দেশের খবর: সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়ে ইয়াবাসহ মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই চালানোর ঘোষণা দিলেন কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান বদির স্ত্রী শাহিন আক্তার। তিনি বলেছেন, “মাদক, ইয়াবা ব্যবসাসহ সকল ধরনের অপকর্ম বন্ধ করতে যা যা করণীয়, আমি তাই করব।” বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে শপথ অনুষ্ঠানের পর স্বামী বদিকে পাশে রেখেই সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন শাহিন। বিতর্কিত বদিকে বাদ দিয়ে এবার কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনে তার স্ত্রীকে নৌকার প্রার্থী করেছিল আওয়ামী লীগ।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে শাহিন প্রায় দুই লাখ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী পান ৩৭ হাজার ভোট; যদিও বিএনপি ‘ভোট ডাকাতি’র অভিযোগ তুলেছে। ২০০৮ সালে কক্সবাজার-৪ আসনে বদি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সমালোচনার মুখে রয়েছেন বদি। ইয়াবা পাচারের ‘হোতা’ হিসেবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তালিকায় তার নাম এলেও ২০১৪ সালে তার দ্বিতীয় দফা মনোনয়ন আটকায়নি।
তবে গত বছর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাদকবিরোধী অভিযানে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বদির এক বেয়াইসহ অনেকে প্রাণ হারালেও বদির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ার সমালোচনা ওঠে।
অভিযান শুরুর পর প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির প্রধান এইচ এম এরশাদ বলেছিলেন, ‘মাদক সম্রাট’ তো সংসদেই রয়েছেন। আর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, “সবার আগে নিজের ঘরের মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করুন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। আপনাদের কক্সবাজারের টেকনাফের এমপি, তাকে তো জামিন দিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তিনি মহানন্দে এই ব্যবসা শুরু করেছেন।”
ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ মন্ত্রীদের বদির পক্ষে অবস্থান নিতে দেখা যায়। আর ওই সময় বদি ওমরাহ পালন করতে চলে যান সৌদি আরবে। তবে এবার নির্বাচনের আগে বিতর্ক এড়াতে বদিকে মনোনয়ন দেয়নি আওয়ামী লীগ; প্রার্থী করা হয় তার স্ত্রী শাহিনকে।
এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তখন বলেছিলেন, “আপনি অপরাধী হলে কি পরিবারের সব খারাপ লোক? বদি সম্পর্কে যে কন্ট্রোভার্সি আছে, তার কোনো প্রমাণ আছে? তবু কন্ট্রোভার্সি থাকায় অলটারনেটিভ বেছে নিয়েছি।”