জাতীয়

যাচাই-বাছাই; ভোটের আগেই যাদের বিদায় ঘণ্টা বাজছে

By Daily Satkhira

December 02, 2018

রাজনীতির খবর: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা।

সাজা, ঋণ খেলাপি, অসম্পূর্ণ মনোনয়নপত্র, স্থানীয় সরকারের পদ না ছাড়া ও হলফনামায় সই না থাকাসহ নানা কারণে রোববার এসব প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘোষণা দেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

মনোনয়নপত্র বাতিলের তালিকায় রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্শেদ খান, জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যরিস্টার আমিনুল হক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার নাজমুল হুদা, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারের নাম।

তবে মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ রয়েছে সোমবার থেকে তিন দিন। যারা আপিলে প্রার্থিতা ফিরে পাবেন তারা ভোটে অংশ নিতে পারবেন। আগামী ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বরের ইসি এসব আপিল নিস্পত্তি করবে। এরপরই বলা যাবে কতজন প্রার্থী থাকবেন এবারের নির্বাচনে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্যানুযায়ী, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের তিন হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। রোববার বাছাইয়ে বাতিল হয়েছে ৭৮৬টি। বাকি দুই হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। সারাদেশে ৬৬টি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতিতে বাছাই করা হয়।

সারা দেশে মনোনয়নপত্র বাতিল হালো যাদের

চট্টগ্রাম: আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামে যেসব আসনে হেভিওয়েট প্রার্থীদের ঘিরে জয়ের স্বপ্ন দেখছিল বিএনপি, তাদের অনেকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। বিশেষ করে এখানকার পাঁচটি আসনে চারজন প্রভাবশালী নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় হতাশ বিএনপি নেতাকর্মীরা।

মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া প্রার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এম মোরশেদ খান, চট্টগ্রাম-৫ (হাটজারী) আসনে সাবেক বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) ও চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি হওয়া বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কারাবন্দি লায়ন আসলাম চৌধুরী। ব্যাংক ঋণ, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ও মামলার কারণে বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন সংশ্নিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার-২ আসনে জাপার মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ, স্বতন্ত্র স্বতন্ত্র আবু বকর সিদ্দিক, কপবাজার-৩-এ স্বতন্ত্র নজিবুল ইসলাম, কপবাজার-৪-এ স্বতন্ত্র বিএনপি নেতা গফুর উদ্দিন চৌধুরী বাদ পড়েছেন।

লক্ষ্মীপুর-১ আসনের বর্তমান সাংসদ জাকের পার্টির লায়ন এমএ আউয়াল, স্বতন্ত্র মাহাবুল আলম, লক্ষ্মীপুর-২-এ উপজেলা জামায়াতের আমির স্বতন্ত্র রুহুল আমিন ভূইয়া, স্বতন্ত্র ফয়েজ ভূঁইয়া, লক্ষীপুর-৪ আসনে বিএনপির আবদুল মতিন চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলনের খালেদ সাইফুল্লাহ বাদ পড়েছেন।

রাঙ্গামাটি: স্বতন্ত্র প্রার্থী আশীষ দাশগুপ্ত ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা অমর কুমার দের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়ে গেছে।

বান্দরবান: এ আসনে ছয়জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন- আওয়ামী লীগের লক্ষ্মীপদ দাশ। বিএনপির মাম্যাচিং মার্মা, উম্মে কুলসুম সুলতানা লীনা, স্বতন্ত্র মানবাধিকার নেত্রী ও বোমাং রাজ পরিবারের সদস্য ডনাই প্রু নেলী, নাথান লালচে বম, ইসলামিক ঐক্যজোটের বাবুল হোসেন।

খাগড়াছড়ি: জমা দেওয়া ১১ জনের মধ্যে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে পাঁচজনের। তারা হলেন- সাবেক সাংসদ ও জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি সমীর দত্ত চাকমা, সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা, ইউপিডিএফের সাচিব চাকমা ও নতুন কুমার চাকমা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : জেলার ৬টি আসনে ৪০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিএনএফের মঞ্জু মিয়া,

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপির আখতার হোসেন, আবু আসিফ আহমেদ, স্বতন্ত্র গিয়াস উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন, মুখলেছুর রহমান, সৈয়দ তানবীর হোসেন, আনিছুর রহমান, শাহজাহান আলম সাজু, ছফিউল্লাহ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহিউদ্দিন মোল্লা ও গণফোরামের শাহ মফিজ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এর মধ্যে জাপার অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হেলাল, ইসলামী আন্দোলনের সৈয়দ আনোয়ার আহম্মদ লিটন, গণফোরামের তারিকুর রউফ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বিএনএফের সৈয়দ মাহমুদুল আক্কাস, স্বতন্ত্র বশির উল্লাহ জরু, ওমর ইউসুফ খান, মো. মাঈনুদ্দিন, আবু হানিফ ও জামাল রানা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনে বিএনপির মুশফিকুর রহমান, মুসলিম উদ্দিন, এনপিপির দোলোয়ার হোসেন, স্বতন্ত্র ফেরদৌস আক্তার, আহমেদ শাহ মোরশেদ শাহীন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫-এ বিএনপির কাজী নাজমুল হোসেন, আওয়ামী লীগের একেএম মমিনুল হক সাঈদ, জাপার মামুনুর রশিদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা মেহেদী হাসান, স্বতন্ত্র সাঈদুল হক সাঈদ, নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে বিএনপির আবদুল খালেক, অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম সিকদার, জাপার জেসমিন নূর বেবী, জেএসডির কেএম জাবির ও স্বতন্ত্র কবির হোসেন বাদ পড়েছেন।

ফেন : ফেনীর তিনটি আসনে সাতজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন- ফেনী-১ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্বতন্ত্র মিজানুর রহমান, বিএনপির নূর আহম্মদ মজুমদার, আবুল বাশার চৌধুরী, ফেনী-৩ আসনে বিএনপির আবদুল লতিফ জনি, স্বতন্ত্র আহসান আহমেদ ও আনোয়ার করিম রিন্টু আনোয়ার।

কুমিল্লা: জেলার ১১টি আসনের ১০টিতে মোট ৩৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। কুমিল্লা-১ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের আলতাফ হোসাইন, ইসলামী আন্দোলনের বাশির আহমেদ, জাপার সৈয়দ ইফতেকার আহসান, কুমিল্লা-২ আসনে স্বতন্ত্র আবদুল মজিদ, মনোয়ার হোসেন, রবিউল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন, জাসদের বড়ূয়া মনোজিত ধীমন, কুমিল্লা-৩-এ স্বতন্ত্র জাহাঙ্গীর আলম সরকার, আহসানুল আলম কিশোর, বিএনপির কেএম মজিবুল হক, কাজী জুন্নুন বসরী, দেলোয়ার হোসেন, গোলাম কিবরিয়া, এনপিপির নজরুল ইসলাম, মুসলিম লীগের সৈয়দ মোস্তাক আহমেদ, জাগপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, গণফোরামের আকবর আমিন বাবুল, কুমিল্লা-৪-এ স্বতন্ত্র আবুল কালাম আজাদ, রেজভিউল আহসান মুন্সী, ইরফানুল হক সরকার, মাহবুবুল আলম, বিএনপির রুহুল আমিন, কুমিল্লা-৫-এ বিএনপি মো. ইউনুস, স্বতন্ত্র আবুল কালাম ইদ্রিস, গণফোরামের শেখ আবদুল বাতেন, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. শাহ আলম, কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপির সৈয়দ গোলাম মহিউদ্দিন, কুমিল্লা-৮-এ স্বতন্ত্র কায়সার আলম সেলিম, কুমিল্লা-৯-এ স্বতন্ত্র ইসমাইল, ফয়েজ উল্লাহ, এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, কুমিল্লা-১০-এ বিএনপির আবদুল গফুর ভূঁইয়া, মুসলীম লীগের আবুল কালাম আজাদ, স্বতন্ত্র রুহুল আমিন চৌধুরী, কুমিল্লা-১১-এ জকের পার্টির তাজুল ইসলাম বাবুল।

চাঁদপুর: জেলার ৫টি আসনে ৫৯ জনের মধ্যে বাদ পড়েছেন আটজন। চাঁদপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র খন্দকার মোশারফ হোসেন, চাঁদপুর-২-এ স্বতন্ত্র খায়রুল হাসান, চাঁদপুর-৪-এ স্বতন্ত্র লায়ন হারুনুর রশিদ, আবুল কালাম আজাদ, আবু জাফর মো. সালেহ, বিএনপির রিয়াদ উদ্দিন নসু, চাঁদপুর-৫-এ এলডিপির ড. নেয়ামুল বশির ও জাপার খোরশেদ আলম খুশু বাদ পড়েছেন।

সিলেট: পাঁচ বছর আগে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে সিলেট-৫ আসনের এমপি, পরে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের হুইপ হয়েছিলেন জাপার সেলিম উদ্দিন। এবারে নিজের এলাকার সিলেট-৬ আসনে প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। এজন্য জাপার প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র হিসেবেও এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হলফনামায় স্বাক্ষর না করায় দু’টি আসনে জমা দেওয়া তার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল হয়েছে।

হবিগঞ্জ-১ আসনে আওয়ামী লীগের আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী ভোট যুদ্ধে নামার আগে দু’দফা আশাহত হলেন। বর্তমানে সংরক্ষিত আসরে এমপি কেয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েও ব্যর্থ হন। এ অবস্থায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় স্বাক্ষর করতে ভুলে যান তিনি। গতকাল বাছাইকালে সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে ৪৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে; যার মধ্যে কেয়া চৌধুরীও রয়েছেন।

সিলেট বিভাগের আরেক আলোচিত প্রার্থী ড. রেজা কিবরিয়ার নির্বাচনের স্বপ্নও হোঁচট খেয়েছে। আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে সম্প্রতি গণফোরামে যোগ দিয়েছিলেন ভোটযুদ্ধে নামার জন্য। হবিগঞ্জ-১ আসনে তিনি ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করতে চাইলেও সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা ঋণ খেলাপি হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এক বিবৃতিতে ড. রেজা দাবি করেন, দীর্ঘদিন দেশের বাইরে কর্মরত থাকায় তিনি যথাসময়ে বিলটি পরিশোধ করতে পারেননি। তবে ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন।

সারাদেশের মতো মনোনয়নপত্র বাছাইকালে বাতিলের আশঙ্কায় সিলেট বিভাগে সিংহভাগ আসনে একাধিক প্রার্থী দিয়েছিল বিএনপি। পুরো বিভাগে বিএনপির ৩৬ জন দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন, সিলেট-৩ আসনে আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, মৌলভীবাজার-১ আসনে এবাদুর রহমান চৌধুরী, সুনামগঞ্জ-১ আসনে কামরুজ্জামান কামরুল, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন ও হবিগঞ্জ-২ আসনে জাকির হোসেন।

দুটি আসনে সেলিম উদ্দিনের তিনটি মনোনয়নের পাশাপাশি জাতীয় পার্টির আরও তিনজন নেতা বাছাইয়ে বাদ পড়েছেন। তারা হলেন, সিলেট-৪ আসনে এম ইসমাইল আলী আশিক, মৌলভীবাজার-২ আসনে মুহিবুল কাদির চৌধুরী পিন্টু ও সুনামগঞ্জ-২ আসনে রুহুল আমীন। পুরো বিভাগে সর্বোচ্চ ১৯ জন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মৌলভীবাজার-১ আসনে স্বতন্ত্র হওয়া জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

ঢাকা মহানগর: বিএনপির নেতা মির্জা আব্বাসের স্ত্রী ও ঢাকা-৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী সেলিম ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে।

রাজশাহী : রাজশাহীর ছয়টি আসনে ২৩ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। মামলার তথ্য গোপন করায় রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে বিএনপির সহসভাপতি ব্যারিস্টার আমিনুল হকের। তবে তার স্ত্রী আভা হকের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই আসনে আরও যাদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন- জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মজিবুর রহমান, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী সালাহ উদ্দীন, শহিদুল করিম শিবলী, সুজা উদ্দীন, সাইদুর রহমান ও আলফাজ হোসেন(বাসদ)।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাসুদ রানা ও পিপলস পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে পাঁচ জনের। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মন্টু, নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাচ্চু, স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মাজেদুর রহমান, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ মেরাজ মোল্লা ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আতিকুর রহমান।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে মামলার তথ্য গোপন করায় প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল গফুর ও যুক্তফ্রন্ট্রের প্রার্থী সিরাজুল করিমের। রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে চারজনের। মামলার তথ্য গোপন ও ঋণ খেলাপি হওয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নাদিম মোস্তফা, বিএনপি মহাসচিবের স্বাক্ষর না মেলায় আবু বকর সিদ্দিক, দলীয় মনোনয়ন না থাকায় ওবায়দুর রহমান এবং চাকরি করায় ইসলামী আন্দোলনের রুহুল আমিনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে বিএনপির আবু সাঈদ চাঁদ ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগের আব্দুর রাজ্জাকের।

নওগাঁ: জেলার ৬টি আসনের বিপরীতে মোট ৪৮ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তাদের মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র নজমুল হক সনিসহ নয়জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর-পোরশা-সাপাহার) আসনে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে এলডিপির আবু হেনা মোস্তাফা কামালের।

নওগাঁ-২ (পত্নীতলা ও ধামইরহাট) আসনে সাতজনের মধ্যে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী আখতারুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মতিবুল ইসলাম, বিকল্পধারার আব্দুর রউফ মান্নান। নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আব্দুর রাকিব ও স্বতন্ত্র আরেক প্রার্থী আফজাল হোসেনের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে বিএনপির নজমুল হক সনির, জাপার ইফতারুল ইসলাম বকুলের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। নওগাঁ-৬ (রাণীনগর-আত্রাই) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন হেলালের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

নাটোর : দু’টি ফৌজদারী মামলায় দণ্ডিত হওয়ায় নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনে বিএনপি প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনে ঋণ খেলাপির আভিযোগী জাপার আলাউদ্দিন মৃধা, স্বাক্ষর না থাকায় জাসদ (ইনু) প্রার্থী ডিএম রনি পারভেজ আলমগীর, মুসলিম লীগ প্রার্থী শান্তি রিবেরু ও স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া স্বাক্ষর না থাকায় নাটোর-১ (লালপুর-বাগতিপাড়া) আসনে সাম্যবাদী দলের বিরেন সাহার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ সহ প্রতিদ্বন্দ্বি ৭ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বৈধ ঘোষনা করা হয়েছে। এই আসনে বৈধ অপর প্রার্থীরা হলেন বিএনপির আনোয়ারল্ফম্নল ইসলাম আনু ও দাউদার মাহমুদ, ওয়াকাস পাটির মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শাহ মোস্টত্মফা ওয়ালী উলস্নহ, বিকল্পধারা মুঞ্জুরল্ফম্নল আলম হাসু ও জাতীয়পাটি আনিছুর রহমান।

এছাড়া বাছাই শেষে নাটোর-১ (লালপুর-বাগাতিপাড়া) আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের শহিদুল ইসলাম বকুল, আওয়ামীলীগের অপর প্রার্থী কর্নেল (অবঃ) রমজান আলী, বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী মরহুম ফজলুর রহমান পটলের স্ত্রী অধ্যক্ষ কামরল্ফম্নন্নাহার শিরিন, বিএনপির অপর প্রার্থী তাইফুল ইসলাম টিপু, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রার্থী মনজুরল্ফম্নল ইসলাম বিমল, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য এম.এ তালহা, ওয়ার্কার্স পাটির্র প্রার্থী অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল, বাংলাদেশের বিপস্নবী ওয়ার্কার্স পার্টি প্রার্থী আনছার আলী দুলাল, জাসদ (ইনু) প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের আলহাজ্ব মুহাম্মাদ খালেকুজ্জামান। নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা ) আসনে বৈধ প্রার্থী হলেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি,বিএনপির প্রার্থী দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবি,জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান সেন্টু এবং ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের আজিজার খান চৌধুরী আমেল। নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনে বাছাই শেষে যারা বৈধ হয়েছে তারা হলেন আওয়ামীলীগের অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি, বিএনপির আব্দুল আজিজ, সাবেক সাংসদ মোজাম্মেল হক ও অ্যাডভোকেট জন গমেজ, ন্যাপের হারল্ফম্নন-অর-রশিদ, কৃষক শ্রমিক জনতালীগের মুন্সি শহিদুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলনের বদরল্ফম্নল আমিন, এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াতের আব্দুল হাকিম।

বাছাইয়ে তিনটি আসনের ৬ জন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হওয়ায় নাটোরের চারটি আসনে বর্তমানে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২৯ জন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র শামসুল হোদা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল-গোমস্তাপুর-ভোলাহাট) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, খুরসেদ আলম বাচ্চু, তৈয়ব আলী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা ইয়াহিয়া খালেদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।

পাবনা : পাবনা-৫ আসনে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ডা. মো. ইসমাইল হোসেন, পাবনা -১ আসনে বিএনপির মো. সালাহ উদ্দিন খান, পাবনা-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা হাসানুল ইসলাম রাজা, বিএনপির হাসাদুল ইসলাম হীরা বাদ পড়েছেন।

খুলনা : খুলনা বিভাগের ৩৬টি আসনে মোট ৯০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আদালতের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায়, ঋণখেলাপি, মনোনয়নপত্রে ত্রুটিসহ বিভিন্ন কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন সংশ্নিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। খুলনার ৬টি আসনে ৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তারা হলেন খুলনা-২ আসনে জাপার এরশাদুজ্জামান ডলার, খুলনা-৬ আসনে বিএনপির শফিকুল আলম মনা, স্বতন্ত্র সুব্রত কুমার বাইন ও আবদুল কাদের।

মেহেরপুর : মেহেরপুরের দু’টি আসনে ১০ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ অধ্যাপক আবদুল মান্নান, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মিয়াজান আলী, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইয়ারুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান, বিএনপি নেতা আবদুর রহামানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। মেহেরপুর-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন না থাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেক, আওয়ামী লীগ নেতা মখলেছুর রহমান মুকুল, আহম্মেদ আলী, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন, জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নুরজাহান বেগমনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

মাগুরা : মাগুরার দু’টি আসনে ৪ প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। মাগুরা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী কুতুব উল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি ও অ্যাডভোকেট কাজী রেজাউল হোসেন এবং গণফোরামের ডা. মিজানুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। মাগুরা-২ আসনে বাতিল হয়েছে বিএনপির বিকল্প প্রার্থী মেহেদী আল মাসুদের মনোনয়নপত্র।

কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের দলীয় মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়ায় সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফাজ উদ্দিন আহমেদ, মুসলীম লীগের আবদুল খালেক সরকার ও জাসদের (বাদল-আম্বিয়া) অধ্যক্ষ রেজাউল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনে জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল গফুর ও বশির আহম্মেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না থাকায় বর্তমান সাংসদ আবদুর রউফ, ঋণখেলাপী হওয়ায় জাসদের (ইনু) রোকনুজ্জামানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এনপিপির তাছির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র মেহেদী হাসান মাসুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে স্বাক্ষর না মেলায়।

সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা-১ আসনে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন না থাকায় আওয়ামী লীগ নেতা বিএম নজরুল ইসলাম, ঋণ খেলাপি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বজিত সাধু, স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মুজিবুর রহমান, নুরল্ফম্নল ইসলাম এবং ন্যাপের হায়দার আলীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সাতক্ষীরা-২ আসনে জেএসডির আফসার আলীর, সাতক্ষীরা-৪ আসনে স্বতন্ত্র খলিলুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

নড়াইল : নড়াইল-১ আসনে স্বতন্ত্র সিকদার মো. শাহাদত হোসেন দুলু, লে. কমান্ডার (অব.) ওমর আলী ও প্রকৌশলী শেখ মিজানুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। নড়াইল-২ আসনে সাবেক এমপি মুফতি শহিদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুফতি তালহা ইসলাম, ফকির শওকত আলী, জামাল উদ্দীন ও মনির হোসাইনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

বাগেরহাট : বাগেরহাটের ৪টি আসনে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঋণখেলাপির অভিযোগে বাগেরহাট-১ আসনের জাপার আহমেদ জোবায়ের, বাগেরহাট-২ আসনের শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ও বাগেরহাট-৪ আসনে এনপিপির প্রার্থী আমিনুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা : চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মুসলীগ লীগ প্রার্থী মেরিনা আকতার, জাকের পার্টির আলমাস হোসেন, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন ও স্বতন্ত্র নূর হাকিমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের ৪টি আসনে মোট ১৫ জনের মনোনায়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ঝিনাইদহ-১ আসনে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবদুল ওহাব ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু বকর, ঝিনাইদহ-২ আসনে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল হক, বিএনপির জেলা সভাপতি ও সাবেক এমপি মসিউর রহমান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মজিদ, জাকের পার্টির জেলা সভাপতি আবু তালেব সেলিম, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ পারভেজ এবং বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মীর রবিউল ইসলাম লাভলুর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঝিনাইদহ-৩ আসনে জাপার ব্যারিস্টার কামরুজ্জামান স্বাধীন, স্বতন্ত্র নাজমুল হুদা, বিএনএফের ইঞ্জিনিয়ার ইসমাইল হোসেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনে বাম জোটের ফনি ভূষণ রায়, বিএনএফের ওয়াদুদুর রহমান, এনপিপির কামরুল হাসান, স্বতন্ত্র জহরল্ফম্নল ইসলাম এবং কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি আবদুল মান্নানের মনোনায়নপত্র বাতিল হয়েছে।

যশোর : যশোরের ছয়টি আসনে ২৬টি মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। যশোর-১ (শার্শা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মওলানা আজীজুর রহমান, জাকের পার্টির সাজেদুর রহমান ডাবলু, যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে বিএনপির সাবিরা নাজমুল মুন্নি, স্বতন্ত্র এবিএম আহসানুল হক, জাপার মুক্তি ফিরোজ শাহ্‌, ইসলামি ঐক্যজোটের শহিদুল ইসলাম ইনসাফি, গণফোরামের মেজর (অব.) আসাদুজ্জামান, বিএনএফের আব্দুল্লাহ্‌ আল মাসুদ ও জাকের পার্টির মহিদুল ইসলাম, যশোর-৩ (সদর) আসনে ইসলামি আন্দোলনের মফিজুল আলম, বিএনএফের প্রশান্ত বিশ্বাস, জেএসডির সৈয়দ বিপ্লব আজাদ, যুক্তফ্রন্টের মারুফ হাসান কাজল, দলীয় স্বীকৃতি না থাকায় আওয়ামী লীগ নেতা শাহিন চাকলাদার, যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনে সাইফুদ্দিন আল-আজাদ নয়ন, যুক্তফ্রন্টের নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, ন্যাপের (ভাসানী) মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও জাকের পার্টির লিটন মোল্যা, যশোর-৫ আসনে বিএনপির আবু মুসা, ইসলামি আন্দোলনের ইবাদুল ইসলাম খালাসী, জাগপার নিজাম উদ্দিন অমিত, স্বতন্ত্র প্রর্থী আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান বারী, যশোর-৬ আসনে জাকের পার্টির শেখ শাহিদুজ্জামান, বিএনএফের প্রশান্ত বিশ্বাস, স্বতন্ত্র নুরুল ইসলাম খোকন ও দলীয় টিকিট না থাকায় আওয়ামী লীগের শাহিন চাকলাদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

রংপুর : রংপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া ৬০ প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করেছে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর মধ্যে বিএনপির তিন, জাপার এক, স্বতন্ত্র পাঁচ, জাসদের এক, মুসলীম লীগের এক ও ইসলামী আন্দোলনের একটি রয়েছে। রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু, স্বতন্ত্র আলী মো. আলমগীর ও সিএম সাদিক বাদ পড়েছেন। রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে বাদ পগেছেন স্বতন্ত্র আওয়ামী লীগ নেতা বিশ্বনাথ সরকার বিটু ও জাসদের কুমারেশ রায়। রংপুর-৩ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র হাবীব সরকার ফুলু ও নাজমুল হক বাদ পড়েছেন। রংপুর-৪ (পীরগাছা-কাউনিয়া) আসনে জাপার মোস্তফা সেলিম বেঙ্গল ও বিএনপির আমিনুল ইসলাম রাঙ্গা বাদ পড়েছেন। রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) বাদ পড়েছেন বিএনপির শাহ মো. সোলায়মান আলম ফকির, ডা. মমতাজ হোসেন, স্বতন্ত্র আব্দুল হালিম মণ্ডল ও মুসলীগ লীগের মওদুদা আক্তার। রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে ইসলামী আন্দোলনের বেলাল হোসেনের। পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ের দুটি আসনে বিএনপির তৌহিদুল ইসলাম ও ফরহাদ হোসেন আজাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

লালমনিরহাট : জেলার ৩টি আসনে পাঁচজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন- লালমনিরহাট-১ আসন থেকে জামায়াত নেতা এরশাদ হোসেন সাজু (স্বতন্ত্র), হাবিব মো. ফারুক (স্বতন্ত্র), লালমনিরহাট- ২ আসন বিএনপির জাহাঙ্গীর আলম, লালমনিরহাট-৩ আসনে মাহবুবুল আলম মিঠু (স্বতন্ত্র ) ও শামিম ইশতিয়াক (স্বতন্ত্র)।

কুড়িগ্রাম :কুড়িগ্রামের ৪টি আসনে ৫৭ জনের মধ্যে ১৯ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। কুড়িগ্রাম-৪ আসনে আওয়ামী লীগের জাকির হোসেন, গণফোরামের মাহফুজার রহমান, কুড়িগ্রাম-৩ আসনে বিএনপির আব্দুল খালেকসহ তিনজন বাদ পড়েছেন।

ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁও ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জাকের পার্টির আল মামুন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে স্বতন্ত্র গোপাল চন্দ্র রায়, আব্দুল জলিল, রাজেন্দ্র নাথ রায় ও বিকল্পধারার খলিলুর রহমান সরকার বাদ পড়েছেন।

গাইবান্ধা :জেলার ৫টি আসনে ৭৪ জনের মধ্যে ১৬ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে আব্দুর রাজ্জাক সরকার (জেএসডি), স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে এবিএম মিজানুর রহমান, জয়নাল আবেদিন, আব্দুর রহমান, আফরুজা বারী ও এমদাদুল হক নাদিম বাদ পড়েছেন। গাইবান্ধা-২ (সদর) আসনে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম রেজাউল কবীর, মকদুবর রহমান সরকার ও ওয়াহেদ মুরাদ বাদ পড়েছেন। গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে বিএনপির রফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র তৌফিকুল আমিন মণ্ডল টিটু, আমিনুল ইসলাম দুদু, আবু জাফর মো. জাহিদ ও মঞ্জুরুল হক বাদ পড়েছেন। গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা ডা. আব্দুর রহিম, গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে বিএনপির নাজেমুল ইসলাম প্রধান সরকার নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছেন। দিনাজপুর :দিনাজপুর-১ আসন স্বতন্ত্র রঞ্জিত মুরমু, পারভেজ হোসেন, বিএনপির মোহাম্মদ হানিফ, মামুনুর রশিদ চৌধুরী, দিনাজপুর-২ আসনে আওয়ামী লীগের মানবেন্দ্র রায়, স্বতন্ত্র মোকাররম হোসেন, দিনাজপুর-৩-এ বিএনপির সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র রাইসুল ইসলাম, দিনাজপুর-৪-এ স্বতন্ত্র ইউসুফ আলী, দিনাজপুর-৬-এ বিএনপির শাহিনুর ইসলাম, স্বতন্ত্র আতাউর রহমান বাদ পড়েছেন।

নীলফামারী : জেলার চারটি আসনে ৪৫ জনের মধ্যে ১৯ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। নীলফামারী-১ (ডোমার ডিমলা) আসনে আওয়ামী লীগের আমিনুল হোসেন সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা আব্দুস সাত্তার, বিএনপির এ আহমেদ বাকের বিল্লাহ মুন, স্বতন্ত্র মখদুম আজম মাশরাফি, নীলফামারী-২ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র এজানুর রহমান, নীলফামারী-৩ (জলঢাকা) আসনে জাপার বাদশা আলমগীর, জাসদের গোলাম পাশা এলিচ, স্বতন্ত্র আনছার আলী মিন্টু, আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর, গণফ্রন্টের, মোজাম্মেল হক, বিএনপির ফাহমিদ ফয়সাল চৌধুরী কমেট, নীলফামারী-৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনে বিএনপির আমজাদ হোসেন সরকার ভজে, স্বতন্ত্র সিকান্দার আলী, আখতার হোসেন বাদল, আমিনুল ইসলাম সরকার, আমেনা কোহিনুর, ফরহাদ হোসেন সম্রাট, মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজ ও জাপার রশিদুল ইসলাম বাদ পড়েছেন।

ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ১১টি আসনে ১১৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩৫ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে- ময়মনসিংহ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, ময়মনসিংহ-২ আসনে বিএনপির আবুল বাসার আকন্দ, জাপার এমদাদুল হক, স্বতন্ত্র আবু বকর, ময়মনসিংহ-৩-এ স্বতন্ত্র ডা. মতিউর রহমান, একেএম আব্দুর রফিক, আলী আহম্মদ খান পাঠান সেলভী, নাজনীন আলম, শরীফ হাসান অনু, ড. সামিউল আলম লিটন, মোর্শেদুজ্জামান সেলিম, গোলাম মোস্টত্মফা বাবুল, বিএনপির আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ, ন্যাপের আব্দুল মতিন মাস্টার, ময়মনসিংহ-৪-এ বিএনপির কামরুল ইসলাম মো. ওয়ালিদ, এনডিএর আবু সায়িদ মহিউদ্দিন আহমদ, ময়মনসিংহ-৫ আসনে জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সোহেল মিয়া, খেলাফত মজলিসের আমজাদ হোসেন, ময়মনসিংহ-৬-এ জেএসডির চৌধুরী মোহাম্মদ ইসহাক, ময়মনসিংহ-৭-এ বিএনপির জয়নাল আবেদীন, স্বতন্ত্র আব্দুর রাজ্জাক রাজ, ময়মনসিংহ-৮-এ বিএনপির রুহুল আমিন মাস্টার, স্বতন্ত্র মাহমুদ হাসান সুমন, এলডিপির আবুল বাসার, ময়মনসিংহ-৯ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আলমগীর কবির উজ্জ্বল খান, স্বতন্ত্র আব্দুল কাদির, মো. শহিদুল্লাহ, ময়মনসিংহ-১০ আসনে স্বতন্ত্র ওবায়দুল্লাহ আনোয়ার বুলবুল, জাপার কারি হাবিবুল্লাহ বেলালী, মজিবর রহমান এবং ময়মনসিংহ-১১ আসনে স্বতন্ত্র আশরাফুল হক জর্জ ও ইসলামী আন্দোলনের অ্যাডভোকেট আমানউল্লাহ সরকার। বিএনপি নেতা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের মনোনয়নপত্র বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। পরে রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

নেত্রকোনা : জেলার ৫টি আসনে ৪৩ জনের মধ্যে সাবেক ১২ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তারা হলেন- নেত্রকোনা-১ আসনে সাবেক এলডিপির এমএ করিম আব্বাসী, স্বতন্ত্র এরশাদুর রহমান, মুসলিম লীগের নজরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিশের আবদুল কাইয়ুম খান, স্বতন্ত্র শাহ কুতুব উদ্দিন তালুকদার, জাকের পার্টির মোস্তফা জামান আব্বাস, নেত্রকোনা-২-এ জাপার রহিমা আক্তার ওরফে আসমা সুলতানা, স্বতন্ত্র এজাজুল হক, নেত্রকোনা-৪-এ স্বতন্ত্র শফি আহমেদ, নেত্রকোনা-৫ আসনে বিএনপির রাবেয়া খাতুন, আবু তাহের তালুকদার, স্বতন্ত্র জাকির হোসেন তালুকদার।

জামালপুর : জামালপুর-১ আসনে সাবেক এমপি বিএনপি প্রার্থী এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, জামালপুর-৪ আসনে একই দলের ফরিদুল কবীর তালুকদার, বর্তমান সাংসদ জাপা প্রার্থী মামুনুর রশীদ জোয়ার্দার, জামালপুর-৩-এ বিকল্পধারার মাসুম বিল্লাহ, স্বতন্ত্র শফিকুল ইসলাম, ঐক্যফন্টের নঈম জাহাঙ্গীর, জামালপুর-৫ আসনে স্বতন্ত্র কাজী নজরুল ইসলাম ও ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী বাদ পড়েছেন।

শেরপুর : জেলার ৩টি আসনে ২২ জনের মধ্যে সাতজনের মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। ঋণখেলাপি হওয়া শেরপুর-১ আসনে বিএনপির হযরত আলী, একই দলের শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ফজলুল কাদের লুটু, শেরপুর-২-এ বিএনপির একেএম মোখলেছুর রহমান রিপন, শেরপুর-৩ আসনে স্বতন্ত্র সোহরাওয়ার্দী বাহাদুর, ইন্তাজ আলী ভূঁইয়া ও পিডিপির আবু বকর সিদ্দিকী বাদ পড়েছেন।