আজকের সেরা

মাত্র ২ বছরে দেবহাটাকে মডেল উপজেলায় পরিণত করেছেন ইউএনও আসাদ

By Daily Satkhira

January 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাত্র ২ বছরে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলায় লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। পরিবর্তন ঘটেছে উপজেলার রাস্তাঘাট, সরকারি অফিস, স্কুল-কলেজের। উপকৃত হয়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এখানে কাউকে সেবা পেতে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না। সেবার দরজা সব সময় উন্মুক্ত। এমনটিই জানালেন দেবহাটার দাশপাড়া এলাকার রঞ্জন রিশি। তিনি বলেন, গত ২ বছরেই দেবহাটায় আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে। গরিব অসহায় মানুষগুলো ঘরে বসেই তাদের নায্য অধিকার গ্রহণ করছেন। এর পেছনে অবদান রয়েছে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদের। তিনি যোগদানের পর থেকে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটে চলেছেন এ উপজেলার সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে। অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন গরিব অসহায় মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য। তিনি যোগদানের পর থেকে এ উপজেলা পেয়েছে রূপসী ম্যানগ্রোভবনসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তার মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্প হতে এখানকার ৯০জন গরিব অসহায় মানুষ পেয়েছে ৯০টি আধাপাকা ঘর, ৯০টি বাথরুম ও ৯০টি উন্নত চুলা। দেবহাটা উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুন মাসে উপজেলার ৯০ জন অসহায় মানুষের জন্য ৯০টি ঘর দেওয়ার জন্য ‘আশ্রয়ন প্রকল্প-২’আসে। ওই প্রকল্পের শর্তছিলো ৩ শতকের কম জমি থাকতে হবে এবং ঘর নির্মাণের মত আর্থিক সমর্থহীন হতে হবে। এছাড়া ওই প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করতে হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আসাদ ওই প্রকল্পটি পেয়ে নিজেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রকৃত ব্যক্তিদের খুজে বের করেন। এক্ষেত্রে তিনি কোন প্রকার দালাল বা কারো কোন সুপারিশ গ্রহণ করেননি। প্রকল্পের বরাদ্দ ছিলো ঘর এবং বাথরুম। ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য বরাদ্ধ ছিলো (ঘর প্রতি ১লক্ষ টাকা) ৯০লক্ষ টাকা। অথচ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘর, বাথরুম দেওয়ার পাশাপাশি একটি করে উন্নত চুলার ব্যবস্থা করেছেন। সফলভাবে তিনি ওই প্রকল্পটি সফল করেছেন। কোন প্রকার আর্থিক লেনদেন ছাড়াই প্রকৃত ব্যক্তিরাই ওই ঘর পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেবহাটা উপজেলার উপকারভোগীরা। দেবহাটার রিশিপাড়া এলাকার উপকারভোগী অনুকুল রিশির পুত্র গণেশ রিশি বলেন, আমার এক খ- জমি থাকলেও ঘর নির্মানের ক্ষমতা ছিলো না। একটি ছাবড়া ঘরের মধ্যে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বসবাস করতাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত আশ্রয় প্রকল্প-২ এর মাধ্যমে একটি আধাপাকা ঘর পেয়েছি। যা বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ওই ঘর পেতে কোন টাকা পায়সা তো লাগেইনি। এমন কি ঘর ও বাথরুমের পাশাপাশি উন্নত একটি চুলাও দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আরো দশ বছর যদি বর্তমানে ইউএনও স্যার থাকেন তা হলে আমাদের মত মানুষ অন্তত সুখে শান্তি বসবাস করতে পারতো। দেবহাটা সদর, পারুলিয়া, টাউন শ্রীপুর, রফিকুল ইসলাম, হাদিউজ্জামান, সাকিবুজ্জামান ও সুশীলগাতী এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা ডা: শহীদুল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা শামছুর রহমান বলেন, নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদ এ উপজেলার উন্নয়নের রূপকার। তিনি আধুনিক উপজেলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন। বিগত সময়ে দেবহাটা উপজেলার একটি সাইনবোর্ড ছিলো না। হাফিজ আল আসাদ যোগদানের পর ধীরে ধীরে উপজেলায় একটি দৃষ্টি নন্দন গেট, উপজেলা পরিষদের সামনে সৌন্দয্য বর্ধিত গোল চত্বর, ফুল বাগান, মহিলাদের নামাজের স্থান এমনি দুগ্ধদানকারী মায়েদের জন্য ব্রেষ্ট ফিডিং কর্ণারও নির্মাণ করেছেন। সর্বোপরি উপজেলা পরিষদকে ঢেলে সাজিয়েছেন। উপজেলার ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে ৬০টি ১৯ ইঞ্চি মনিটর প্রদান করেছেন, ২৭টি স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা স্থাপন এবং দুরদুরান্তে থেকে স্কুলে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের ৩০টি বাইসাইকেলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তিনি। এমন একজন সৎ, নির্ভিক, দক্ষ ও যোগ্য অফিসার পেয়ে ধন্যহয়েছেন দেবহাটা উপজেলাবাসী। দেবহাটা উপজেলা পরিষদের কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান ইউএনও সাহেবের ক্লান্তি নেই। সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। সে কারণে আমাদেরও কাজ করতে হয়। মাঝে মাঝে আমরাও বিরুক্ত হই। কিন্তু তারপরও বলতে হয় এমন একজন অফিসার দেবহাটাবাসীর জন্য প্রয়োজন ছিলো। তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কিভাবে বিরামহীন ভাবে কাজ করতে হয়। কাজের মধ্যে আনন্দ রয়েছেন। কিভাবে একটা উপজেলাকে উন্নত ও সুশৃঙ্খল উপজেলায় পরিণত করা সম্ভব। দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদ বলেন, সীমান্তবর্তী এই উপজেলায় যোগদান করার পর মনে হয়েছিল উপজেলার মানুষের জন্য কিছু কাজ করতে হবে। চাকুরিজনিত কারণে একদিন চলে যেতে হবে। উপকৃত হবে এখানকার মানুষ। এ ব্রত নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি বরাদ্ধ ছাড়াও উপজেলা পরিষদের নিজস্ব আয় থেকে উপজেলার সার্বিক উন্নয়নের জন্য আপ্রাণ প্রচেস্টা অব্যাহত রেখেছি। বিশেষ করে দেবহাটাকে সারা দেশে পরিচিত করানোর জন্য রুপসী ম্যানগ্রোভ বনটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো জানান, চাকুরিজনিত কারণে আমাকে অন্যত্র যেতেই হবে। এ উপজেলার উপকৃত হবে। যে কারণে উন্নয়নের স্বার্থে, দেবহাটা কে একটি মডেল উপজেলায় পরিণত করতে সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রয়োজন।