স্পোর্টস ডেস্ক: এতদিন শুধু পরিচয় ছিল ক্রিকেটার। এখন সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনীতিবিদ। ক্রিকেটার কাম রাজনীতিক। দুই পেশার সঙ্গে মানিয়ে নেয়া কঠিন হচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজার!
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। নির্বাচনী ময়দানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সামান্যতম পাত্তা না দিয়ে একপেশে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন জনপ্রিয় এ ক্রিকেটার। গত ৩০ ডিসেম্বর সারাদেশের অন্য স্থানের মতো নড়াইলে-২তেও চলে দিনভর ভোটগ্রহণ। তাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাশরাফির পক্ষে রায় দেন জনগণ। জনরায়ে তার নৌকা প্রতীক পায় ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট। নিকটতম প্রতিন্দ্বদ্বী ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ধানের শীষ প্রতীকে পান ৭ হাজার ৮৮৩ ভোট। প্রায় ৩৪ গুণ বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন ক্রিকেট মস্তিষ্ক। নির্বাচন পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা বাস্তবায়নে শিগগির মাঠে নামার কথা দেন মাশরাফি। পাশাপাশি ২০১৯ বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটের সঙ্গে কোনো আপস নয় বলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। সেই লক্ষ্যে নড়াইল থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছান বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক। পৌঁছে মনোনিবেশ করেন বিপিএলে। তবে খটকার বিষয় একসঙ্গে দুই দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে নড়াইল এক্সপ্রেসকে।
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শনিবার মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের ষষ্ঠ আসর। এবারো রংপুর রাইডার্সকে নেতৃত্ব দেবেন মাশরাফি। ফলে দলের সঙ্গে অনুশীলনসহ মাঠের বাইরের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হচ্ছে তাকে। আবার রাজনীতিকের ভূমিকাও পালন করতে হচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অনুশীলনে যোগ দেয়ার আগে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে হয়েছে লড়াকু সৈনিককে। এর আগে গেল বুধবার অনুশীলনের আগে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। এসবের রেশ না কাটতেই বিপিএলের প্রথম ম্যাচে রংপুরকে নেতৃত্ব দিবে হবে তাকে। স্বভাবতই রাজনীতি থেকে ক্রিকেটীয় দায়িত্ব পালন করা সহজ হচ্ছে না মাশরাফির। খোদ তার ভাষ্যতেই সেই আভাস পাওয়া গেছে।
বিপিএল মাঠে গড়ানোর আগে মিরপুরের একাডেমি মাঠে সাংবাদিকদের বলেন, কোনো কিছুকেই না বলতে পারছি না। খুব দ্রুত ও অল্প সময়ের মধ্যে সব হচ্ছে। ম্যানেজ করতে চেষ্টা করছি। এখন আল্লাহ ভরসা।
মাশরাফি অবশ্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পূর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন। সম্প্রতি বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন তাকে ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত সমর্থন দিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পাপনের ভাষায়, মাশরাফি এখন পর্যন্ত যা করেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সেটাই যথেষ্ট। এখন এদেশের মানুষের জন্য তার কিছু করা উচিত। ওর ক্যারিয়ার প্রায় শেষ দিকে। যতদিন সে পারবে খেলবে। সর্বোচ্চটা যে চেষ্টা করবে-এ নিয়ে সন্দেহ নেই। কারণ ও হচ্ছে সত্যিকারের একজন যোদ্ধা।