বিদেশের খবর: ভারতে প্রধান তদন্তকারী সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (সিবিআই) রদবদলের ঘটনায় রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে সংস্থাটির দুই শীর্ষ কর্মকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়। এ নিয়ে একজন ইতোমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। অন্যদিকে বিরোধী দল কংগ্রেস বলছে, ফ্রান্সের সঙ্গে করা রাফাল চুক্তি আড়াল করতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও সরকার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সিবিআই প্রধান অলোক কুমার বার্মা এবং তার উপ-প্রধান রাকেশ আস্থানার মধ্যে শুরু হওয়া গোলমালের দিকে গোড়া থেকেই তীক্ষ নজর রেখেছিল দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। অলোক বার্মা এবং রাকেশ আস্থানা পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। গোলমাল ক্রমশ বাড়ছিল। কিন্তু আস্থানার নেতৃত্বে গঠিত একটি বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) সদস্য তথা সিবিআই’র ডিএসপি দেবেন্দ্র কুমার গ্রেপ্তার হতেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তীব্র অস্বস্তির মুখে পড়তে হয় সরকারকে। সিবিআইকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে ফেলেছে বিজেপি এবং এর জেরে বিজেপির তথা ক্যাবিনেটের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন সিবিআইকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছে বলে সমালোচনা শুরু করেন বিরোধীরা।
সরাসরি হস্তক্ষেপ করা ছাড়া উপায়ান্তর ছিল না প্রধানমন্ত্রীর মোদীর সামনে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ১টা ৪৫ মিনিটে অলোক বার্মা ও আস্থানাকে ছুটিতে পাঠিয়ে নাগেশ্বরকে দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই তথ্য জানান অরুণ জেটলি। জেটলি বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং দেশের প্রধান তদন্তকারী সংস্থায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংহতি ধরে রাখতে এই পদক্ষেপ জরুরি ছিল। যতক্ষণ না তদন্ত শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ ছুটিতেই থাকবেন বার্মা ও আস্থানা।
কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী বলেছেন, রাফাল চুক্তির দুর্নীতি ঢাকতেই সরানো হয়েছে বার্মাকে। অন্যদিকে বার্মা এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন এবং তার হাত থেকে দায়িত্ব কেড়ে নেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। সিবিআইকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার যে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্ট আগেই দিয়েছিল, সরকারের এই হস্তক্ষেপ সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে বার্মার দাবি। সরকারের পক্ষ থেকে অরুণ জেটলি অভিযোগ নাচক করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গতকাল টুইটার বার্তায় সরকারের কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, সিবিআই এখন ‘বিজেপি ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (বিবিআই)’ পরিণত হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। সূত্র- আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভি