স্বাস্থ্য

বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্ত ফুসফুস বা COPD

By daily satkhira

December 23, 2018

স্বাস্থ্য কণিকা: ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) অনেক অসুখের সমন্বয়ই যার কারণে শ্বাসনালিগুলোর ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। যখন এ অবস্থা সৃষ্টি হয় তখন এ অসুখটি একটি দীর্ঘস্থায়ী আজীবনের অসুখ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এর কারণ হল ‘সিওপিডি’তে শ্বাসনালিগুলো স্থায়ীভাবে সংকুচিত হয়ে যায় অর্থাৎ জীবনে কখনও আর স্বাভাবিক সুস্থ বা প্রসারিত অবস্থায় শ্বাসনালিগুলো ফিরে আসে না।

সিওপিডি একসঙ্গে বলা যায়- ‘দীর্ঘস্থায়ী বাতাস চলাচলে বাধাগ্রস্ত ফুসফুসের অসুখ’ রোগটির ভেতর ৩ রোগ আলাদাভাবে থাকতে পারে অথবা একসঙ্গে ২টা বা ৩টা রোগ থাকতে পারে। তাই এটা একটি গুচ্ছরোগ। এটার তিনটি রোগ হল ১) ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস (দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসনালির প্রদাহ) ২) পালমোনারি এমফাইসিমা (ফুসফুসের বায়ু থলিগুলোর পর্দাগুলো ধ্বংস হয়ে বড় বড় বায়ুথলি হয়ে যাওয়া- ‘এ বড় বড় বায়ুথলি হওয়ার কারণে ফুসফুস দিয়ে বাতাসের অক্সিজেন ভালোভাবে শরীরে প্রবেশ করতে পারে না’ ৩) ক্রনিক অ্যাজমা অথবা দীর্ঘস্থায়ী হাঁপানি।

‘হাঁটলে শ্বাস কষ্ট হয়’ এটাসিওপিডির প্রধান উপসর্গ- তাই এ অসুখ মানুষকে ধীরে ধীরে নিষ্কর্মা ও স্থবির করে ফেলে।

উপসর্গটা এমনভাবে শুরু হয় যেমন : তাড়াহুড়া করে গাড়িতে, ট্রেনে উঠতে গেলে, বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে গেলে বা সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠতে গেলে আগে শ্বাসকষ্ট হতো না কিন্তু এখন কেমন যেন হাঁপিয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর বিশ্রাম না নিলে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। ধীরে ধীরে এ অবস্থা সৃষ্টি হয় ‘গোসল করলে, কাপড়চোপড় ইস্ত্রি করলে, কাপড় শুকাতে দড়িতে দিতে গেলে, কেমন যেন হাঁসফাঁস লাগছে’। ধীরে ধীরে শুয়ে থাকতেই ভালো লাগছে, দৈনন্দিন ঘরের কাজগুলোয় শ্বাসকষ্ট হচ্ছে।

সিওপিডি রোগীদের জন্য সুসংবাদ হল যদি আপনি রোগটির সঠিক পরিচর্যা শিখে নেন তা হলে- ‘আপনি আপনার কষ্টকে নিয়ন্ত্রণ করে অনেকটা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন।

সিওপিডি নিয়ে যতটা সম্ভব ভালো থাকা নির্ভর করে ৩টি জিনিসের ওপর-

১) রোগের উপসর্গ বা কষ্টকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। ২) এভাবে চিকিৎসার আওতায় রোগকে আনা যাতে ফুসফুসের স্থায়ী ক্ষতগুলো এড়ানো যায় বা কম হয়। ৩) কর্মক্ষম ফুসফুসকে আরও বেশি কর্মক্ষম রাখতে অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

এ ৩ জিনিসের লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিচের কাজগুলো করতে হবে-

১) ধূমপান বন্ধ করা এবং ধোঁয়ামুক্ত পরিবেশে কাজ করা। ২) ওষুধগুলোকে বুঝে নেয়া যাতে নিয়মিত প্রতিষেধক বা বাধাদানকারী ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন এবং উপশমকারী ওষুধ প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন। ৩) পরিকল্পিত ফুসফুসের ব্যায়ামের ভেতর সারা জীবন থাকা (পালম নারী রিহ্যাবিলিটেশন প্রোগ্রাম অর্থাৎ ফুসফুস পুনর্বাসন কার্যক্রম) ৪) স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া। ৭) বাৎসরিক অথবা ৩-৫ বছর পরপর ভ্যাকসিন নেয়া

অধ্যাপক ডা. মো. রাশিদুল হাসান বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইনজিনিয়াস পালমোফিট মোহাম্মদপুর, ঢাকা মোবাইল : ০১৭০১৬৭৭৭৮৮