জাতীয়

এখনও ডাকের অপেক্ষায় ১৪ দলের শরিকরা

By daily satkhira

January 07, 2019

দেশের খবর: আজ সোমবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নিতে যাচ্ছেন। ২৪ মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ উপমন্ত্রীসহ মোট ৪৬ জনকে ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে ফোনও করা হয়েছে। কারা কারা মন্ত্রিসভায় স্থান পাচ্ছেন তারও তালিকা প্রকাশ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু, এই তালিকায় স্থান পায়নি গত দুই মন্ত্রিসভায় থাকা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন মহাজোটের শরিকরা। নেই জাতীয় পার্টিও। অবশ্য এই দলটি এবার সরকারে না গিয়ে বিরোধী দলে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, ভবিষ্যতে ডাক পাওয়ার আশায় আছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন মন্ত্রিসভার জন্য যাদের নাম ঘোষণা করছেন, তারা সবাই আওয়ামী লীগের। তবে এখনও অনেক মন্ত্রণালয় খালি রাখা হয়েছে, হয়তো ভবিষ্যতে সেগুলো থেকে শরিকদের মন্ত্রিত্ব দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।

এই বিষয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হচ্ছে, আজ শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের মন্ত্রিপরিষদের নাম ঘোষণা করেছেন। তবে, এখনও অনেক মন্ত্রণালয় খালি রয়েছে, ভবিষ্যতে হয়তো সেখান থেকে শরিকদের দেওয়া হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে মন্ত্রিসভা হতে যাচ্ছে, সেটা ভালো হচ্ছে। কিন্তু, জোটকে সরকারের বাইরে রাখা ভবিষ্যতে ক্ষতি করবে।’

এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি ও বর্তমান তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর। তবে তার দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, ‘আমরা দেখছি, আরেকটু অপেক্ষা করছি। যেহেতু আমাদের পথচলা একসঙ্গে। যে রাজনৈতিক কারণে আমরা জোট বেঁধেছিলাম, সেই রাজনৈতিক কারণগুলো এখনও বলবৎ আছে। ফলে এখনও জোটবদ্ধ রয়েছি। সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও কয়েকটি দিন অপেক্ষা করলে, আশা করি— ভালো একটা ফল দেখতে পাবো।’

২০০৯ সালে গঠিত মহাজোট সরকারের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন বাংলাদেশ সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলিপ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘এটাকে আমরা রাজনৈতিক বিষয় হিসেবেই দেখছি। রাজনৈতিকভাবে আমরা ১৪ দলীয় জোটের সরকারে আছি। প্রধানমন্ত্রী যেটা ভালো মনে করছেন, সেটা করেছেন। আমরা তার সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করছি। তার সিদ্ধান্তকে আমরা সঠিক মনে করি ও সম্মান করি।’ প্রসঙ্গত, চলতি মেয়াদে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী থাকলেও সোমবার (৭ জানুয়ারি) যে ৪৬ জন শপথ নেবেন তাদের তালিকায় এসব মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর নাম নেই। তবে এসব মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর নাম রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকলেও চলতি মেয়াদে এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন সদ্য প্রয়াত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। নতুন মন্ত্রিপরিষদে এই মন্ত্রণালয়টি প্রধানমন্ত্রীর হাতেই রাখা হয়েছে। তবে এখানে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের মধ্যে রয়েছে– গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, জাসদ (ইনু), গণ-আজাদী লীগ, কমিউনিস্ট কেন্দ্র, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, জাসদ (আম্বিয়া), গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ (মোজাফফর), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু)। ১৪ দলীয় জোটের মধ্যে চলতি মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন– পানিসম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এই তিনজনের কেউ একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।