কলারোয়া

৩ ডাক্তার দিয়ে চলছে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স; সেবা বঞ্চিত সাধারণ মানুষ

By daily satkhira

December 18, 2018

কলারোয়া প্রতিনিধিঃ কলারোয়ায় ডাক্তার সংকটে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (হাসপাতাল)। উপ-সহকারি মেডিকেল অফিসার দিয়ে জরুরী বিভাগের সেবা চালু থাকলেও কাঙ্খিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শত শত সাধারণ অসহায় মানুষ। এছাড়া ১২টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলিতেও পর্যাপ্ত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার না থাকায় এবং অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্যসেবার মুখ থুবড়ে পড়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় চরম ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলারোয়া উপজেলা সুশীল সমাজ। অবিলম্বে ডাক্তার সংকট সমাধানে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জনসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সু-দৃষ্টি কামনা করা হয়েছে। কলারোয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানান- ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি এক সময় ২০ জন ডাক্তার কমর্রত থাকলেও এখন ৩৪টি পদের মধ্যে ৩০টি পদই শুন্য। বাকি ৪ জন ডাক্তার হলেন-টিইচও ডাঃ কামরুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, বিল্লাল হোসেন, জাহিদ হাসান। হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডাঃ শফিকুল ইসলাম ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ বিল্লাল হোসেন জরুরী বিভাগ, বহির্বিভাগ ও ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ডিউটি, বহির্বিভাগে ও ভর্তিকৃত রোগিদের সেবা দিতে ৩ জন ডাক্তারকে ২৪ ঘণ্টাই ডিউটি করতে হচ্ছে। একই সাথে ফরাদ হোসেন, পিয়াস কুমার, সুজন দাস, শুভজিৎ রায়. নাজনিন নাহার, নারগীজ ফাতেমা সহ ৬ জন সাব এ্যাসিস্টান কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার তাদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন। এদিকে-গত ১১ ডিসেম্বর প্রসূতি বিশেষজ্ঞ ডাঃ শান্তি মোহন ভদ্র অবসরে গেছেন। ফলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালে গিয়ে প্রসূতি মায়েরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। পাশাপাশি এ্যানেস্থিশিয়া ডাক্তারসহ বিশেষজ্ঞ সার্জন না থাকায় সকল প্রকার অপারেশনও রয়েছে বন্ধ। যে কারণে স্থানীয় ক্লিনিকগুলো বেশ জমিয়ে ব্যবসা করছে। দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে পরিচালিত গর্ভবতী মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম ডাক্তার সংকটের কারণে প্রায় ৩ বছর বন্ধ রয়েছে। অযতেœ অবহেলায় পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রপাতি। সরকারের কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক বছর যাবত কলারোয়া সরকারি হাসপাতালটি ডাক্তার সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এ বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করা হলেও আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি বরং বন্ধ হাসপাতালটি হওয়ার উপক্রম হয়েছে। উপজেলার একমাত্র ভরসা এই সরকারী হাসপাতালটিতে আজ মাত্র ৩জন ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে উপজেলার জন সাধারণ। বর্তমানে সু-চিকিৎসার জন্য কলারোয়া হাসপাতালে এখন আর কেউ যায়না। মারামারি করে থানায় মামলা করার জন্য কিছু মানুষ হাসপাতালের বেডে ভর্তি হয়। উপজেলার অসহায় মানুষের একমাত্র সরকারি চিকিৎসা সেবার ভরসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সচল করে উন্নত সেবা প্রদানের জন্য তারা সংশিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আর্কশন করা হয়েছে। কলারোয়া হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, চাহিদার তুলনায় এত কম ডাক্তার দিয়ে হাসপাতাল পরিচালনা করা কঠিন যাচ্ছে। একদিকে অফিসিয়াল কাজ, অন্যদিকে জরুরী বিভাগ, ইনডোর-আউটডোর নিয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে নিজেরাই অসুস্থ্য হয়ে পড়ছি। আমাদের তো বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। তিনি আরো বলেন- হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক পদায়ন করা হোক যাতে অসহায় রোগীদের সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা যায়।