আন্তর্জাতিক

কার্জন হলের আদলে পশ্চিমবঙ্গের পূজা মণ্ডপ

By Daily Satkhira

October 19, 2018

বিদেশের খবর: ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা ভারতের কোন স্থাপত্য শিল্প নয়, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের আদলে এবার পূজামণ্ডপ তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গের হুগলির উত্তরপাড়ার ইউথ কোর ক্লাব।

উত্তরপাড়া থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই পূজো প্যান্ডেলে প্রবেশ করলেই আসল-নকলের ফারাক বোঝাই কষ্টকর। প্রায় ১৪০০ বর্গফুট জায়গাজুড়ে মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে বাঁশ, কাপড় ও শোলা দিয়ে। গম্বুজ বিশিষ্ট পুরো মণ্ডপটির রঙ করা হয়েছে লাল রঙের। প্যাণ্ডেল নির্মাণে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৫ লাখ রুপি।

তবে শুধু মণ্ডপই নয়, প্যান্ডেলের মধ্যেই দেয়ালজুড়ে স্থান পেয়েছে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ছবিও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করা যদুনাথ সরকার, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কবি নজরুল ইসলামের ছবির পাশাপাশি বাংলাদেশের রূপকার ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবিটিও স্থান পেয়েছেন মণ্ডপের মধ্যে।

জায়গা পেয়েছে মুক্তিযোদ্ধা বাঘা সিদ্দিকি, শিল্পী আব্বাসউদ্দিন, বাঙালি সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক রোকেয়া বেগমের।

এদিকে, ৬৬ তম বর্ষে এই থিম করার পিছনেও একটি কাহিনী রয়েছে। ক্লাবেরই এক সদস্য তুষার কান্তি দাস একদিন কলকাতার একটি পত্রিকায় ‘কার্জন হল’ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং আকৃষ্ট হন। এরপরই ক্লাবের অন্য সদস্যদের সামনে কার্জন হলের আদলে পূজো মণ্ডপ করার প্রস্তাব দেন। আর সকলেই সেই প্রস্তাবনায় সম্মতিও দেন। আর দেরি না করে শুরু হয় কাজ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এবারের পূজোর থিম করে যথেষ্ট প্রশংসাও কুড়িয়েছে এই ক্লাবটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্ররাও পূজো ঘুরে গেছেন।

ভারত ও বাংলাদেশের মৈত্রীর সম্পর্ককে তুলে ধরার লক্ষ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এবারের থিম করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক চন্দন ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, আমরা পূর্ববঙ্গের বাসিন্দা। স্বভাবিক ভাবেই ওই বাংলার প্রতি আমাদের টান ও আকর্ষণ দুটোই রয়েছে।

তিনি আরও জানান, অবিভক্ত বাংলায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ঐতিহ্যমণ্ডিত বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাছাড়া ইউরোপ বা আমেরিকার সংস্কৃতিও আমাদের নয়। বরং সেদিক থেকে দুই বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি, ঐহিত্য অনেকটাই এক। সে ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিম আমাদের সেরা পছন্দ ছিল।

তবে পূজোই নয়, বছরের বিভিন্ন সময়ে দুস্থ শিশু, নারীদের আর্থিক সহায়তা, বই প্রদানসহ একাধিক সমাজসেবামূলক কাজেও জুড়ি মেলা ভার ‘ভদ্রকালী ইউথ কোর’ ক্লাবের।