অনলাইন ডেস্ক: শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে। বৃহস্পতিবার তা ছিল ৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ফলে একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে, দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সাধারণত ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে বলা হয় মৃদু শৈতপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে বলা হয় মাঝারি শৈতপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈতপ্রবাহ বলা হয়। সেই হিসেবে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে মাঝারি শৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার এই পরিসংখ্যান বলছে, যতই দিন যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ কেবলই নিচের দিকে নামছে। মধ্যপৌষে যেন হামলে পড়েছে শীত। ভোরে ঘন কুয়াশা আর দিনভর ঠাণ্ডা বাতাসে কাবু হয়ে পড়েছেন ছিন্নমূল মানুষগুলো। রাতে তা আরও অসহনীয় হয়ে উঠছে। গাছপালা বেশি থাকায় শহর-নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে শীতের কাঁপুনি বেশি। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষের জন্যই তা বয়ে এনেছে বাড়তি কষ্ট ও দুর্ভোগ। হিমেল বাতাস আর তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তর জনপদের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষগুলো পড়েছেন বিপাকে।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে আরও দুতিনদিন রাজশাহীসহ সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমবে। ফলে নতুন করে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের আরও কিছু এলাকা শৈতপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে।
শুক্রবার সারাদেশের মধ্যে রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৪, চট্টগ্রামে ১৩ দশমিক ৭, সিলেটে ১৩ দশমিক ৫, খুলনায় ৯ দশমিক ৮, বরিশালে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রংপুরে ৮ দশমিক ৭, ময়মনসিংহে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা অব্যাহত রয়েছে রাজশাহীতে। এই জেলায় শৈতপ্রবাহ আরো কয়েকদিন থাকবে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এতে রবিবার ভোটের দিন তীব্র শীত পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে দুতিনদিন পর তাপমাত্রা কমার প্রবণতা থামতে পারে। তারপর আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। শীতের প্রকোপ তখন কিছুটা কমে আসবে। তবে এর আগে সকাল-সন্ধ্যা ও রাতে ঘন কুয়াশা থাকবে।
তার মতে গ্রীষ্মকালে যেমন দখিনা বাতাস স্বাভাবিক, তেমনি শীতে উত্তরের বাতাস। এই বাতাস না বইলেও গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহ এবং শীতে শৈতপ্রবাহ আসতে পারে। তবে তাপমাত্রা কমলেই সবক্ষেত্রে শীতের অনুভূতি সমানভাবে তীব্র নাও হতে পারে। যেমন কোনো একটি দিনের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার মধ্যে ব্যবধান যত বেশি হবে, শীতের অনুভূতি তত কম হবে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো থাকা না-থাকাও শীতের অনুভূতিতে পার্থক্য এনে দেয়। একই তাপমাত্রায় শহর ও গ্রামে শীতের অনুভূতিতে পার্থক্য হয়। এজন্য শহরে কম এবং গ্রামাঞ্চলে বেশি শীত অনুভূত হয়।
এদিকে হঠাৎ করেই শীতের প্রকোপ বাড়ায় রাজশাহীতে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শীত যতই বাড়ছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা ততই বাড়ছে। শীতের অসুখে শিশু ও বয়স্করাই আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি।