আন্তর্জাতিক

সিরিয়ায় ভয়াবহ আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৪ মার্কিন সেনা নিহত

By Daily Satkhira

January 16, 2019

সিরিয়ায় এক আত্মঘাতী বিস্ফোরণে দেশটিতে মোতায়েন মার্কিন বাহিনীর অন্তত চার সদস্য নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিনজন। এ ঘটনায় একজন সাধারণ পথচারীরও মৃত্যু হয়েছে। ২০১৫ সালে সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনী মোতায়েনের পর এটিই তাদের ওপর সবচেয়ে বড় ধরনের হামলা। বুধবার মানবিজ শহরে মার্কিন বাহিনীর টহল চলাকালে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। মার্কিন সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

যে মানবিজ শহরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে ২০১৬ সাল থেকে সেটি নিয়ন্ত্রণ করছে সিরিয়ার যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সশস্ত্র কুর্দি বিদ্রোহীরা।

এমন এক সময়ে এ বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো যখন সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর সিরিয়া থেকে মার্কিন বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন তিনি। টুইটারে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সিরিয়ায় আইএস-কে পরাজিত করেছি। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সিতে শুধু আইএস-কে হটানোর জন্যই তাদের সেখানে (সিরিয়া) রাখা হয়েছিল।’ তবে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেরই সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা প্রবল।

এরইমধ্যে বুধবারের এ বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস। নিজেদের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ দায় স্বীকার করে তারা। এতে বলা হয়, বিদেশি বাহিনীর টহলকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানান, হামলায় চার সেনাসদস্য নিহত এবং তিন সেনাসদস্য আহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সিরিয়ায় মোতায়েন সামরিক জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিয়মিত মহড়া চলার সময়ে এক বিস্ফোরণে মার্কিন বাহিনীর সদস্যরা নিহত হয়েছেন।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মানবিজের একটি রেস্টুরেন্টে সিরিয়ার যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করছিল মার্কিন বাহিনী। ওই রেস্টুরেন্টটিকে হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রেস্টুরেন্টের কাছেই বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। এর লক্ষ্যবস্তু ছিল আমেরিকানরা।

পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, হামলায় মার্কিন সেনাসহ ১৬ জন নিহত হয়েছে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, হামলার পর ঘটনাস্থলে প্রচুর পরিমাণ সামরিক বিমানের উপস্থিতি দেখা গেছে।

কুর্দি সংবাদমাধ্যমগুলোতে মাটিতে পড়ে থাকা মানুষের সারি দেখা গেছে। দেয়ালে দেখা গেছে রক্তের দাগ। তবে রয়টার্সের পক্ষ থেকে এসব ছবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, সিরিয়ায় মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ট্রাম্পের ঘোষণার পর ইতোমধ্যে কুর্দিরা রুশ সমর্থিত সিরিয়ার আসাদ বাহিনীর ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। এরমধ্যেই গত ২ জানুয়ারি ট্রাম্প ঘোষণা দেন, সিরিয়া থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হবে ঠিকই, তবে তা হবে পর্যায়ক্রমে। কেননা, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় থাকা মার্কিন মিত্র কুর্দি যোদ্ধাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চায়। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স, আনাদোলু এজেন্সি।