দেশের খবর: জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, উন্নয়ন প্রকল্প এলাকা ও বিদেশি সেন্টারগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা টহল। এ ছাড়া কেপিআই (গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনা) এলাকায় প্রবেশাধিকার সংরক্ষণ ও পাহারা বৃদ্ধি করা হয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের গতিবিধি। নির্বাচনের আগে যাতে করে এসব স্থান ঘিরে কোনো চক্র নাশকতা করতে না পারে সে জন্যই এ আগাম নিরাপত্তা। গত সপ্তাহে পুলিশ সদর দফতরে আয়োজিত এক বৈঠকে পুলিশ প্রধান মাঠপর্যায়ের দায়িত্বশীল উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দফতরের এডিশনাল ডিআইজি (ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অ্যাফেয়ার্স) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প এলাকায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে। বিশেষ সময়কে সামনে রেখে সুযোগসন্ধানীরা নাশকতার চেষ্টা করে থাকে। গোয়েন্দা তথ্য আছে, জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে উন্নয়ন প্রকল্প বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে ‘টার্গেট’ করতে পারে নাশকতাকারী চক্র। এ কারণে এসব এলাকায় পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, সিসি ক্যামেরায় নজরদারি এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্য বাড়ানো হয়েছে।
ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ইতিমধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আশুগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট, মোংলা ও পায়রা বন্দরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। লোকবলের ঘাটতি সত্ত্বেও বিশেষ নজরদারি অব্যাহত আছে।
অপর এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন ভবন, দফতর, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, গ্যাস ও কয়লা ক্ষেত্র, ইপিজেডসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত এলাকায় নিরাপত্তা আগের চেয়ে বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, কেপিআই এলাকার কোথাও কোথাও বাইরের সাধারণ লোকদের যাতায়াত করার সুযোগ নেই। এসব এলাকায় উন্নয়ন কেন্দ্রের দেশীয় লোকদের পাশাপাশি বিদেশি লোকদের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি।
এ কারণে নিরাপত্তার অজুহাত যেন কেউ তুলতে না পারে- বিষয়টি মাথায় রেখেই অ্যাডভান্স ইনটেলিজেন্সের অংশ হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে। প্রায় ৪শ’ স্থাপনা বিভিন্ন ক্যাটাগরির আওতায় আনা হয়। এর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাইরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিশেষ নজর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। তিনি জানান, নাশকতা করতে পারে এমন অনেকে গোয়েন্দা জালে রয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা থেকে পাওয়া সমন্বিত গোয়েন্দা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান বলেন, স্বাভাবিক নিরাপত্তার বাইরে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এসব এলাকায় চেকপোস্টে তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ওয়াইএম বেলালুর রহমান বলেন, কেপিআই এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা রয়েছে। টহল ও তল্লাশি বৃদ্ধি ছাড়াও সন্দেহভাজনদের গতিবিধি অনুযায়ী জিজ্ঞাসাবাদও করা হচ্ছে। দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত এলাকা, সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় স্বাভাবিক নিরাপত্তার চেয়ে কয়েকগুণ নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মতো প্রথম শ্রেণীর কেপিআই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।