স্বাস্থ্য

পাইলস বোঝার উপায়

By daily satkhira

October 20, 2018

স্বাস্থ্য কণিকা: পাইলস রোগটির সঙ্গে আমরা হাজার বছর ধরে পরিচিত। তবে এখনও এ রোগের বিষয়টি আমাদের কাছে অস্বচ্ছ, ভ্রান্ত ধারণায় পূর্ণ এবং কুসংস্কারের ঘেরাটোপে বন্দি। পাইলস বলতে আমরা বুঝি মলদ্বারের ভেতরে ফুলে ওঠা রক্তের শিরার একটি মাংসপিণ্ড। রক্তের শিরার মাংসপিণ্ড বা ‘কুশন’ সব মানুষেরই রয়েছে। পাইলস বা ‘হেমোরয়েড’ আমরা তখনই বলি যখন এটি কোনো উপসর্গ সৃষ্টি করছে। যেমন মলদ্বারের বাইরে ঝুলে পড়া মাংসপিণ্ড অথবা রক্ত যাওয়া।

বয়স: ৩০-৬০ বছর বয়সের ভেতর এ রোগের প্রকোপ বেশি। ২০ বছর বয়সের নিচে পাইলস খুব একটা দেখা যায় না। পাইলস শনাক্ত করা সহজ কাজ নয়। অভিজ্ঞ চিকিৎসক কেবল যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করে পাইলস শনাক্ত করতে পারেন। কখনও কখনও টয়লেটে বসিয়ে কোঁত দিয়ে দেখতে হয়।

কারণ: পাইলসের প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হয়নি। কিছু কিছু রোগ পাইলস হওয়াকে ত্বরান্বিত করে যেমন, মলত্যাগে অতিরিক্ত কোঁত দেয়া, অনিয়মিত পায়খানার অভ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া ইত্যাদি। অন্য কিছু কারণ আছে যার জন্য পাইলস হতে পারে যেমন : বংশগত, অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা, অনেকক্ষণ গরমে থাকা, ভারী ওজন তোলা, গর্ভাবস্থা, আঁটসাঁট পোশাক পরা, হরমোনের প্রভাব, আঁশ জাতীয় খাবারের অভাব ইত্যাদি।

উপসর্গ: পাইলসের শ্রেণীবিন্যাস : পাইলস দুই প্রকার।

বহিঃস্থিত পাইলস: এ ক্ষেত্রে মলদ্বারের বাইরে ফোলা থাকে এবং কিছুটা ব্যথা বা অস্বস্তি হতে পারে।

অভ্যন্তরীণ পাইলস: এ ক্ষেত্রে টয়লেটে টাটকা লাল রক্ত দেখা যায়। কোনোরূপ ব্যথা থাকে না। মলত্যাগের শেষে রক্ত যায়। রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় যায় আবার কখনও তীরের বেগে যায়। রক্ত যাওয়ার পর যদি বেশি ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হয় তাহলে এনাল ফিশার বা ক্যান্সার হতে পারে। রক্ত যাওয়া কখনও একটানা চলে না। প্রথমত বছরে একবার বা দু’বার যায় এরপর দু’মাস পরপর যায়। তারপর প্রতি মাসে যায়।

পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না। থ্রম্বেসিস হলে বা পাইলস বাইরে অতিরিক্ত ঝুলে থাকলে ব্যথা হতে পারে। যেসব রোগে টয়লেটে রক্ত যায় তার মধ্যে রয়েছে পাইলস, এনাল ফিশার, পলিপ, ক্যান্সার, ফিস্টুলা, আলসারেটিভ কোলাইটিস, রেকটাল প্রোলাপস।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা: প্রকটস্কপি ও সিগময়ডস্কপি পরীক্ষা করা জরুরি। মলদ্বারের ভেতর এন্ডোস্কপি যন্ত্র দিয়ে এ পরীক্ষা ব্যতীত কখনও সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব নয়।

প্রতিরোধের উপায়: সময়মত কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার চিকিৎসা করা, টয়লেটে বসে বসে পেপার বা বই না পড়া, খাবারের সঙ্গে আঁশ জাতীয় জিনিস যেমন : ফল, সবজি, সালাদ পরিমাণমতো খাওয়া, দৈনিক ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা, ভারী ওজন না তোলা, অতিরিক্ত গরমে বেশিক্ষণ না থাকা ইত্যাদি।