দেশের খবর: কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি প্রয়াত জিএম রহিম উল্লাহর নামে সড়কের নামকরণ ও পরিবারের নামে জমি বরাদ্দ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এমপি সাইমুম সরওয়ার কমল। কমল কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের বর্তমান এমপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিল জিএম রহিম উল্লাহর।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জিএম রহিম উল্লাহর জানাজা শেষে সবার উদ্দেশ্যে জামায়াত নেতার নামে সড়কের নামকরণের ঘোষণা দেন এমপি কমল। একইসঙ্গে প্রয়াত জামায়াত সেক্রেটারি জিএম রহিম উল্লাহর পক্ষে উপস্থিত মুসল্লিদের কাছে দোয়া ও ক্ষমা চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এমপি কমল।
তিনি বলেন, রহিম উল্লাহ ভাই বড়মাপের রাজনৈতিক নেতা। উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পরও ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঠিকমতো বাড়ি ভাড়া দিতে পারতেন না। তার পরিবার এখন অসহায়। তাই তার জানাজার মাঠে আপনাদের কথা দিলাম, রহিম উল্লাহ ভাইয়ের পরিবারের জন্য একটি জায়গার ব্যবস্থা করে দেব। তার নামে একটি সড়কের নামকরণেরও ব্যবস্থা করব।
এমপি কমল বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আমার সঙ্গে রহিম উল্লাহ ভাইয়ের কোনোদিন কোনো বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়নি। বরং সমন্বয় করে কাজ করতাম। তার প্রশাসনিকভাবে কোনো কিছু করার প্রয়োজন হলে আমাকে দিয়ে ফোন করাতেন। আমিও তার কোনো প্রকল্প আটকে রাখতাম না। আজ পবিত্র দিনে আমরা প্রিয় মানুষটিকে হারিয়েছি। উনি কোনো ভুল করে থাকলে আপনারা ক্ষমা করবেন। ওনার জন্য দোয়া করবেন সবাই।
এদিকে, কমলের এ ঘোষণার পর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য কমল এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, ব্যক্তি কমল যে কাউকে সহযোগিতা করতে পারেন। তবে কোনো ব্যক্তির নামে সড়কের নামকরণে ক্ষমতা রাখেন না তিনি। তার ঘোষণাটি নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক কৌশল।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজিবুল ইসলাম বলেন, মুসলমান হিসেবে যে কারো জানাজায় যাওয়া সবার নৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগের একজন এমপি হিসেবে এই ঘোষণা রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা ছাড়া আর কিছুই না। মূলত সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানকে (মেয়র) কয়েকবার ফোন করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত, কক্সবাজার সদর উপর উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জিএম রহিম উল্লাহ মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) কক্সবাজার শহরের আবাসিক হোটেল সাগরগাঁওতে ঘুমন্ত অবস্থায় মারা যান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসন থেকে জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা ছিল জিএম রহিম উল্লাহর।