মোস্তাফিজুর রহমান : বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সমগ্র দেশের ন্যায় আশাশুনি উপজেলার সর্বত্র চলছে প্রকাশ্য রমরমা জুয়া। ম্যাচ শুরু হতেই আবার কখনও কখনও খেলা শুরু হওয়ার আগে থেকেই টেলিভিশনের সামনে অথবা অন্যত্রে বিভিন্ন এলাকার ক্রিকেট জুয়াড়ীরা মগ্ন হয়ে পড়ছে জুয়ায়। ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মেতে উঠছে প্রকাশ্যে এ জুয়ায়। পিছিয়ে নেই দিনমজুর এমনকি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরাও। প্রতি বল, প্রতি ওভার থেকে শুরু করে ম্যাচে জয় পরাজয় নিয়ে কোমল পানীয়, ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০, ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ধরছে বাজি। উপজেলার পাড়ায়-পাড়ায়, চায়ের স্টল, বিভিন্ন বাজার এমনকি উন্মুক্ত স্থানে চলছে জুয়ার আসর। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, বুধহাটা ইউনিয়নের গাজীর হাট, কাদাকাটি ইউনিয়নের কাদাকাটি বাজার, তেঁতুলিয়া বাজার, বড়দল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গা বাজার, কুল্যা ইউনিয়নের গুনাকরকাটি বাজার, আশাশুনি সদরের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিপিএ’র প্রতিটি ম্যাচের খেলাকে কেন্দ্র করে বাজির নামে চলছে প্রকাশ্যে জুয়া। নামি দামি ক্রিকেটার সাকিব, মাশরাফি, মোস্তাফিজ, সৌম্য, তামিমসহ বিদেশি খেলোয়াররা বল বা ব্যাট হাতে ক্রিজে আসলেই শুরু হয় জুয়ার উন্মাদনা। এ জুয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ নিন্ম আয়ের মানুষ গুলো। সেমি ফাইনাল ও ফাইনাল আসলে এ প্রকাশ্য জুয়া চলে যাবে চরম পর্যায়ে। প্রথমদিকে জুয়াড়িরা শহরকেন্দ্রিক তৎপরতা শুরু করলেও এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামে গ্রামে এমনকি বলা যায় ঘরে ঘরে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুয়াড়ী প্রতিবেদককে জানান, প্রথমে বাজির ধরন এবং টাকার পরিমানের কথপতন দুই পক্ষ মোবাইলে রেকর্ড করে পরে তৃতীয় পক্ষের কাজে টাকা জমা রাখা হয়। কোন কোন সময় বিশ্বস্ত হলে টাকা যার যার কাছে থাকে। তিনি আরও জানান জুয়ার টাকা লেন দেনে তাদের কোন সমস্যা হয় না। আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজার কাছে কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, বিষয়টি আজ প্রথম শুনলাম। বিপিএল ম্যাচ চলা কালিন সময়ে বিভিন্ন এলাকার বাজারে এবং চায়ের স্টলে গোপনে আমাদের অভিযান পরিচালনা করা হবে। এসকল জুয়াড়ীদের ধরে প্রকাশ্য জুয়া আওয়াতাই এনে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হবে। এদিকে জুয়ার টাকা জোগাড় দিতে জুয়াড়ীরা নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছে। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এইসব জুয়া বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতর মহল। ক্রিকেট জুয়ার আসরে সর্বশান্ত হওয়া এলাকার চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী দিন মজুর, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষদের রক্ষা করতে এবং সামাজিক অবক্ষয় ও যুব সমাজকে ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ঠ যথাযথ কর্র্তৃপক্ষের অশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।