জাতীয়

ভিকারুননিসার ছাত্রী আত্মহত্যার ঘটনা হৃদয় বিদারক: হাইকোর্ট

By Daily Satkhira

December 04, 2018

দেশের খবর: ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রধান শাখার শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর (১৫) আত্মহত্যার ঘটনাকে হৃদয় বিদারক বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মেয়ের সামনে বাবা-মাকে অপমান করা বাজে ঘটনার দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেছেন আদালত।

বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত অরিত্রির আত্মহত্যা সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনা হয় মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর)। এরপর বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনগুলো আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সাইয়েদুল হক সুমন। শুনানিকালে তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।’

তখন আদালত বলেন, ‘অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা খুবই হৃদয় বিদারক। শিক্ষার্থীর সামনে বাবা-মাকে অপমানের ঘটনাকে বাজে রকমের দৃষ্টান্ত।’

পরে আদালত আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট দায়ের করেন। আমরা বিষয়টি দেখবো।’

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের প্রধান শাখার ইংলিশ ভার্সনের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিল অরিত্রি। তার বাবা দিলীপ অধিকারী। দুই মেয়ে অরিত্রি, ঐন্দ্রীলা ও স্ত্রী বিউটিকে নিয়ে শান্তিনগরের একটি বাসায় থাকেন। তিনি কাস্টমসের সিএন্ডএফ-এর ব্যবসা করেন। ছোট মেয়ে ঐন্দ্রীলাও একই স্কুলের শিক্ষার্থী। অরিত্রির বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। ২ ডিসেম্বর অরিত্রির ইতিহাস পরীক্ষা ছিল। স্কুলে মোবাইল নেওয়া নিষেধ থাকা সত্ত্বেও অরিত্রি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরে মোবাইলটি দেখতে পেয়ে শিক্ষকরা তা জব্দ করে এবং অরিত্রিকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেয়।

৩ ডিসেম্বর সকালে পরীক্ষা দেওয়ার জন্য স্কুলে যায় অরিত্রি। কিন্তু তাকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দিয়ে তার বাবা ও মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। তখন অরিত্রির বাবা ও মা স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপালের কক্ষে যান। ভাইস প্রিন্সিপাল বলেন, ‘মোবাইলে অরিত্রি নকল করছিল।’ এ ঘটনায় অরিত্রির বাবা-মা ক্ষমা চাইলে তাদের প্রিন্সিপালের কক্ষে পাঠানো হয়। প্রিন্সিপালের কক্ষে গিয়েও তারা ক্ষমা চান। কিন্তু প্রিন্সিপাল সদয় হননি। একপর্যায়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চান তারা। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাদের বেরিয়ে যেতে বলেন এবং অরিত্রিকে টিসি (ছাড়পত্র) দেওয়ারও মোখিত নির্দেশ দেন। এরপর স্কুল থেকে বের হয়ে অরিত্রির বাবা ও মেয়ে ও স্ত্রীকে বাসায় নামিয়ে দেন। পরে বিভিন্ন জায়গায় ফোন তিনি তদবির শুরু করেন। এরই মধ্যে বাসা থেকে তাকে জানায়, অরিত্রি রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। দরজা ভেঙে অরিত্রিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।