দেশের খবর: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে চার সন্তানের জননী এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় আরও দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে এলাকা থেকে একজনকে এবং কুমিল্লা থেকে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন চরজব্বার থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন।
তিনি জানান, পুলিশ অভিযান চালিয়ে বুধবার দুপুরে কুমিল্লা থেকে সোহেলকে এবং এলাকা থেকে স্বপনকে গ্রেফতার করেছে। ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এ নিয়ে ৯ আসামির মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এর আগে এই মামলায় মঙ্গলবার বাদশাহ আলম প্রকাশ কুড়াইল্যা বাদশাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে গৃহবধূকে (৩২) দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে সোমবার রাতে চরজব্বার থানায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা করেন নির্যাতিতার স্বামী। পুলিশ ওই রাতেই মামলাটি নথিভুক্ত করে এবং অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার বাদশাহ আলম ওরফে কুরাইল্যা বাদশাহ নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করে। তবে ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনকে আসামি করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বাদী।
মামলার বাদীর অভিযোগ, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে তার ১০-১২ জন অনুসারী রোববার গভীর রাতে তাদের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে এবং তাকে ও তার সন্তানদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত-পা বেঁধে রেখে তার স্ত্রীকে ঘরের বাইরে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তিনি বলেন, চরজব্বার থানা পুলিশ তাকে সোমবার রাতে মামলা করার জন্য পুলিশের গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে তিনি পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। পুলিশ তার দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী একটি অভিযোগ লিখে নেয়। তবে পুলিশ তাকে এজাহারটি পরে শোনায়নি এবং কাদের আসামি করা হয়েছে তাও তাকে বলেনি।
বাদী আরো বলেন, ‘আমি পড়ালেখা না জানায় এবং স্ত্রীর মুমূর্ষু অবস্থা নিয়ে দিশেহারা থাকায় এটা নিয়ে আর মাথা ঘামাইনি। তবে ঘটনার মূল হোতা রুহুল আমিন। কিন্তু মামলায় তার নামই নেই।’ এ ব্যাপারে সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক বলেন, ধর্ষণের ঘটনায় যদি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রুহুল আমিনের সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। চরজব্বার থানার ওসি মো. নিজাম উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, বাদী যাদের নাম বলেছে তাদেরকে আসামি করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, বাদী ও তার স্ত্রী যদি রুহুল আমিন মেম্বারকে শনাক্ত করে থাকে তাহলে তদন্ত করে দেখা হবে। নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াস শরীফ বলেন, মামলার বাদী যদি রুহুল আমিন মেম্বারকে শনাক্ত করে তাহলে তদন্ত স্বাপেক্ষে তাকে আসামি করার সুযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ৯ আসামির মধ্যে ৩ জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।