রাজনীতির খবর: দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা নির্বাচন করছেন, তাদের বিষয়ে কঠোর নীতি গ্রহণ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে দলটির নতুন মিশন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গঠিত ‘বিশেষ টিম’ এই দায়িত্ব পালন করবে। সোমবার থেকে টিমের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হয়েছে। ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিদ্রোহী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের কাজ করবে এই টিম। এরই মধ্যে ফোনে বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে ‘থ্রেড’ করা হয়েছে। কেন্দ্রে ডাকা হয়েছে কয়েকজনকে। টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক নেতা সোমবার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মনোনয়নবঞ্চিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় চার নেতাকে বিশেষ এই টিমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন। টিমের অন্য সদস্যরা হলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বিএম মোজাম্মেল হক। শনিবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি তাদের এই দায়িত্ব দেন।
জানতে চাইলে টিমের অন্যতম সদস্য বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজ শুরু করেছি। এরই মধ্যে যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী এখনও নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন, তাদের অনেককেই ফোন করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং না করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থার কথা জানিয়ে দিয়েছি। অনেকেই প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের। আমরা আশা করছি, ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বিদ্রোহী প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা যায়, ৩০০ আসনে দলীয় ও মহাজোটের প্রার্থীর দুর্বলতার কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধান করতে কাজ করবে বিশেষ টিম। প্রার্থী বাছাইয়ের পরও কোন কোন আসনে বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন, তা বের করে বুঝিয়ে-শুনিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কাজটিও করতে হবে টিমকে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী সফরের সময়সূচি তৈরির কাজ করছেন টিমের সদস্যরা। সোমবার সন্ধ্যায় ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী দমনে কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশনা, বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণ ও প্রত্যাহারের সমাধান নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনে করে একক প্রার্থী নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী জোর নির্দেশ দিয়েছেন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে অনেক আসনে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হন, সেটি আলোচনায় ওঠে আসে।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, সারা দেশে কোন কোন আসনে কতজন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন, তার একটি তালিকা করছে দলটি। সেই তালিকা ধরে আজ থেকে কাজ শুরু করবেন টিমের সদস্যরা। এরই মধ্যে কয়েকজনকে ফোন করে কেন্দ্রের কঠোর নির্দেশ ‘আজীবন বহিষ্কার’ জানিয়ে দেয়া হয়েছে। কয়েকজনকে ঢাকায় ডাকা হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে কেন্দ্রের বার্তা নিয়ে পাঠানো হয়েছে। আজও পাঠানোর কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের এক নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, প্রভাবশালী অনেক নেতা যারা দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় আছেন, তাদের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। নির্বাচনের পর পদ-পদবি কিংবা সরকারে বিশেষ সুবিধার প্রতিশ্র“তিও থাকছে তাদের জন্য।