দেশের খবর: দেশের মানুষকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার পায়তারা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। শুক্রবার বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে সাতদফা দাবিতে ঐক্যফ্রন্টের বিভাগীয় সমাবেশে মোবাইলে এ মন্তব্য করেন তিনি। অসুস্থতার কারণে সমাবেশে ঢাকা থেকে রাজশাহী আসতে পারেননি ড. কামাল হোসেন। ফলে তিনি মোবাইলে বক্তব্য দেন। সমাবেশে আসতে না পেরে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। দ্বিতীয়বার সংলাপে গিয়ে নির্বাচনের তফসিল পেছানোর দাবি করেছিলাম, কিন্তু আমাদের দাবি উপেক্ষা করে, তড়িঘড়ি করে, সংবিধান পরিপন্থিভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে এতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটবে না।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আগামী নির্বাচনে জনজোয়ারে আওয়ামী লীগের নৌকা ভেসে যাবে। আমরা সন্ত্রাস ও সংঘাত এড়ানোর জন্য সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছিলাম। গত দশ বছর ধরে দেশে গণতন্ত্রের সংকট, বিচার বিভাগের সংকট ও আইনের শাসনের সংকট চলছে। মৌলিক অধিকার হারিয়েছে দেশের জনগণ। আমরা এগুলো ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। এনিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দুই দফা সংলাপে বসেছিলাম। আমরা সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছিলাম। কিন্তু সেই সংলাপ সফল হয়নি। কারণ স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতা ছাড়তে চায় না।’ এবার ৫ জানুয়ারির মত নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, সংলাপে গিয়েছিলাম, দেশ-জাতিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। বলছি সংঘর্ষে যাবেন না। আমরা নির্বাচনে আসতে চাই, নির্বাচনে আসতে চাই। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। সংলাপে দাবি করেছিলাম, সংসদ বাতিল করেন, আপনি পদত্যাগ করেন। সংসদ ভেঙ্গে দেন। কিন্তু তিনি শুনলেন না। তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করে দিলেন। আমরা যাতে নির্বাচনে যেতে না পারি। দেশের ৯০ শতাংশ ভোটারকে বাদ দিয়ে সাত দফা না মেনে দেশে নির্বাচন হতে পারে না। যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন সেটা কি সংবিধানে ছিল। আজকে বলছেন, তফসিল ঘোষণার পরে আন্দোলন বেআইনি। যখন বিরোধী দলে ছিলেন তখন বেআইনি ছিল না। এসব তালবাহানা করে পার পাবেন না। দাবি মানতে হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, যতদিন বেঁচে থাকবো বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে ধরে বেঁচে থাকবো। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর জিয়াউর রহমানের মদ্যে দ্বন্দ্ব করে যারা দেশকে লুটে পুটে খাচ্ছে। আল্লাহ যদি আমাকে সময় দেয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আর জিয়াউর রহমানের দ্বন্দ্ব আমি মিটিয়ে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ২০১৫ সালে লাগাতার হরতাল দিয়েছিলেন, আমি উনাকে হরতাল প্রত্যাখ্যান করতে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি হরতাল প্রত্যাখ্যান করতে পারেন নাই। এর আগে শেখ হাসিনাকে বলেছিলাম আলোচনায় বসুন, বসেননি। এবার আলোচনায় বসেছেন। যেদিন আলোচনায় বসেছেন সেদিনই আপনাদের বিজয় হয়েছে। আপনারা কি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় দেখতে চান। বাংলাদেশের রাজনীতি মানেই বেগম খালেদা জিয়া, তাকে বন্দি রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রথম রাজাকারের গাড়িতে পতাকা দেয়নি। শেখ হাসিনা রাজাকারের গাড়িতে প্রথম পতাকা দিয়েছে।