নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রতিবন্ধীরা আমাদেরই সন্তান। তারা আমাদের বোঝা নয়। তাদেরকে শারীরিকভাবে সুস্থ করে সমাজের মূলধারায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এর সাথে যুক্ত হয়েছে সাতক্ষীরার স্বাস্থ্যসেবাধর্মী কয়েকটি সরকারি বেসরকারি সংস্থা। মঙ্গলবার সাতক্ষীরায় ডিআরআরএ আয়োজিত এক বৈঠকে একথা বলেন বক্তারা। তারা বলেন সমাজের প্রতিবন্ধীদের প্রতি বন্ধুসুলভ আচরন, তাদের চিকিৎসায় মনোযোগী হওয়া এবং সর্বোপরি তাদেরকে জনশক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে হলে এই তৎপরতা আরও বাড়িয়ে দিতে হবে। নিয়মিতভাবে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কাজ চালিয়ে যেতে হবে। শহরের পলাশপোলে ডিআরআরএ (ডিস্যাবলড রিলিফ ্অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যাসোসিয়েশন ) অফিসে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সুভাষ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ষান্মাসিক বৈঠকে বলা হয় গত ছয় মাসে ডিআরআরএ ১১৯ জন প্রতিবন্ধী শনাক্ত করে তাদেরকে বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। ১২ ধরনের প্রতিবন্ধীতা রয়েছে উল্লেখ করে তার মধ্যে ছয় ধরনের প্রতিবন্ধীর থেরাপিসহ অন্যান্য সেবা দেওয়া হয়। প্রতিবন্ধী হয়ে পড়ার মত অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দিয়ে অনেক শিশুকে বহুলাংশে সুস্থ করে তোলা হয়েছে। এ ছাড়া ডিআরআরএ বাড়ি বাড়ি যেয়ে প্রতিবন্ধীর থেরাপি কিভাবে দিতে হয় তাও শিখিয়ে দিয়ে আসছে। তাদেরকে নানা ধরনের সহায়ক উপকরন দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আশাশুনি, দেবহাটা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১৬ জন সরকারি ডাক্তারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের সেবাদান অব্যাহত আছে। সরকারের সহযোগিতার কারণে জেলায় প্রতিবন্ধী বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেবলমাত্র সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় ৪০০ জন নিবন্ধিত প্রতিবন্ধী প্রতিমাসে ছয়শত টাকা ভাতা পাচ্ছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করা হয়।দেশ জুড়ে আরও অনেক প্রতিবন্ধীর তালিকা তৈরি হচ্ছে জানিয়ে বৈঠকে বলা হয় কোনো প্রতিবন্ধীই আর অনাদর অবহেলায় থাকবে না। সরকার এ ব্যাপারে বেশ সচেতন রয়েছে। এরই মধ্যে এসব বিষয়ে জরিপ চলছে। ডিআরআরএ ছাড়াও প্রতিবন্ধীদের সেবা দিচ্ছে রিশিল্পী, প্রতিবন্ধী সেবা সাহায্য কেন্দ্র এবং বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে বলা হয় সাতক্ষীরা জেলায় এখন প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৩৩ হাজারেরও বেশি। কেবলমাত্র সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় এই সংখ্যা এক হাজার তিন শ’। বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতিবন্ধী চিকিৎসার জন্য বিশেষ চিকিৎসক নিয়োগের জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলা হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এরই মধ্যে এ ব্যাপারে সায় দিয়েছেন। বৈঠকে বলা হয় প্রতিবন্ধী শিশুদের স্কুল পরিক্ষায় অভিন্ন প্রশ্ন নয় বরং ভিন্ন প্রশ্ন করতে হবে। একই সাথে তাদের উত্তরপত্র পরিক্ষায়ও সহানভূতিশীল হতে হবে। তাদের বেতন কমাতে হবে। বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা ম্যানেজার আবুল হোসেন, আনজির হোসেন , প্রতিবন্ধী অভিভাবক আবুল কাসেম, প্রতিবন্ধী আমিনুল ইসলাম, প্রতিবন্ধী অভিভাবক নিলুফা ইয়াসমিন প্রমূখ। এ সময় প্রতিবন্ধী স্কুলেল প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক এম রফিক, সাংবাদিক মো. বেলাল হোসেন, প্রতিবন্ধী অভিভাবক মমতাজ বেগম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।