জাতীয়

শহীদুল আলমের মুক্তির দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে বু‌দ্ধিজীবী‌দের চিঠি

By daily satkhira

November 14, 2018

অনলাইন ডেস্ক: ওই চিঠিতে তাঁরা লিখেছেন, “শহীদুল আলমকে যেভাবে একটানা হেফাজতে রাখা হয়েছে সেটা একটা অসহিষ্ণু রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের পরিচয় – বাংলাদেশী নাগরিকদের কণ্ঠস্বর ভয় দেখিয়ে স্তব্ধ করে রাখার চেষ্টা।” এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে অভিনেত্রী শাবানা আজমি, অপর্ণা সেন বা নন্দিতা দাশ-রা যেমন আছেন, তেমনই আছেন ভারতের বিখ্যাত ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার বা রামচন্দ্র গুহও। ইংরেজি ভাষায় লেখালেখির জন্য ভারতের সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত দুই লেখক, বিক্রম শেঠ ও অমিতাভ ঘোষও সই করেছেন ওই চিঠিতে। বাংলা ভাষার প্রবীণ কবি শঙ্খ ঘোষও আছেন স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে। বাদ যাননি বুকার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখিকা ও অ্যাক্টিভিস্ট অরুন্ধতী রায়, কিংবা ভারতের নামী সাংবাদিক রাজদীপ সারদেশাই-ও। লন্ডন থেকে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নৃত্যশিল্পী তথা কোরিওগ্রাফার আকরাম খান এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ শিল্পী আনিস কাপুরও তাদের সমর্থন দিয়েছেন এই দাবিতে।

এছাড়াও করাচি থেকে মোহাম্মদ হানিফ, কলম্বো থেকে নিমালকা ফার্নান্ডো, টরেন্টো থেকে অ্যাক্টিভিস্ট মঞ্জুশ্রী থাপা, লাহোর থেকে সালিমা হাশমি, কাঠমান্ডু থেকে কনকমণি দীক্ষিতের মতো অনেকেই সই করেছেন ওই চিঠিতে। ভারত ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখন যে ধরনের উষ্ণতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তাতে দুদেশের বুদ্ধিজীবীরাও সাধারণত অন্য দেশের সরকারের প্রকাশ্য সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু শহীদুল আলমের ক্ষেত্রে এসে দেখা যাচ্ছে, ভারতের অনেক শীর্ষস্থানীয় লেখক-শিল্পী-অভিনেতা-আইনজীবীরাই বাংলাদেশ সরকারকে তীব্র আক্রমণ করতেও দ্বিধা করছে না। ‘দৃক’ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ও আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের মুক্তির দাবি ভারতে অবশ্য এই প্রথম উঠছে না। গত আগস্ট মাসের শুরুতে ঢাকায় তার বাড়ি থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা মি আলমকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ভারতের নামী ফটোগ্রাফার রঘু রাই সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রতিবাদ জানান। মি আলমের মুক্তি চেয়ে ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ’ সম্মানে ভূষিত রঘু রাই তখনই প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে চিঠি লিখেছিলেন। শহীদুল আলমকে যাতে নি:শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়, সেই দাবিতে মানব-বন্ধনও করেছিলেন মুম্বাই প্রেস ক্লাবের সদস্যরা। এদিনের চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা লিখেছেন, “নাগরিক সমাজে অন্যদের বিরূপ সমালোচনাকে স্তব্ধ করতেই যে শহীদুল আলমের মামলাটি ব্যবহার করা হচ্ছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট।”

“শহীদুল আলম অবশ্যই একজন বাংলাদেশের নাগরিক, কিন্তু বাদবাকি দক্ষিণ এশিয়াতে আমরাও কিন্তু তাকে আমাদেরই একজন বলে ভাবতে গর্বিত বোধ করি – কারণ তিনি সত্য, ন্যায় ও সামাজিক সমতার মূল্যবোধ প্রসারে কাজ করেন।” গত ৫ আগস্ট রাতে ঢাকায় গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে শহীদুল আলম এখনও জেলেই রয়েছেন। এর মধ্যে একাধিকবার তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে।