নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা আওয়ামীলীগের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সৈয়দ ফিরোজ কামাল শুভ্র, শেখ সাহিদ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর-রশিদ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম শওকত হোসেন, জেলা আ’লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যডভোকেট অনিত মুখার্জী, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাদাৎ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রাশি, জেলা শ্রমিক লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ সরদার, জেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. আব্দুল মান্নান, জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক মনজুর হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী আক্তার হোসেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর মোশতাক আলী। আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মরহুম সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পুরাতন কোর্ট মসজিদের পেশ ইমান হাফেজ ক্বারী শেখ ফিরোজ আহমেদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এড. এস.এম হায়দার, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. ওসমান গনি, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফিরোজ আহমেদ, প্রচার সম্পাদক শেখ নুরুল হক, অর্থ সম্পাদক মো. আছাদুল হক, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলাম, উপ-দপ্তর সম্পাদক জে.এম ফাত্তাহ, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি ছাইফুল করিম সাবু, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ খালেক, জেলা আ’লীগের সদস্য ডা. মুনছুর আহমেদ, মীর মোশারফ হোসেন মন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সদস্য সচিব লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজান আলী, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক শেখ মনিরুল হোসেন মাসুম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোহিনুর ইসলাম, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি এপিপি অ্যাডভোকেট শেখ তামিম আহমেদ সোহাগ, বিকাশ দাস, শেখ শাহাঙ্গীর হোসেন শাহিন, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক জহিরুল হক নান্টু, সদস্য মীর মহিতুল আলম মহি, পৌর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুজ্জামান রাশি, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স, পৌর কাউন্সিলর শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন কালু, শেখ আব্দুস সেলিম, পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অনু, সাধারণ সম্পাদক তুহিনুর রহমান তুহিন, পৌর কাউন্সিলর ফারহা দীবা খান সাথী, অণিমা রাণী মন্ডল, মহিলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা রোখসানা পারভীন, দপ্তর সম্পাদক তহমিনা ইসলাম, জেলা তাঁতীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মীর আজহার আলী শাহীন, শাহ আনারুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এসময় বক্তারা বলেন, ‘ ১০ জানুয়ারি বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক দিন। ২৯০ দিন পাকিস্থানের কারাগারে থাকার পর ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি ভোরে বঙ্গবন্ধু ছাড়া পান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের এই দিনে স্বাধীন দেশে ফিরেছিলেন। একাত্তরে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর শহীদের রক্তস্নাত বাংলার মাটি ও মানুষ এই দিন ফিরে পেয়েছিল হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্থানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে। পাকিস্থানের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের এদিন বেলা একটা ৪১ মিনিটে জাতির অবিসংবাদিত নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি পাকিস্থান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্থানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্থানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। জাতির জনক পাকিস্থান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ০৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসাবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে তিনি কথা বলেন, বিট্রেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিট্রেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন। ১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, প্রধান নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সে দেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে। বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। বঙ্গবন্ধু নিজে তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন- ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’ হিসেবে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্থানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে বীর বাঙালি। দেশ স্বাধীন হলেও যার আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, সেই অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পাকিস্থানের কারাগারে অন্তরীণ। ফলে স্বাধীনতা এলেও নেতার অনুপস্থিতিতে অপূর্ণতা থেকে গিয়েছিল বিজয়ের গৌরব উদ্যাপনে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষা আর উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন। সেই থেকে দিনটি পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস হিসেবে।’ সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর-রশিদ।
১০.১.১৯