বিনোদনের খবর: মুম্বাই এসেই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিলেন সাবেক মিস ইন্ডিয়া ও বলি তারকা তনুশ্রী দত্ত। সে বিস্ফোরণে পুড়ে ছাই হয়েছেন বহু বলি পরিচালক ও বর্ষীয়ান অভিনেতা। ভারতে ফিরেই ‘মিটু’ আন্দোলনের সূচনা করেছেন তনুশ্রী। তার আনিত বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের মামলাটি এখনও চলমান।
অভিযোগটি ছিল-প্রায় একদশক আগে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির শুটিং সেটে তনুশ্রী দত্তের সঙ্গে যৌন নিপীড়নমূলক আচরণ করেছিলেন অভিনেতা নানা পাটেকার। এ নিয়ে প্রতিবাদ করায় পরে নানা তাকে বিভিন্নভাবে ভয়ও দেখান। এর পর তনুশ্রীর দেখাদেখি মুখ খোলেন অনেক বলি সেলিব্রেটিও। অভিযোগের কাতারে দাঁড়াতে হয় বিগবি অমিতাভ বচ্চনকেও।
অভিযুক্ত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানান মি. পারফেক্টশনিস্ট আমির খান। মার্শাল আর্ট হিরো জড়িয়ে যান মিটু বিতর্কে। ছবি পরিচালনা থেকে সরে দাঁড়াতে হয় অভিযুক্ত পরিচালক সাজিদ খানকে। সমালোচিত হন তার বড় বোন ফারাহ খান, বলিউড ভাইজান সালমান খানও। বলি ড্রামাকুইন রাখি সাওয়ান্ত চলে আসেন আলোচনায়। এসব খবরের ভিড়ে কেটে গেছে প্রায় ছয় মাস। এভাবেই বলিমহলে হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনে অভিযুক্ত হয়েছেন অনেক তারকা। তাই অভিনেত্রী তনুশ্রীকে ভারতে হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনের জননী বলা যেতেই পারে। তবে মিটু বিতর্কের প্রথম মামলার সুরাহা না করেই আবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন তনুশ্রী। কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বলিউডে আর অভিনয় করবেন না তিনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্বের জন্য অনেক সময় ও অর্থ বিনিয়োগ করেছি। ওই দেশেই আমার ভবিষ্যৎ। এখন সেখানেই চলে যাওয়া উচিত আমার। তা হলে নানা পাটেকারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সেই মামলার কী হবে? হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনের কী হবে?
এ প্রসঙ্গে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএস-কে তনুশ্রী বলেন, এ মামলা চলার জন্য আমার শারীরিক উপস্থিতির আর প্রয়োজন নেই। আইনগত প্রক্রিয়া চলতে আমার ভারতে অবস্থানের কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, আন্দোলন আমার ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, যখনই উদ্দেশ্যের পরিবর্তে কোনো আন্দোলন ব্যক্তিনির্ভর হয়ে পড়ে, তখনই তার ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা সীমিত হয়ে যায়। এ ছাড়া নিজেকে ভারতে হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনের প্রবক্তা হিসেবে দেখতে চান না এই সাবেক ভারতীয় সুন্দরী। তিনি বলেন, ‘আমি এর পথিকৃত বা প্রবক্তা নই। বরং আমি একটি মাধ্যম, যার মধ্য দিয়ে সমাজে পরিবর্তন ও সচেতনতার প্রসার হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এক দশক আগের ওই ঘটনা আমার ক্যারিয়ারকে শেষ করে দিয়েছিল। তাই আমাকেও একদিন না একদিন তার হিসাব চুকাতেই হতো। আমি তাই করতে ভারতে এসেছিলাম।
প্রসঙ্গত সাবেক বিউটি কুইন তনুশ্রী দত্ত চকোলেট: ডিপডার্ক সিক্রেট, ঢোল, স্পিড, গুডবয়, ব্যাডবয়, শাশ বহু অ্যান্ড সেনসেক্সসহ আরও অনেক বলিউড ছবিতে অভিনয় করেছেন।
২০১০ সালে অ্যাপার্টমেন্ট সিনেমার পর আর তাকে রুপালি পর্দায় দেখা যায়নি। বর্তমানে আমেরিকাতেই স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছেন ভারতে হ্যাশট্যাগ মিটু আন্দোলনের এ সূচনাকারী।