্তাহে তামিম ব্যাট করবেন নেটে। তখন হাতে কোনো ব্যথা অনুভূত না হলে সহসাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডেতে খেলতে পারবেন তিনি। যদি তা নাও পারেন তবে সিরিজের তৃতীয় ভাগ অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি সিরিজে তামিম ফিরবেন তা একপ্রকার নিশ্চিতই বলা চলে। এদিকে তামিম জানিয়েছেন একটি ভিন্নতর তথ্য। ব্যথা হাতে ব্যাটিংয়ের সুবিধার জন্য তিনি ভারতের বিখ্যাত ‘ভ্যাম্পায়ার’ কোম্পানির কাছ থেকে বিশেষায়িত ২৬ জোড়া গ্লাভস অর্ডার করেছেন। যা কিনা তার ব্যাটিংয়ের জন্য আরামদায়ক ও স্বচ্ছন্দ্যপূর্ণ হবে। এসব গ্লাভসে আঙুলের উপরে বাড়তি একটা আবরণ দেয়া থাকবে যে কারণে সেখানে বল লাগলেও তেমন আঘাত অনুভূত হবে না।

এখানে উল্লেখ্য যে ভ্যাম্পায়ার কোম্পানি অনেক আগে থেকেই তামিমের প্যাড এবং গ্লাভসের স্পন্সর। তারা সবসময়ই তামিমকে ৪-৫ সেট গ্লাভস ও প্যাড ফ্রিতেই দিয়ে থাকে। কিন্তু এখন ২৬ জোড়া অর্ডার করায় তামিম নিজের পছন্দমতো বাহারি রঙ ও ডিজাইনে বাড়তি টাকা দিয়েই এটি করিয়ে নিচ্ছেন। ব্যক্তিগত আলাপচারিতার এক ফাঁকে জানা যায় ফিটনেস বিষয়ে তামিমের সচেতনতার কথা। চাচা আকরাম তার ভাতিজাকে জিজ্ঞেস করেন কিছু খাবেন কি-না? তখন তামিম বলেন তিনি এখন পরিপূর্ণ ডায়েটে রয়েছেন। বাইরের খাওয়া দাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ। অনেকদিন ধরেই মাঠের বাইরে থাকায় শরীরের ক্যালরি কম বার্ন হয় বিধায় খাওয়া-দাওয়াও অনেক কমিয়ে দিছেন।

এসময় সম্পূর্ণ পারিবারিক আলোচনায় চলে যান চাচা আকরাম খান। তিনি জানান চট্টগ্রামে আকরামদের খান পরিবার যতোটা ক্রিকেটীয় পরিবার, ঠিক ততোটাই ভোজনরসিকও। তারা যৌথ পরিবার হওয়ায় সবাই মিলে খেতে বসলে হয়ে যেত এলাহি কাণ্ড। শুধু তাই নয় এই বছর কয়েক আগেও প্রতিবছর রমজানে তাদের ইফতারে থাকতো প্রায় ২৫ ধরনের খাবার। তা কিভাবে? এর ব্যাখ্যাও দেন আকরাম। তিনি জানান যে যৌথ পরিবার হলেও আলাদা আলাদা ৬টি পরিবারের প্রতিটি থেকে কমপক্ষে ৪-৫ ধরনের খাবার তৈরি করা হতো ইফতারে। পরে যখন সবাই একত্রে বসতেন তখন মোটামুটি একটা পারিবারিক অনুষ্ঠানের আমেজ সৃষ্টি হতো খানদানী খান পরিবারে। সেই পরিবারের ছেলে তামিমই এখন পরিষ্কার জানান যে খাওয়া দাওয়া কমিয়ে এনেছেন, বাইরের খাওয়া পুরোপুরি বন্ধই করে দিয়েছেন। যা বেশ অবাক হওয়ার মতোই। অবশ্য যে তামিম চটকদার মার আর বাহারি স্ট্রোকপ্লে বাদ দিয়ে শট খেলার নেশা কমিয়ে, উইকেটে পড়ে থাকার ধৈর্য্যও বাড়িয়ে আগের চেয়ে অনেক মনোসংযোগী হয়ে ধারাবাহিকভাবে আরও ভালো খেলা রপ্ত করেছেন সেই তামিমের পক্ষে রসনাবিলাস কমিয়ে দেয়া কি খুব কঠিন? নিশ্চয়ই না! কি বলেন আপনারা?