দেশের খবর: আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সাধারণত ভোট গ্রহণ করা হয় বিভিন্ন স্কুল-কলেজে। আর নির্বাচনী দায়িত্ব, বিশেষ করে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের নির্দেশনা দিয়েছে তাঁরা যেন নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে নির্বাচন কমিশনকে সর্বাত্মক সহায়তা করেন। এ ছাড়া নির্বাচনের ১০ দিন পর পর্যন্ত শিক্ষকদের দেশের বাইরের সব ধরনের ছুটিও বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা যায়, যারা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা তাঁদের সাধারণত প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের দেওয়া হয় সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারের দায়িত্ব। সরকারি কলেজের সব শিক্ষক এবং সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা। আর বাকি শিক্ষকরা দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদার। দেশে সরকারি কলেজে শিক্ষকসংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংখ্যা ১০ হাজার, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকসংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকসংখ্যা প্রায় পৌনে চার লাখ। সব মিলিয়ে সাড়ে আট লাখ শিক্ষক, যাঁরা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করার যোগ্য।
তবে আগামী নির্বাচনে কতসংখ্যক শিক্ষক দায়িত্ব পালন করবেন সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কোনো তথ্য শিক্ষা অধিদপ্তরগুলোর হাতে নেই। কারণ উপজেলা ও জেলাপর্যায়ের নির্বাচনী অফিস ও প্রশাসন নির্বাচনী কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরি করে থাকে।
গত ২৫ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পত্রের বরাত দিয়ে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ১৬টি দপ্তরের প্রধানকে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, সরকারি ও সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা নির্বাচনের কাজে প্রত্যক্ষভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। ভোটগ্রহণের কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনে ব্যবহৃত হবে। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব অনুবিভাগ প্রধান, অধিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থা এবং তাদের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের এসংক্রান্ত আইনের বিধান সম্পর্কে সচেতন থেকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করতে অনুরোধ করা হলো।
এ ছাড়া ২৭ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের এক নির্দেশনায় জানানো হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারী কোনো প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যবহৃত হতে পারবেন না। এ ছাড়া মাউশি অধিদপ্তর থেকে এখন দেশের বাইরে কোনো ছুটির আবেদন মঞ্জুর করা হচ্ছে না। দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ, বেড়ানো বা অন্য কোনো কাজে কোনো শিক্ষক বিদেশে যেতে চাইলে তা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
মাউশি অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ শামছুল হুদা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্বাচনসংক্রান্ত নির্দেশনা এলে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিচ্ছি। এরই মধ্যে আচরণ বিধিমালাসংক্রান্ত নির্দেশনা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে আরো এলে সেগুলোও দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের কারণে এখন শিক্ষকদের সব ধরনের ছুটিও মঞ্জুর করা হচ্ছে না। তবে অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদনগুলো মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হচ্ছে। ছুটির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এখন নির্বাচন কমিশনের হাতে।’