রাজনীতির খবর: নির্বাচনে তিনটি আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পৃথক রিট শুনানি ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন একক বেঞ্চ ঠিক করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
আজ বুধবার বিকেলে এ বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। আগামীকাল এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে জানা যায়। সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার মো. সাইফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র ফিরে পেতে কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা রিটের বিভক্ত আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও মো. ইকবাল কবিরের দ্বৈত বেঞ্চ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ভোটের ব্যাপারে এ বিভক্ত আদেশ আসে। পরে হাইকোর্টের দেওয়া দ্বৈত আদেশ বিস্তারিত লেখার জন্য নথি ফেরত পাঠানো হয়। দুপুরে বিস্তারিত লিখে আদেশ জমা দেওয়ার পর প্রধান বিচারপতি বিকেলে নতুন করে এ বিষয়ে শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করে দেন।
এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন যে রায় দিয়েছিল, তা স্থগিত ঘোষণা করেন এবং কেন এই আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে রুল জারি করেন। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র গ্রহণ করে তাঁকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণার আদেশ আসে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতির কাছে থেকে।
জ্যেষ্ঠ বিচারপতির আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির। তিনি খালেদা জিয়ার আদেশ খারিজ করে দেওয়ার মত দেন।
এর ফলে খালেদা জিয়া ভোটে ফিরতে পারবেন কি না, তা আপাতত অমীমাংসিতই রয়ে যায়। নিয়ম অনুসারে, বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে শুনানির জন্য তৃতীয় একটি বেঞ্চ গঠন করে দিলেন আজ। সেই বেঞ্চই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত আদেশ দেবেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও বগুড়া-৭ আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়া হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তারা তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। এরপর গত ৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল আবেদন করেন। গত শনিবার শুনানির সময় সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তাঁরা তিনটি আসনেই খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করেন।
এর পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভোটের লড়াইয়ে ফিরতে শেষ আশ্রয়স্থল হাইকোর্টে আসেন। গত রোববার বিকেলে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। দ্বৈত আদেশের এ রায়ের কপি মোট দুই পৃষ্ঠা।
গত ৯ ডিসেম্বর ছিল প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে সারা দেশে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়েছে। আর ভোট গ্রহণ হবে ৩০ ডিসেম্বর।