শিক্ষা সংবাদ: শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার পর ভিকারুননিসার স্কুল অ্যান্ড কলেজ সম্পর্কে যেসব অভিযোগ আসছে সেগুলো আমলে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কাজ করছে জানিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেছেন, আমরা অনেক অ্যাটেমপ্ট (পদক্ষেপ) নিয়েছি, আরও নেব।
স্কুলটির পাকিস্তান আমলের নাম পরিবর্তন নিয়েও পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব।
রবিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রতিষ্ঠানটির পাকিস্তানি আমলের নাম পরিবর্তন নিয়ে অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সচিব বলেন, আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নেব। যতোগুলো প্রশ্ন এসেছে, যতোগুলো অভিযোগ এসেছে ইতোমধ্যে আদালত একটা কমিটি করে দিয়েছেন, আমরাও কমিটি করেছি। আমরাও পরিদর্শন করবো, বিভিন্নভাবে চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, সকাল থেকে এ বিষয় নিয়ে বসেছিলাম যাতে প্রতিষ্ঠানটি ভালোভাবে চলে, শিক্ষকরা-অভিভাবকেরা সন্তুষ্ট থাকেন, যাতে শিক্ষকরা মর্যাদাবান থাকেন। শিক্ষার্থীরা যাতে প্রকৃত নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারেন সেজন্য আমাদের সব প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো।
সচিব বলেন, যেসব অভিযোগ অভিভাবকেরা করছেন, শিক্ষার্থীরা করছেন, আপনারা করছেন, সেগুলো থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমরা এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বেশকিছু অ্যাটেমপ্ট নিয়েছি এবং আরও নিতে থাকবো যাতে একটা আদর্শ প্রতিষ্ঠান হয়। সেখানকার কমিটি কীভাবে কার্যকর থাকবে, শিক্ষকরা কীভাবে পরিচালিত হবেন, অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের মঙ্গল চিন্তা করবেন, শিক্ষার্থীরা কীভাবে ভালো থাকতে পারবেন, ভালো ফলাফল করে ভালো মানুষ হবেন- আমরা এরকম কিছু অ্যাটেমপ্ট নেওয়া শুরু করেছি।
একজন শিক্ষককে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তির দাবিতে ফের আন্দোলনে নামার বিষয়ে সচিব বলেন, প্রত্যেকেরই আদালতে যাওয়ার অধিকার আছে। যিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনিও আদালতে বক্তব্য রাখতে পারেন। আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। এ বিষয়ে আমি সিদ্ধান্ত দিতে পারবো না, কথাও বলতে পারবো না।
প্রভাবশালীদের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সচিব বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমি, আমার মন্ত্রী বা আমার বিভাগের এমনকি আমি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সম্পর্কে বলতে পারি, আমি কখনও কোনো ভর্তির তদবিরও করিনি, চাকরি তো দূরের কথা। একজনও যদি বলতে পারেন যে আমি বা আমার মন্ত্রীর একজন যে কেউ ভর্তি হয়েছে, চাকরি তো অনেক বিরাট ব্যাপার, সে জায়গায় তো আমরা যাই না। আমার মনে হয় কেউই বলতে পারবে না আমরা একজনকেও ভর্তি করিয়েছি।
তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগ আমরা করি না, এটি একটি প্রাইভেট স্কুল, সেখানে একটা ম্যানেজিং কমিটি আছে। তারা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন, তারাই সে কাজটি করেন। কিন্তু এখন যে প্রশ্নগুলো আসছে, ওটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। পরিপূর্ণ কন্ট্রোলটা আমাদের নেই। কিন্তু আমরা সেটি নিশ্চিত করার জন্য তাদের সেভাবে অনুরোধ করবো বা আমাদের কার্যক্রমগুলো মেনে সেভাবে করতে পারে সে পথটা আমরা করে দেব যাতে নিরপেক্ষভাবে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ হয়।
সেখানকার শিক্ষকদের সঙ্গে কী আচরণ হবে, অভিভাবকের সঙ্গে কী আচরণ হবে, সাংবাদিকদের সঙ্গে কী আচরণ হবে- এগুলো আমাদের উন্নত করতে হবে, সেজন্য আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়া নিচ্ছি। কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় গেলে তারা নিয়ম-কানুন মানতে বাধ্য থাকেন এবং নিয়মন-কানুন অনুযায়ী পরিচালিত হয় সে জন্য আমরা ওয়ার্ক আউট করছি-যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকারের দিক থেকে সরকার এবং আদালতের দিক থেকে আদালত ব্যবস্থা নিচ্ছেন, আমার মনে হয় যৌক্তিক ফলাফল পাবো।
ছাত্রীদের ক্লাস ও অন্য একাডেমিক কাজে মনোনিবেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আশা করছি পরিস্থিতি সবার জন্য সম্মানজনক হবে। আমার আবেদন থাকবে, দেশে একটা নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে, বেশিদিন নেই। এসময় আমরা সবাই যেন সবার অবস্থান থেকে দেশের কল্যাণের কথা চিন্তা করি।