আশাশুনি

আশাশুনি থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা

By daily satkhira

December 04, 2018

মোস্তাফিজুর রহমান, আশাশুনি ব্যুরো: আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের সমৃদ্ধির প্রতীক ধানের গোলা। একের পর এক ফসলি জমি মৎস্য চাষে ব্যবহৃত হওয়ায় এর মুল কারন বলে মনে করছেন উপজেলার সচেতন মহল। আশাশুনি উপজেলার প্রায় প্রত্যেক পরিবারে বাঁশ দিয়ে চটা তৈরী করে সেটাকে গোলাকার আকৃতির দিয়ে ধানের গোলা তৈরী করে বাড়ির উঠানে একটি গোলাকার উঁচু ভীত বানিয়ে সেখানে বসানো হতো। আর সেটার ছাউনি হিসাবে থড়, গোল পাতা এবং টিন ব্যবহার করা হত। ছাউনির উপরের দিকে বেশ উঁচু টিনের পিরামিড আকৃতির হতো যা অনেক দূর থেকে দেখা যেত । ইঁদুর জাতীয় প্রাণী এবং বর্ষার পানি থেকে রক্ষা করে ফসল সংরক্ষনের জন্য গোলঅ ছিলো ব্যাপক জনপ্রিয় এবং কার্যকর। সে সকল পরিবারের গোলা তৈরী করার সমার্থ থাকত না তাদের প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতে থাকত গোলার মত ছোট আকৃতির আউড়। আউড় বসানো হতো ঘরের মধ্যে। কম খরজে বেশি পরিমানে শষ্য সংরক্ষনের গোলার বিকল্প কিছু নেই। কালের আর্বতনে গ্রাম অঞ্চালের মানুষের ঐতিহ্য গোলা ও আউড় এখন খুবই কম দেখা মেলে। বর্তমান সময়ে গ্রাম অঞ্চালে যেটুকু শষ্য উৎপাদিত হয় সেগুলো বিক্রি করে চাউল কিনে খাওয়ার প্রবনতাই বেশি দেখা যায়। আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলার মানুষের চাল-চিত্র উলট-পালট করে দিয়েছে বলে সর্ব মহলের ধারণা। সে সময় ছেলে-মেয়ে বিয়ের জন্য পাত্র বা পাত্রি পক্ষের সম্পদের মাপকাটি হিসাবে ধরা হতো বাড়িতে গোলা বা আউড়ের পরিমানের উপর নির্ভর করতো। বর্তমানে কন্যা পাত্রস্থ করতে পিতা ভাবে ছেলের সরকারি চাকুরী কিংবা বড় ধরণের কোন ব্যবসা আছে কি না। বুধহাটা ইউনিয়নের আলহাজ্ব আবুল কাশেম মোড়ল(৮০) জানান, এখন গোলার প্রচলন প্রায় উঠে গেছে বললেও ভুল হবে না। আমার বাড়িতে একটি গোলা আছে কিন্তু দীর্ঘ দিন সেটাকে ব্যবহার করা হয় না বা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। কয়েক বছর পূর্বেও এলাকায় প্রায় প্রত্যেকের বাড়িতে কম বেশি গোলা থাকতো। । সব কিছু মিলিয়ে গ্রাম বাংলার কৃষকের এক সময়ের সমৃদ্ধির প্রতীক ছিলো এ গোলা যেটি আজ হারিয়ে যেতে বসেছে।