অনলাইন ডেস্ক: এবারও উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ধাপে ধাপে করার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা, পবিত্র রমজান মাস এবং আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে নির্বাচন করা হবে। ছয় বা সাত ধাপে ৪৯০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ হতে পারে। আগামী মার্চে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ইসি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল জানুয়ারির শেষ দিকে অথবা ফেব্রুয়ারিতে ঘোষণা করা হতে পারে। এ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এরই মধ্যে দেশের সব উপজেলা পরিষদের সর্বশেষ তথ্য ইসিকে জানাতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়েছে। এতে উপজেলার নাম উল্লেখ করে সর্বশেষ নির্বাচনের তারিখ, উপজেলার চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানদের শপথগ্রহণ এবং প্রথম বৈঠকের তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। প্রায় একই ধরনের তথ্য দিতে ১০ আঞ্চলিক কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি, এপ্রিলে এইচএসসি ও জুনে পবিত্র রমজান বিবেচনায় মার্চ ও মে মাস ভোট গ্রহণের জন্য সুবিধাজনক সময়। তবে এখনও বিষয়টি নিয়ে ইসির সভায় আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, কমিশন আমাদের যে নির্দেশনা দেবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ইসির এক যুগ্ম সচিব জানান, উপজেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী, পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই বছরের জুন-জুলাইয়ে সাত ধাপে বাকি উপজেলা পরিষদে নির্বাচন হয়। ওই বছরের ভিন্ন ভিন্ন সময় উপজেলা পরিষদগুলোতে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের প্রথম সভা থেকে মেয়াদ শুরু হয়। এ কারণে ইতিমধ্যে অর্ধেকের বেশি উপজেলা পরিষদ ভোট গ্রহণের উপযোগী হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তথ্য পাওয়ার পর কোন উপজেলাগুলো নির্বাচনের উপযোগী হয়েছে তা পরিষ্কার হবে। বোঝা যাবে কয়টির নির্বাচন একই সঙ্গে করা যাবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের প্রস্তুতির প্রাথমিক কাজগুলো এগিয়ে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট শাখা। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ তালিকায় পরবর্তী সময় সংযোজিতদের অন্তর্ভুক্ত করে উপজেলা নির্বাচনের নতুন ভোটার তালিকা তৈরি করা হবে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সামগ্রীও কিনেছে ইসি। ব্যালট পেপারের কাগজ, স্ট্যাম্প প্যাড, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, ব্রাশ সিল, লাল গালা, অমোচনীয় কালি ইসির ভাণ্ডারে মজুদ রয়েছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের বিভিন্ন ফরম, প্যাকেট ও ব্যালট ছাপানোর কাগজও কেনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ভোটের তারিখ নির্ধারণ নিয়ে ইসি সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে যাতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেদিক বিবেচনা করা হচ্ছে। সব বিবেচনায় নিয়ে ভোটের তারিখ নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিটি ধাপে কতটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার ওপর নির্ভর করে বাজেট নির্ধারণ করা হবে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, সর্বশেষ ২০১৪ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি ৯৭টি উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন হয়েছিল। ওই মাসের ২৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ১১৭টি উপজেলায় ভোট হয়। এবারও মার্চে দুই থেকে তিন ধাপে ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তারা। সেই হিসেবে জানুয়ারির শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল হতে পারে। সবকিছুই কমিশনের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।