দেশের খবর: টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে চার টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তারা হলেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী মতিউর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
পদত্যাগপত্র জমা দেয়ার পর তারা আর দায়িত্বে নেই ধরে নিয়ে বুধবার সকাল নাগাদ চার মন্ত্রীর কেউই অফিসে আসেননি। পরে প্রধানমন্ত্রী তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার প্রধানের নির্দেশনার পর আমি যথারীতি অফিস করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেকোনো মন্ত্রীকে পদত্যাগের নির্দেশ দিতে পারেন। কারণ প্রধানমন্ত্রীর কাছে মন্ত্রিসভা দায়বদ্ধ। সেই অনুযায়ী আমরা পদত্যাগপত্র দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারেন, আবার নাও করতে পারেন। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করবেন ততক্ষণ পর্যন্ত মন্ত্রীরা স্বপদে বহাল থাকবেন।’
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘পদত্যাপপত্র জমা দেয়ার পর নৈতিক অবস্থানের কারণে আর দায়িত্বে না ফেরার বিষয়টি তখনই আসত যদি আমি স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র দিতাম। আমি তো প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। তারপরও সেই নৈতিকতার কথা মাথায় রেখে সরকারি গাড়ি বিদায় দিয়ে বাসায় বসে ছিলাম। সরকার আমাকে বলেছে- কে বলেছে, আপনি মন্ত্রী না? সুতরাং আমাদের বলা হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী যতক্ষণ পর্যন্ত না পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি আপনারা দায়িত্ব পালন করে যাবেন।’
ধর্মমন্ত্রীর দফতরের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘স্যার (ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান) প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী স্যারকে প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেছেন।’
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান এবং ধর্মমন্ত্রীর দফতরে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানান, মন্ত্রীরা আর অফিসে আসবেন না। তাদের জিনিসপত্র ধীরে ধীরে সরিয়ে নেয়া হবে। কারণ মঙ্গলবার অনেকটা আকস্মিকভাবেই তারা পদত্যাগপত্র জমা দেন।
সকালে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর দফতরে গিয়ে জানা যায়, মন্ত্রী বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে এসে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাবেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে, পদত্যাগপত্রগুলো প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। এরপর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পদত্যাগের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী টেকনোক্র্যাট (সংসদ সদস্য না হয়েও বিশেষ বিবেচনায় মন্ত্রী) মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেন। বর্তমানে মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়া ৩৩ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী, দুইজন উপমন্ত্রী রয়েছেন। এরমধ্যে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী এই চারজনই।
নির্বাচন কমিশন আগামী বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোটের দিন নির্ধারিত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর এই সরকার কোনো নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। রুটিন ওয়ার্ক চালিয়ে যাবে।