দেবহাটা

দেবহাটায় পোল্ট্রি চাষ ও ডিম উৎপাদন করে বেকার যুবক থেকে এখন স্বাবলম্বী শরিফুল

By daily satkhira

December 27, 2018

দেবহাটা প্রতিনিধি: সুপরিকল্পিত পদ্ধতিতে ব্রয়লার-লেয়ার পোল্ট্রি মুরগির চাষ ও ডিম উৎপাদনের মাধ্যমে বেকারত্বের অভিশাপ ঘুচিয়ে সামান্য দিনমজুর থেকে নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে এখন এজন সুপ্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন দেবহাটার শরিফুল ইসলাম। তিনি দেবহাটার উত্তর পারুলিয়া গ্রামের আক্কাস গাজীর পুত্র। দিনমজুর থেকে নিজের ব্যবসার ক্রমবর্ধমান উন্নতির ফলে তার ব্যবসা ক্ষেত্রের পরিধিও এখন বেড়েছে অনেক গুন। মাত্র দেড় কাঠা জমির বসত ভিটা থেকে এখন তার বসত ভিটার পরিমান দাড়িয়েছে ১০ কাঠায়। তাছাড়া পোল্ট্রি চাষ ও ডিম উৎপাদনের পাশাপাশি নিজের মুরগীর ফার্মের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে উপজেলার মুরগি খামারীদের মাঝে উন্নতমানের মুরগির বাচ্চা,পুষ্টিকর বিভিন্ন ফিড ও ঔষধের সরবরাহকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন তারই মালিকানাধীন গাজী পোল্ট্রি ফিড নামের প্রতিষ্ঠান এবং মুরগি-ডিম,খাদ্য ও ঔষধপত্র সরবরাহের জন্য রয়েছে তার নিজস্ব একটি ট্রাক। অন্যদিকে নিজের বেকারত্ব ঘুচানোর পাশাপাশি তার এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমানে এলাকার আরো ১৫ জন বেকারের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতেও সক্ষম হয়েছেন তিনি। শরিফুল ইসলাম বলেন, বাবা-মা ও ৬ ভাইবোনের সংসারে প্রতিনিয়ত অভাবের যন্ত্রনা থাকায় ৫ম শ্রেনী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর ইচ্ছে থাকা স্বত্তেও স্কুলে যেতে পারেননি তিনি। ফলে অনেক কম বয়সেই সংসারের দায়িত্ব নিয়ে তিনি দিনমজুরের মাজ শুরু করেন। তারপর খুলনার চিংড়ী সরবরাহকারী জেমিনি ফিস নামের এক কোম্পনীতে রিসিভ গ্রেডার পদে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন কিছুদিন। কিন্তু সৎ মানসিকতা এবং নিজের ব্যবসা সৃষ্টির আশায় চাকুরি ছেড়ে বাড়ী চলে আসেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালে প্রানি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষন ও সরকারী উদ্দ্যোগে দেয়া মাত্র ১৫ টি পোল্ট্রি মুরগি দিয়ে অতি স্বল্প পরিসরে বাড়ীতেই খামার স্থাপন ও পালন শুরু করেন। তার ১০০ টি মুরগি দিয়ে খামারের পরিধি বাড়িয়ে প্রথম বারের মতো তিনি বেশ লাভোবান হন। বর্তমানে তার খামার রয়েছে ১৫-২০টি। আর এসব খামারে তিনি বর্তমানে ২২শ লেয়ার এবং ২০ হাজার সোনলী মুরগি। স্বল্প ব্যায় ও একটু বেশী পরিশ্রমের মাধ্যমে এসকল মুরগির দেখাশুনা ও পালন করা সম্ভব হওয়ায় ব্যবসাটি নিঃসন্দেহে লাভজনক এবং স্বাবলম্বী হওয়ার অন্যতম উপযুক্ত। এসকল জাতের মুরগি মাত্র ৫ মাস বয়স থেকে টানা ২ বছর পর্যন্ত নিয়মিত ডিম দিচ্ছে তার খামারে। এসময়ের মধ্যে ডিমের যোগানের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন এলাকার চাহিদা পূরন এবং ২ বছর পর ডিম দেয়া শেষ হলে মাংশের চাহিদা পূরনের জন্য তিনি সরবরাহ করে আবারো নুতন মুরগির বাচ্চা নিয়ে খামারে ক্রমবর্তমান পালনের ধারা বজায় রাখেন। বর্তমানে তার খামরে প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ডিম উৎপাদন ও সরবরাহ হচ্ছে। এখন তার খামারে দৈনিক সাড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা ব্যায়ের বিপরীতে ডিম উৎপাদন ও সরবরাহের মাধ্যমে দৈনিক আয় দাড়িয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকায়। এলাকার পাশাপাশি নিজেদের বেকারত্ব ঘুচাতে শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকুরীর আশায় বসে না থেকে বরং একজন উদ্যোক্তা হিসেবে প্রাথমিকভাবে স্বল্প পরিসরে পোল্ট্রি মুরগি চাষ ও ডি উৎপাদনের পরামর্শ এবং এক্ষেত্রে সার্বিকভাবে সহযোগীতাও করে যাচ্ছেন শরিফুল ইসলাম।