ক্রীড়া ডেস্ক: ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম বিতর্কিত চরিত্রের একজন লু রোয়ান। ১৯৭১ সালে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনা করেন তিনি। আজ শুক্রবার, ৯১ বছর বয়সে মারা গেলেন ক্রিকেটের বর্ষীয়ান এই আম্পায়ার। প্রথম ম্যাচ পরিচালনার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটের অন্যতম এক বিতর্কের মহাসাক্ষী এই রোয়ান। ১৯৭১ সালের অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সবচেয়ে বড় নাম ছিলেন তিনি। কারণ, সেই সিরিজে একজন অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানও লেগবিফোর আউট হননি। কেবল তাই নয়, সিরিজের প্রথম টেস্টে জিওফ্রে বয়কটের থ্রোয়ে কেইথ স্ট্যোকপোল পরিষ্কার রানআউট হলেও তাঁকে আউট দেননি লু রোয়ান। ক্রিকেটের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক আম্পায়ারিংয়ের ঘটনা মনে করা হয় সেটিকে। সেবার অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন স্ট্যাকপোল। তবে আউট হতে পারতন তিনি। কারণ, বয়কটের থ্রোয়ে রানআউট হয়েও লু রোয়ানের কারণে বেঁচে যান অসি ব্যাটসম্যান স্ট্যাকপোল। আর তাতেই ম্যাচটা ড্র হয়ে যায়। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টেও গণ্ডগোল বাধান এই রোয়ান। খেলা শুরুর আগে পিচের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। ইংল্যান্ড অধিনায়ক রে ইলিংওর্থের বারবার আবেদন সত্ত্বেও রোলিং করার অনুমতি দেননি এই আম্পায়ার। সিরিজের তৃতীয় টেস্ট ছিল মেলবোর্নে। খেলার শুরুর আগেই ভর্তি হয়ে যায় এমসিজি। বৃষ্টিতে মাঠ খেলার উপযোগী ছিল না। মেলবোর্ন স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের চেষ্টায় মাঠ তৈরি হলেও খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়ার রোয়ান। চতুর্থ টেস্টে ইংলিশ বোলার জন স্নোর বাউন্সারে মাথায় চোট পান টেরি জিনার। আম্পায়ার রুয়ান বোলার স্নোর বিপক্ষে ইচ্ছাকৃতভাবে আঘাত করার অভিযোগ আনেন। খেলা চলাকালে দর্শক মাঠে ঢুকে স্নোকে লাঞ্ছিত করলে ইলিংওর্থ তাঁর দল নিয়ে মাঠ থেকে বের হয়ে যান। পুরো সিরিজে ন্যক্কারজনকভাবে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আম্পয়ারিং করেন লু রোয়ান। ১৯৭১ সালের অ্যাশেজ সিরিজের কথা উঠলে অবধারিতভাবে চলে আসে লু রোয়ানের নাম। সেই অ্যাশেজের পর আর কোনোদিন আম্পায়ার হিসেবে দেখা যায়নি রোয়ানকে। অবসর নিলেও উল্টাপাল্টা আচরণ বন্ধ করেননি এই আম্পায়ার। ১৯৯৫ সালে অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও মুরালিধরনকে নিষিদ্ধের দাবি তোলেন তিনি। এমনকি রিকি পন্টিং ও ব্রেট লিকে গাধা বলে সম্বোধন করেন এই আম্পায়ার। ১৯২৫ সালে জন্মগ্রহণ করা লু রোয়ান ২৫টি টেস্ট ও একটি ওয়ানডে ম্যাচ পরিচালনা করেন।