খেলা

ইমরুলের বিশ্ব রেকর্ডের পর নিউজিল্যান্ড থামল ৫৩৯ রানে

By daily satkhira

January 15, 2017

কাল নিউজিল্যান্ড ইনিংসের প্রথম ওভারের সময় সবারই ভ্রু কুঁচকে উঠেছিল। এ কী, মুশফিকুর রহিম কোথায়? এমন একটা ম্যাচে এমন দুর্দান্ত শুরুর পর অধিনায়কের চোট পাওয়াটা দুঃখজনক। দুশ্চিন্তার কারণও, এমন ম্যাচে উইকেট কিপিংটা যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে! সেটাই হয়েছে, নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা উইকেটের পেছনেই সবচেয়ে বেশি ক্যাচ দিলেন। আর এর মধ্যে পাঁচটি ক্যাচ ধরে ইতিহাসের পাতায় চলে গেলেন ইমরুল কায়েস।

এমন নয় যে, ইমরুলকে এর আগে কিপিংয়ে দেখা যায়নি। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টের কথা মনে আছে? তামিম ইকবালকে সঙ্গী করে উদ্বোধনী জুটিতে দ্বিতীয় ইনিংসের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন ইমরুল। সেদিন এই ওপেনারের দেড় শ রানের ইনিংসটা মনে থাকবে অনেক দিন। তবে সেই ইনিংসটাই কিন্তু আড়াল করে দিচ্ছে। প্রায় দুদিন ধরে ইমরুলের আরেকটা কীর্তির কথা। পাকিস্তান ইনিংসে ১২০ ওভারেরও বেশি সময় উইকেট কিপারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই ওপেনার। সেবারও মুশফিকের চোটে বাধ্য হয়েই ফিল্ডিংয়ের সময়ও গ্লাভস হাতে নিতে হয়েছিল।

তবু কাল ইমরুলের হাতের গ্লাভস আস্থা জোগায়নি কাউকে। কারণ, কিপার হিসেবে তাঁর দাঁড়ানোটা ঠেকায় পড়ে। দলের দ্বিতীয় কিপার হিসেবে নুরুল হাসান আছেন। কিংবা অতীতে এনামুল হক কিংবা লিটন দাসদেরও বিকল্প কিপার হিসেবে ভাবা হয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটেও উইকেট কিপিংটা ইমরুলের দায়িত্বের আওতায় পড়ে না।

সেই ইমরুলই দুর্দান্ত এক ডিসমিসালে ফেরালেন বিজে ওয়াটলিংকে। ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর প্রথম বলটি খুব বাজে। লেগ স্টাম্পে একটা শর্ট বল। সে বলের ঠিকানা বাউন্ডারি হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ওয়াটলিং বলটা মিস করলেন। সে বল চলে যাচ্ছিল লেগ সাইড দিয়ে। কিন্তু আগেই আন্দাজ করতে পেরে ইমরুল দৌড়ালেন সেদিকে, তালুবন্দী করলেন সে বল।

নিউজিল্যান্ডের উইকেটকিপার আউট হলেন বাংলাদেশের বদলি কিপারের বীরত্বে। তখনো কিছু বোঝা যায়নি। কিন্তু নিল ওয়াগনারকে একের পর এক বাউন্সারে কাবু করে যখন অবশেষে সফল হলেন কামরুল ইসলাম। আর ক্যাচটা ধরলেন ইমরুল, তখনই জানা গেল ইতিহাস গড়েছেন তিনি।

বদলি উইকেট কিপার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৩ বছরের ইতিহাসে যা করতে পারেননি কেউ, সেটাই হলো এক ইনিংসে পাঁচটি ক্যাচ ধরলেন বাংলাদেশি ওপেনার। তাঁর আগে এ রেকর্ড ছিল পাকিস্তানের মাজিদ খানের। ১৯৭৭ সালে ওয়াসিম বারির বদলে কিপিং করতে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ব্যাটসম্যানের ক্যাচ ধরেছিলেন মাজিদ। এর আগে পরে অন্য কোনো বদলি কিপার তিনটির বেশি ক্যাচ ধরতে পারেননি। নিউজিল্যান্ডের টম ল্যাথাম ২০১৫ সালে লর্ডসে দুই ইনিংসেই ধরেছিলেন তিনটি করে ক্যাচ। লালা অমরনাথ, আমের মালিক, ব্রায়ান চারি ও কুশল মেন্ডিসও ইনিংসে তিনটি ক্যাচ ধরেছেন। কিপার হিসেবে নামেননি কিন্তু কিপিং করে তিনটি ক্যাচ ধরার রেকর্ড আছে কুমার সাঙ্গাকারা ও এবি ডি ভিলিয়ার্সেরও। কিন্তু এ দুজনের ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছে কিপিং দিয়েই।

ইমরুলের এমন ইতিহাসের দিনে নিউজিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত মিচেল স্যান্টনারের ৭৩ রানের ইনিংসে ভর করে অলআউট হয়েছে ৫৩৯ রানে। বাংলাদেশের লিড ৫৬ রানের। ইতিহাস ভুলে ইমরুলকে এখন আবার নামতে হচ্ছে লিড বাড়ানোর দায়িত্বে।