জাতীয়

খুনের পর মেয়ের লাশ ডোবায় ফেলে থানায় মায়ের জিডি

By daily satkhira

November 24, 2018

অনলাইন ডেস্ক: প্রেম মেনে নিতে না পেরে মেয়েকে হত্যা করেছেন এক মা। শুধু তাই নয়, লাশটি বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে থানায় গিয়ে মেয়ে নিখোঁজের জিডিও করেন তিনি। গত ১১ নভেম্বর কলেজছাত্রী তাবাছসুম তানিয়া চমককে (২২) হত্যা করা হয়। তিনি নোয়াখালী জেলা শহরের জয়কৃষ্ণপুর এলাকার উকিল বাড়ির শাহাজাদা এনামুল হক হিমেলের মেয়ে। সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এই কলেজছাত্রী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে নোয়াখালী পুলিশ।

শনিবার সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ। তিনি জানান, গত ১১ নভেম্বর নোয়াখালীর সোনাপুর ডিগ্রি কলেজের অনার্স (সম্মান) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তাবাছসুম তানিয়া চমককে হত্যা করেন তার মা সাজেদা আক্তার নিপু (৪০)।

এতে সহযোগিতা করায় নিপু ছাড়াও তার ছোট ভাই সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আব্দুল্যা চৌধুরীর ছেলে জাহিদুল ইসলাম সোহেল (৩০) এবং ছোট মেয়ে তাসনিম তাহসিন চাঁদনীকে (১৯) গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্যে, অনার্সে পড়াকালীন তাপস কমুার নামে সহপাঠীর সঙ্গে প্রেম হয় চমকের। দু’জনের সম্পর্ক সময়ের ব্যবধানে গভীর হয়। কিন্তু, পরিবার এই প্রেম মেনে নেয়নি।

এরই মধ্যে চমকের মা নিপু চিকিৎসক দেখানোর জন্য স্বামী শাহজাদ এনামুল হক হিমেলের সঙ্গে ঢাকা যান। তখন মাইজদী পৌর বাজার সংলগ্ন জয়কৃষ্ণপুর বাসায় ছিলেন তাদের দুই মেয়ে চমক ও চাঁদনী।

গত ১১ নভেম্বর রাতে ট্রেনে করে বাসায় ফেরেন নিপু। ছোট মেয়ে চাঁদনী তাকে জানায়, বিগত কয়েক দিনে চমক দিনভর তাপসের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মা চমককে মারধর করেন। এক পর্যায়ে মেঝেতে পড়ে গেলে চাঁদনীর শরীর থেকে ওড়না নিয়ে তার গলায় পেঁচিয়ে ধরেন। এতে শ্বাসরোধে চমকের মৃত্যু হয়।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার আগেই চমকের ছোট মামা সোহেলকে ডেকে এনে লাশটি ঘরের পাশের ডোবায় ফেলে দেন নিপু। ঘটনার পরের দিন ১২ নভেম্বর মা থানায় গিয়ে চমক নিখোঁজ বলে জিডি করেন। এতে তিনি উল্লেখ করেন, রেলস্টেশনে তাকে এগিয়ে আনতে গিয়েছিল চমক। কিন্তু, এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।

তবে ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসার পাশের ডোবা থেকে চমকের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই তার প্রেমিক তাপসকেও আটক করা হয়। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার তদন্তে গিয়ে পুলিশ ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত পেয়ে নিহতের মা, ভোট বোন ও মামাকে আটক করে। পরে এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের বোন চাঁদনী। তিনি বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার চাঁদনী নোয়াখালী বিচারিক আদালত-২ এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সোহেব উদ্দিন খাঁনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘নিহতের বাবা শাহজাদা এনামুল হক হিমেল বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় চাঁদনীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আর নিপু ও সোহেলের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।’