দেশের খবর: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে নির্বাচনে সুশীলদের অংশ নেয়ার ব্যাপারে অধিক সতর্ক অবস্থানে গণফোরাম। সুশীল ও নাগরিক সমাজের নেতৃবৃন্দ গণফোরামে অংশ নিচ্ছে- এমন প্রচার রয়েছে রাজনীতি ও গণমাধ্যমে। নির্বাচনে সুশীলদের মধ্যে কে কে অংশ নিতে পারেন, তা আপাতত গোপন রাখতে চাইছে দলটি।
এ প্রসঙ্গে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘আমরা পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করে জোট করেছি। আমরা চাই সমাজের অধিক জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিরা আমাদের আহ্বানে সাড়া দিক। তবে সুশীলদের বিষয়ে বিস্তারিত বলার সময় এখনও আসেনি।’
সম্প্রতি ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া। তিনি হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে চান। অপরদিকে সোমবার গণফোরামে যোগ দেন সাবেক ১০ সেনা কর্মকর্তা। এরপর সুশীলদের নির্বাচনে আসার বিষয়টি আরও গুরুত্ব পায়।
তবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সুশীলদের নাম জুড়ে দেয়ার বিষয়টি সরকারের কৌশল হতে পারে- এমনটি মনে করছেন কেউ কেউ। বিশেষ মুহূর্তে নির্বাচনকালীন সরকারে যাতে সুশীলরা ভূমিকা রাখতে না পারেন অথবা ঐক্যফ্রন্টের হয়ে কোনো ভূমিকা রাখতে না পারেন- সেজন্য এমন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে, এমন অভিযোগও কারও কারও।
সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী রিজওয়ানা হাসান, এমন গুঞ্জনও তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। বলেন, ‘যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অন্য কেউ অভিপ্রায় ব্যক্ত করতেই পারেন। আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি, তা কেউ প্রত্যাশা করতেই পারেন। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেব কি নেব না, তা আমার অভিপ্রায়।’ তিনি বলেন, ‘আমি কখনও নির্বাচন করার ইচ্ছা পোষণ করিনি। আমার কাছে কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকেও নির্বাচন করার প্রস্তাব আসেনি। নির্বাচন নিয়ে আমার নাম প্রচার পাওয়া রহস্যই মনে হচ্ছে।’
নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো দল থেকে প্রস্তাব আসলে সাড়া দেবেন কিনা- জবাবে রিজওয়ানা বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে আমার কোনো আগ্রহ নেই।’ এবারের নির্বাচনে সুশীলদের পাশে চাইছেন ড. কামাল হোসেন। তাদের মধ্যে কারাবন্দি ঐক্যফ্রন্ট নেতা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক, মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সাবেক সেনাপ্রধান হাসান মশহুদ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান রয়েছেন।
তবে গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসিন মন্টু সুশীলদের কারও নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘সরকার নানাভাবে বিতর্ক ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চাইছে। এ কারণেই আমাদের অধিক সর্তক থেকে এগোতে হচ্ছে। প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করতে আমাদের আরও সময় নিতে হচ্ছে।’ ‘তবে গণফোরামের প্রার্থী তালিকায় অবশ্যই চমক থাকবে’- যোগ করেন তিনি।