বিনোদন সংবাদ: বাংলা চলচ্চিত্রের মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী চিত্রনায়কা মৌসুমী। ঢালিউডে প্রিয়দর্শিনী নামে সর্বজন পরিচিত।শিল্পীস্বত্তা, নিপুন অভিনয়গুনে সদা ভাস্বর এ নায়িকা।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করে যাচ্ছেন।যার অভিনয়গুণে মুগ্ধ হননি এমন মানুষ পাওয়া মেলা ভার।
অমর নায়ক সালমান শাহর সঙ্গে কেয়ামত থেকে কেয়ামত ছবি দিয়ে বড় পর্দায় তার হাতেখড়ি। এর পর আর পিছু তাকাতে হয়নি তাকে।
ওমর সানী, বাপ্পারাজ, মান্নাদের সঙ্গে একের পর এক রোমান্টিক ছবি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পরে রিয়াজ-ফেরদৌসদের সঙ্গেও জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন তিনি।
স্বগুণে অনন্য এ নায়িকা সম্প্রতি রাজনীতিতে নাম লিখিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেন।
মৌসুমীর রাজনীতির ইচ্ছা আরও দৃঢ় হয়েছে। মনোবাসনা দেখছেন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার। এ জন্য তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপত্রও সংগ্রহ করেছেন। মৌসুমী মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদীও।
মৌসুমী মনোনয়নপত্র কেনার পরই একটি বিতর্কের তীর তার দিকে ছুটে আসে। যেটি তাকে বেশ পীড়া দিচ্ছে, অনেকটা বিপদে ফেলে দিচ্ছে।
সেই বিতর্ক ও সমালোচনার উৎপত্তি একটি ছবি কেন্দ্র করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে মৌসুমীর একটি ছবি দেখা গেছে। যেই অনুষ্ঠানে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানও উপস্থিত ছিলেন। এ ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযাগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে।
বিএনপি ক্ষমতায় থাকার সময় বাংলাদেশ উৎসব নামে দেশজুড়ে অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে। ওইসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকতেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। সেই অনুষ্ঠানগুলো মাতিয়ে রাখতেন নায়িকা আর গায়িকারা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এমনই একটি উৎসবে একজন গায়িকা তার গানের মধ্য দিয়ে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে বাবা ও তারেক রহমানকে ভাই হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। ওই অনুষ্ঠানে নায়িকা মৌসুমীও উপস্থিত ছিলেন বলে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।
এর পর মৌসুমীর রাজনৈতিক অবস্থান ও আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন সামনে চলে আসে। অনেকের মতে, তার অবস্থান ভিন্ন রাজনৈতিক ধারায়। এই প্রশ্নের উত্তর দিতে বৃহস্পতিবার এফডিসিতে মিডিয়ার মুখোমুখি হন মৌসুমী।
মৌসুমী বিষয়টি সহাস্যে উড়িয়ে দেন। ফেসবুকে আসা বিভিন্ন ছবি ও উক্তির জবাব দেন রাজনীতিতে নাম লেখানো মৌসুমী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক ধরনের ছবি ছড়ানো হচ্ছে। বিষয়গুলো নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে এগুলোকে কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়দর্শনী মৌসুমীর ভাষ্য, ‘আমি তো আগেই বলেছি- এগুলো নিয়ে কথা বলার কিছু নেই। শিল্পী হিসেবে অনেকেই আমাকে ডেকেছেন। গিয়েছি। আমি আগে কখনও বলিনি, কোনো দলের কিংবা কারও হয়ে কাজ করতে চাই। তা হলে এই প্রশ্ন কেন আসছে? আমি এত বছর সততার সঙ্গে কাজ করেছি, এমন প্রশ্ন তুলে আমাকে ম্লান করে দেবেন না প্লিজ।’
বিএনপির সহযোগী সংগঠন-জাসাসের আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকলেও তিনি কখনোই বিএনপিতে যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেন মৌসুমী।
পুরনো ছবিটি এই সময়ে সামনে এনে তার রাজনীতিতে আসার উৎসাহকে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে মন্তব্য মৌসুমীর । যারা তা করছেন, তাদের এই পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।