দেশের খবর: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউম্যানিটি (মানবতার জননী) খেতাবে ভূষিত করেছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক টেলিভিশন ‘চ্যানেল ফোর’। এ উপাধি পাওয়ায় একই বছর ১৬ অক্টোবর মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সেই উদ্যোগকে সামনে রেখে দেশে চালু হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক’।
সমাজের কল্যাণে বিশেষ অবদানের জন্য ব্যক্তি ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে পাঁচটি শ্রেণিতে দেওয়া হবে এই পদক। ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম সোনা দিয়ে পদকটি তৈরি হবে। সঙ্গে থাকবে দুই লাখ টাকার সম্মানী ও সম্মাননা সনদ। ‘শেখ হাসিনা মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক নীতিমালা ২০১৮’-র খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
সমাজকল্যাণসচিব জিল্লার রহমান বলেন, ‘একুশে পদক ও রোকেয়া পদকের মতো মাদার অব হিউম্যানিটি পদকেও সমান পুরস্কার থাকছে। এতে ব্যক্তিপর্যায়ে তিনটি এবং প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে দুটি পদক দেওয়া হবে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে পদক কমতে-বাড়তে পারে। বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সরকারি সংস্থাও এই পদক পেতে পারে। আগামী বছর থেকেই মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক চালু হবে।’
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচ শ্রেণিতে শেখ হাসিনা মাদার অব হিউম্যানিটি সমাজকল্যাণ পদক দেওয়া হবে। সেগুলো হলো—সুবিধাবঞ্চিত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর সামাজিক সুরক্ষা প্রদান, বয়স্কা, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীদের কল্যাণে ও পুনর্বাসনে অবদান, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সমন্বিত ও সমউন্নয়ন, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং মানবকল্যাণ ও মানবতাবোধে সমাজ ও রাষ্ট্রকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে এমন কর্মকাণ্ড।
পদকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্বেচ্ছাসেবী সমাজকল্যাণ সংস্থাসমূহ অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুযায়ী নিবন্ধিত হতে হবে। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ ও সাধারণ সদস্যদের নিজস্ব তহবিলে পরিচালিত হতে হবে। অলাভজনক, অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবী কর্মকাণ্ড পরিচালনায় অনন্য হতে হবে। সরকারি দপ্তর, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এই পদক পেতে আবেদন করতে পারবে। একবার পদক পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান পাঁচ বছরের মধ্যে আবেদন করতে পারবে না। রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ, ফৌজদারি আইনে শাস্তিপ্রাপ্ত কিংবা অভিযুক্ত এবং ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত বা দেউলিয়া কোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান এই পদক পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে না। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, প্রতিবছর ৫ জুলাই মনোনয়নের জন্য আহ্বান করা হবে। জেলা কমিটি প্রাথমিক বাছাই শেষ করে তা পাঠাবে জাতীয় কমিটির কাছে। প্রধানমন্ত্রী পদকপ্রাপ্তদের নাম চূড়ান্ত অনুমোদন করবেন। পরের ২ জানুয়ারি পদক ঘোষণা করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র মতে, আজকের বৈঠকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের আলাদা একটি প্রস্তাব উঠছে। এ কাউন্সিল সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে দুই হাজার ৬০০ ইউনিয়নে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মানুষকে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে দুটি এনটিটি প্রতিষ্ঠান। দুটি প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ৬০০ ইউনিয়নে ২০ বছর মেয়াদে এই প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ ও আপগ্রেডেশন করবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মামুন আল রশীদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ব্যক্তি খাতের উদ্যোক্তা লভ্যাংশের কত শতাংশ পাবে, সেটি ঠিক হবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে।’