কে.এম রেজাউল করিম: বাকী আর মাত্র কয়েকদিন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরায় চারটি আসনের মধ্যে সাতক্ষীরা-৩ আসনটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে। এ আসনটিতে প্রখ্যাত দুই চিকিৎসক নির্বাচন করায় জেলাবাসির নজর এখন এ আসনটি ঘিরে। ৩০ ডিসেম্বর কে পরবেন বিজয়ের মালা তা দেখার অপেক্ষায় সাতক্ষীরাবাসি। এ আসনটিতে দুই হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন উপমহাদেশের বিশিষ্ঠ শৈল্য চিকিৎসক সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বর্তমান সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক। তিনি মাহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। আর অপরদিকে বিএনপির ধানের শীষ প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট (হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ) ডাঃ মোঃ শহীদুল আলম। দুইজন চিকিৎসকের পাশাপাশি আরও একজন নির্বাচন করছেন তিনি হলেন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মোঃ ইসহাক আলী। তিনি হাতপাখা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করছেন। সাতক্ষীরা-৩ আসনটি আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলা এবং কালীগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ২০ টি ইউনিয়ন গঠিত এই আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩ শত ৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫ শত ১৮ জন। নারী ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৮ শত ২০ জন। আশাশুনি উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মোট ভোট কেন্দ্র ৮৫টি। এখানে মোট ভোটার ২,১২,৫৯৩ জন। তার মধ্যে পুরুষ ১,০৭,৪২৬ জন ও মহিলা ১,০৫,১৬৭ জন। দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র ৪০টি। এখানে মোট ভোটার ৯৭,৮৮৮ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৪৯,২৯৮ জন এবং মহিলা ৪৮,৫৯০ জন। এছাড়া কালিগঞ্জ উপজেলার ৪ ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্র ২৮টি। এখানে মোট ভোটার ৭৬,৯২২ জন। তার মধ্যে পুরুষ ৩৮,৮৩১ জন এবং মহিলা ৩৮,০৯১ জন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা-৩ আসন থেকে ডাঃ রুহুল হক এমপি নির্বাচিত হয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। এরপর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে মহাজোটের হয়ে দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ডাঃ রুহুক হক চিকিৎসা পেশার সর্বোচ্চ ডিগ্রী এফআরসিএস অর্জন করেছেন। তিনি জাতিসংঘ স্বাস্থ্য সংস্থার (গাভী) সদস্য। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থপেডিক্স বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন তিনি। বর্তমানে রাজধানীর ট্রমা সেন্টারে রোগী দেখেন এছাড়া বিদেশী গিয়েও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন। এছাড়া তিনি আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হিসেবে রয়েছেন। অন্যদিকে ডাঃ মোঃ শহিদুল আলম বর্তমানে রাজধানীর সাভারের এনাম মেডিকেলের কার্ডিওলজিস্ট (হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির কার্য্যকরী পরিষদের সদস্য পদে রয়েছেন। তিনি এবারই প্রথম বিএনপির হয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। চিকিৎসা পেশায় তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। এই আসনের ভোটাররা অনেকেই জানিয়েছেন, দুইজন চিকিৎসক নির্বাচন করায় তারা কিছুটা দ্বন্দ্বে আছেন। তবে বর্তমান সংসদ সদস্য এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন বলে তারা জানান। ডাঃ রুহুল হক ইতিমধ্যে এই আসনের প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে গনসংযোগ, পথসভা সহ সভা সমাবেশ করে চলেছেন। এসকল সভাতে তিনি বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আবারো নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ার জন্য তিনি আহবান জানাচ্ছেন। অপরদিকে ডাঃ শহীদুল আলম গত কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এলাকায় প্রচার চালাতে পারছেন না উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন তার দলের নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তার নেতাকর্মীদের মারধর করছে। প্রতিদিন পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। তিনি হয়রানি বন্ধের জন্য আহবান জানিয়েছেলেন। তবে এখনো পর্যন্ত অপর প্রার্থী ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মোঃ ইসহাক আলীর কোন প্রচার প্রচারনা চোখে পড়েনি।