বিনোদন

জয়াকে নিউইয়র্কে লাল গালিচা সংবর্ধনা

By daily satkhira

December 19, 2018

বিনোদনের খবর: ৩১ ফুট লম্বা হামার এইচ-টু লিমোজিনে করে নিউইয়র্কের জ্যামাইকা মাল্টিপ্লেক্সে নামলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। যুক্তরাষ্ট্রে তার আগমন উপলক্ষে গত ১৪ ডিসেম্বর ‘দেবী’ ছবির বিশেষ একটি প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এ উপলক্ষে জয়া আহসানকে অভ্যর্থনা জানান যুক্তরাষ্ট্রে দেবী ছবির ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠান বায়েস্কোপ ফিল্মসের সিইও ডা. রাজ হামীদ ও নওশাবা রশীদ রুবনা।

সেখানে দর্শকদের সাথে ছবিটি উপভোগ করেন জয়া, তাদের সাথে আড্ডা দেন এবং ছবি তোলেন। এরপর তিনি লং আইল্যান্ড সিটির একটি ফাইভ স্টার ব্যাংকুয়েট হলে রেড কার্পেট সংবর্ধনায় যোগ দেন। সেখানে ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক হাসানুজ্জামান সাকী। এভাবেই ‘দেবী’ ছবির সাফল্যের সেলিব্রেশন হলো নিউইয়র্কে। আয়োজকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টি শহরে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে। শুধুমাত্র নিউইয়র্কেই ছবিটির ৭৯টি শো হয়েছে।

জয়া যখন রেড কার্পেটে পা রাখলেন তখন অনুপম রায়ের কথা, সুর ও কণ্ঠে ‘দেবী’ ছবির “দু’মুঠো বিকেল” গানটি বেজে উঠল। দু’পাশে আমন্ত্রিত অতিথিদের অভিনন্দন আর শুভেচ্ছার জবাব দিতে দিতে সংবর্ধনা মঞ্চে আসন নেন জয়া। মঞ্চে আরও ছিলেন বায়েস্কোপ ফিল্মসের প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও ডা. রাজ হামীদ ও নওশাবা রশীদ রুবনা।

শুরুতেই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের মৃত্যুতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

দেবী ছবির সাফল্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী দর্শকদের ধন্যবাদ জানান জয়া। জয়া বলেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র তার হারানো গৌরব ফিরে পাচ্ছে। বিদেশেও বাংলা ছবির দর্শক সৃষ্টি হচ্ছে, চলচ্চিত্রের জন্য এটি বিরাট ইতিবাচক দিক।

জয়া বলেন, দেশে এখন অনেক ভাল ছবি নির্মাণ হচ্ছে তবে ব্যক্তিবিশেষের চাইতে বাংলাদেশের সরকারই চলচ্চিত্রের বড় পৃষ্টপোষক। অভিনেত্রী জানান, সুস্থ-সুন্দর চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকার ন্যূনতম শর্তে অনুদান দিচ্ছে। যা আমাদের চলচ্চিত্রকে আরও অনেক দূর এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

ডা. রাজ হামীদ জানান, যুক্তরাষ্ট্রে দেবী ছবিটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। তিরিশটি শহরে ছবিটির অন্তত একশ বিশটির মতো প্রদর্শনী হয়েছে। লুজিয়ানার ব্যাটন রুজ ও কলোরাডোর ডেনভার শহরে প্রথম কোনো বাংলা ছবি প্রদর্শিত হয়েছে। মিশিগানের ডেট্রয়েটে দশ বছর পর বাংলা ছবি প্রদর্শিত হলো।

যুক্তরাষ্ট্রে ‘দেবী’ ছবির ব্যবসায়িক সাফল্যের একটি আনুমানিক হিসেব দেন বায়েস্কোপ ফিল্মসের আরেক কর্নধার নওশাবা রশীদ রুবনা। তিনি জানান, নিউইয়র্কে প্রথম দুই সপ্তাহে প্রায় ৫০ হাজার ইউএস ডলার আয় হয়েছে। তবে পুরো হিসেব এখনও পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, অন্যান্য শহরেও ‘দেবী’ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

দ্বিতীয় পর্বে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন এবং নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা দেবীর প্রিমিয়ার শো’তে ছবিটি দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সুস্থ চলচ্চিত্রের পাশে থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।

মাসুদ বিন মোমেন সম্প্রতি আর্মেনিয়ার একটি ছবি দেখার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, ওই দেশের গণহত্যার উপর নির্মিত ছবিটি জাতিসংঘে প্রদর্শিত হলে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা তা দেখেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণহত্যা বা ইতিহাসের বৃহৎ প্রেক্ষাপট নিয়ে ছবি নির্মাণ হলে তা বিশ্ব দরবারে প্রদর্শনের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। তিনি এ ধরনের ছবি নির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকারদের প্রতি আহ্বান জানান।

সাদিয়া ফয়জুন্নেসা বলেন, জয়া আহসান দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গেও সমান জনপ্রিয় এবং সেখানকার ব্যস্ততম অভিনয়শিল্পী। জয়া আহসানকে দেশের একজন শুভেচ্ছাদূত আখ্যা দেন তিনি।

দেবী’র সেলিব্রেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে ভারতীয় পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলীর পরবর্তী ছবি বিজয়া’র প্রমোশনেও অংশ নেন জয়া আহসান। ছবিটিতে তিনি মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। জয়া জানান, গত বছর ভারতে ‘বিসর্জন’ ছবিটি মুক্তি পায়। দুই বাংলার গল্প নিয়ে নির্মিত ছবিটি সেদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। ছবিটি বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভারতে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এবার ওই ছবির সিক্যুয়েন্স তৈরি হয়েছে ‘বিজয়া’। জয়া অভিনীত ‘বিজয়া’ জানুয়ারিতে ভারত ও বাংলাদেশে মুক্তি পাবে। যুক্তরাষ্ট্রেও ছবিটি একই সময় মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে ছবিটির ট্রেইলর সব মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত ‘বিজয়া’ দেখার জন্য জয়া আহসান সকলের প্রতি আহ্বান জানান।