বিদেশের খবর: বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বৃহস্পতিবার জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে সংস্থাটির ডেলিগেশন প্রধান ও দূত রেন্সজে তেরিঙ্ক নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এক বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছেন। এদিকে দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত সহযোগিতার জন্য ইইউ এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। দুই পক্ষের সম্পর্ক আরও জোরালো করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ইইউ-এর ডেলিগেশন প্রধান রেন্সজে তেরিঙ্ক জানিয়েছেন, সুশাসন, নিবিড় অর্থনৈতিক সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট, অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন ও উন্নয়ন সহযোগিতার মতো অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে ‘কন্সট্রাক্টিভ এনগেজমেন্ট’ নীতির আওতায় বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে ইইউ। বাংলাদেশে ইউরোপীয় বিনিয়োগের জন্য আরও ভালো পরিস্থিতি সৃষ্টির তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত সহযোগিতার জন্য ইইউ এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। সংস্থাটিকে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার আখ্যা দিয়েছেন তিনি। ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা’ গড়তে সরকার, ব্যবসা ও প্রাইভেট সেক্টর, শিক্ষা ও গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড, সুশীল সমাজ ও সরকারি-বেসরকারী অংশীদারত্বের মতো বিষয়গুলোতে আরও শক্তিশালী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ইইউকে অব্যাহত সহযোগিতা ও শক্তিশালী সমর্থন দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০১৫ সালের জাতিসংঘ সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে ২০৩০ সালকে সামনে রেখে ১৭টি পদক্ষেপ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা ‘গোল সেভেনটিন’ নামে পরিচিত। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের আর ২০৪১ এর মধ্যে উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার লক্ষ্যে ‘গোল সেভেনটিন’ বাস্তবায়নে তৎপর বাংলাদেশ। ‘গোল সেভেনটিন’-এ ঘোষিত লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইইউ-এর কাছে অর্থ বরাদ্দসহ বিভিন্ন সহযোগিতার প্রত্যাশা জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জবাবে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যানকার (ইআইবি) কথা তুলে ধরেছেন ডেলিগেশন প্রধান ও রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তেরিঙ্ক। ওই ব্যাংক ইতোমধ্যেই বিদ্যুৎ সঞ্চালন, পানি ব্যবস্থাপনা আর জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলোতে বাংলাদেশকে অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সংস্থাটির সহযোগিতার কথা স্মরণ করে ইইউ-এর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ড. মোমেন। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করতে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। জবাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ‘পূর্ণাঙ্গ সমর্থন’র আশ্বাস দেন রেন্সজে তেরিঙ্ক। ‘অভিবাসন’ ইস্যুতে দুই পক্ষের সম্পর্ককে ‘খুবই মূল্যবান ও সফল’ আখ্যা দেন তিনি।