আজকের সেরা

এক সন্ত্রাসী চেয়ারম্যানের কাছে জিম্মি সমগ্র বাঁশদহা ইউনিয়নবাসী

By Daily Satkhira

January 04, 2017

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিককে হত্যার চেষ্টার ঘটনায় আহত সাংবাদিক জুলফিকার((২৪)এর বাবা রাহাতুল্ল সরদার বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মোশাররফ হোসেনকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নামে গত  সোমবার সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলা করেছে। মামলা নং ০৪। মামলা সত্বেও প্রকাশ্যে মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে সন্ত্রাসী মোশাররফ বাহিনী। বিভিন্ন নম্বর থেকে বাদিকে হুমকি-ধামকিও দিয়ে যাচ্ছে তার লোকজন। আসামিরা হল ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মোশাররফ হোসেন(৪০), তার ভাই এস এম মোকাররম হোসেন(৩০), সুলতান আহম্মেদের ছেলে নাদিম হোসেন ফয়সাল(২২), আরিজুল সরদারের ছেলে তারিকুর রহমান(২৪),মৃত উজির আলীর ছেলে মিঠু(৩০),মৃত রহমান মোল্লার ছেলে শহিদুল ইসলাম(৫০),শফিউর রহমানের ছেলে শহিদ হোসেন(২৩), রফিকের ছেলে রিংকু(২০),পাঁচরখী গ্রামের আমের আলীর ছেলে খোকা(৪০), রেউই গ্রামের খোকনের ছেলে সাজু(২৮)। ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মোশাররফ হোসেন নির্বাচনে জয়লাভ করেই শুরু করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি। তার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা সহ একাধিক পত্রিকায় সচিত্র সংবাদ প্রকাশ হয়। মাস দুয়েক আগেও হতদরিদ্রের ১০ টাকা কেজি দরের চাউল বিতরণের তালিকায় ব্যাপক অনিয়ম করেন ইউপি চেয়ারম্যান এস এম মোশাররফ হোসেন। সেই অনিয়মের সচিত্র সংবাদ আজকের সাতক্ষীরা পত্রিকায় প্রকাশ করেন সাংবাদিক জুলফিকার আলী। সেই থেকে চেয়ারম্যানের টার্গেটে ছিল সাংবাদিক জুলফিকার আলী। গত রবিবার রাত ৯ টার সময় গোপনে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ ও ইউপি মেম্বর শহিদুল ইসলাম গোপনে উপজেলা থেকে প্রাপ্ত কম্বল অসহায় ও দুস্থদের না দিয়ে গোপনে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করছিলেন। এটি জানতে পেরে ওই সাংবাদিক শহিদুলের কাছে ফোন দিয়ে কম্বলের বিষয়ে জানতে চান। তখন ইউপি চেয়ারম্যান তার মেম্বরের কাছ থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে সাংবাদিক জুলফিকার কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং জুলফিকার কোথায় আছে জানতে চাইলে জুলফিকার রেউইবাজারে কাপড়ের দোকানে থাকার কথা বলে। দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যাবার পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফসহ আসামীরা লোহার রড, ক্রেস, বাঁশের লাঠি নিয়ে মটরসাইকেল যোগে সাংবাদিক জুলফিকারকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে তারা জুলফিকারের হাতের নখ প্লাস দিয়ে তুলে নেয়। সাংবাদিক জুলফিকারের আত্মচিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে রাত ১২ টায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এখনও তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন আছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাতক্ষীরা সদর থানার এস আই শরিফ এনামুল বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আসামিদের বাড়িঘর তল্লাশী চালিয়েছি। অপরাধীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। কোন অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না। যদিও ইউনিয়নবাসী বলছেন, ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। উল্লেখ্য, এ চেয়ারম্যান নিজেই নারী-শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় ১৪ বছরের কারাদ- প্রাপ্ত আসামি। বর্তমানে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে আছেন। তার রয়েছে একটি নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। সে সব সময় বেআইনি অস্ত্র বহন করে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। সাংবাদিক হত্যা চেষ্টা মামলার ২নং আসামি মোকাররম রেউই বাজারের লাল গোলাপ একতা সংঘ নামক একটি ক্লাবের পিছনে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ইয়াবা সেবন ও বেচা-কেনার হাঁট বসায় আর প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে আসছে দিনের পর দিন। যা বেপরোয়া করে তুলেছে মোশারফ চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীকে। মামলার ৩ নং আসামি(চেয়ারম্যানের আপন ভাগ্নে) নাদিম কয়েকমাস আগে ৮ম শ্রেণি পড়–য়া শিশু বিপ্লবের মুখে লাথি মেরে তার ৫টি দাঁত ভেঙে দেয়। বিপ্লব ৮/১০ দিন সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এখনও তাকে চিকিৎসকের কাছে আসতে হয় নিয়মিত। অথচ শিশু নির্যাতনের এ ঘটনায় বিপ্লবের বাবা সদর থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন মামলা নেয়নি বরং মীমাংসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে দরিদ্র পিতার উপর। এক দরিদ্র ভ্যানওয়ালার ছাগল ক্ষেতে ঢুকেছিল বলে তার স্ত্রীকে প্রকাশ্যে মারধর করে ও কাপড় ছিঁড়ে দেয় এই নাদিম। এ ঘটনায়ও কোন ন্যায়বিচার পায়নি ওই দরিদ্র নারী।