বিদেশের খবর: এবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দখল করতে চায় রাশিয়া। প্রধানত এ অঞ্চলের দোনবাস ও প্রিয়াজোভিয়া প্রদেশ দুটি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার স্বপ্ন দেখছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিন। এ অঞ্চলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে আগে থেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা করে আসছে মস্কো। রোববার কার্চ প্রণালীতে ইউক্রেনের তিনটি যুদ্ধজাহাজ দখলের পর আরও তৎপর হয়ে উঠেছে পূর্বাঞ্চলের ওই বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি অঞ্চলে অভিযান চালিয়েছে তারা। সীমান্তে যুদ্ধ প্রস্তুতি শুরু করেছে রাশিয়াও। ইউক্রেনের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম ইউনিয়নইনফো, কিয়েভ পোস্ট ও ইউক্রিনফর্মের খবরে রাশিয়ার এ আগ্রাসী পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে।
রাশিয়ায় ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কার গৌরব’ ফিরিয়ে আনতে চান পুতিন। এরই অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের উপদ্বীপ ক্রিমিয়াকে মস্কোর শাসনাধীনে আনেন তিনি। ক্রিমিয়া দখলের পর কৃষ্ণসাগর ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে এরই মধ্যে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ ও প্রভাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই প্রভাব খাটিয়ে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের দোনবাস ও প্রিয়াজভিয়া অঞ্চল দখলের ছক কষতে শুরু করেছেন পুতিন।
রুশ আগ্রাসনের আশঙ্কা করছেন ইউক্রেন কর্তৃপক্ষও। প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো রুশ হুমকির কথা বিবেচনা করে সোমবার সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক আইন (মার্শাল ল’) জারি করেছেন। একইদিন জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ডাকা জরুরি বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ভলোদিমির ইয়েলচেঙ্কো বলেছেন, ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে আগ্রাসনের স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। মস্কো এবার আজব সাগরে পূর্বাঞ্চলের মারিওপোল ও বার্দিয়ানস্ক সমুদ্রবন্দর দখল করতে চায়।’ ইতিমধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে সেনা সমাবেশ করেছে মস্কো। ৫০০টি যুদ্ধবিমান ও ৩৪০টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। রুশ সেনাবাহিনীর লড়াইয়ের ইঙ্গিত পেয়েই পূর্বাঞ্চলের দোনবাস প্রদেশে ১০টি শহরে ইউক্রেনীয় সেনা অবস্থান লক্ষ্য করে অন্তত ১৮টি হামলা চালিয়েছে মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিশেষ শাখা জয়েন্ট ফোর্সেস অপারেশন (জেএফও) জানিয়েছে, রোববার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোনবাসের ওই সব এলাকায় হামলা চালায় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। হামলার শিকার এলাকাগুলোর মধ্যে স্ট্যানিটসিয়া লুহানস্ক, মালিনোভ, ভিলনে, পিভডেন, ভারখিওতোরেস্ক, দোনেস্ক, অপিতনে, ক্রাসনোহরিভকা, পাভলোপোল, নিউতোভ, ভোদিয়ান ও সাইরোকাইন শহর রয়েছে। শহরগুলোতে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় গ্রেনেড, মেশিনগান ও ছোট ছোট যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করেছে। এছাড়া অন্তত ৮২টি মর্টার শেল ছোড়া হয়েছে।